×

মুক্তচিন্তা

আধুনিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দল

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:৩৫ পিএম

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা আধুনিক রাষ্ট্রের চারটি গঠনকর উপাদানের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো ১. ভৌগোলিকভাবে সন্নিহিত সুনির্দিষ্ট ভ‚ভাগ, ২. সেই ভ‚ভাগের সুনির্দিষ্ট জনগণ, ৩. সেই ভ‚ভাগে সেই জনগণের সরকার এবং ৪. উক্ত ভ‚ভাগ, উক্ত জনগণ ও উক্ত সরকারের যেকোনো বিষয়ে উক্ত জনগণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের চ‚ড়ান্ত ক্ষমতা বা সার্বভৌমত্ব। জনগণকেই গণ্য করা হয় রাষ্ট্রের মালিক। জনগণের পক্ষ থেকে, জনগণের দায়িত্ব পালন করেন, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত সরকার। বাস্তবে দেখা যায়, আধুনিক রাষ্ট্রের সরকার গঠিত হয় রাজনৈতিক দল দ্বারা। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দ্বারা সরকার গঠনের যে দৃষ্টান্ত সাম্প্রতিককালে কিছু রাষ্ট্রে পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যায়, রাজনৈতিক দলের গুরুত্ব আরো বেশি। এ ব্যবস্থায় জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয় দলভিত্তিক নির্বাচিত আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দ্বারা। দল ছাড়া আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের কোনো ব্যবস্থার দৃষ্টান্ত নেই। দল ছাড়া রাজ্য হয়, রাজতন্ত্র হয়, রাষ্ট্র হয় না, গণতন্ত্র হয় না। দলের অপরিহার্যতা ও গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে দলকে বলা যায় আধুনিক রাষ্ট্রের অপরিহার্য পঞ্চম গঠনকর উপাদান। আধুনিক রাষ্ট্রের বেলায় দলকে গৌণ করে দেখার তুচ্ছজ্ঞান করার উপায় নেই।

গত চার দশক ধরে দেখা যাচ্ছে জাতি, রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল, সরকার ইত্যাদি বিষয়কে সম্পূর্ণ বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়গুলোকে যতটা পারা যায় গৌণ, দুর্বল, গুরুত্বহীন ও অকেজো করে রাখার নানা আয়োজন করা হয়েছে। নতুনভাবে যে নতুন বিষয়গুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে এনজিও, সিএসও (ঈরারষ ংড়পরবঃু ড়ৎমধহরুধঃরড়হ), নাগরিক কমিটি, নাগরিক আন্দোলন, প্লুরালিজম, নারীবাদ, মৌলবাদ, দুর্নীতিকে সহনীয় করার জন্য দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন, পরিবেশবাদ, গণতন্ত্রের বদলে নির্বাচনতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদের বদলে বিশ্বায়ন, সমাজতন্ত্রের বিলোপ, গণতন্ত্রের জায়গায় নির্বাচনতন্ত্র, সরকারের কাজ পুলিশি ব্যবস্থা দ্বারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সীমাবদ্ধ করে ফেলা, মাদক দ্রব্যের ব্যাপক প্রসার, অনলাইন অ্যাকটিভিটিজের ব্যাপ্তি, ইলেকশন ওয়াচ, ডেমেক্রেসি ওয়াচ, পার্লামেন্ট ওয়াচ, ফেমা, ইলেশন কমিশন ওয়াচ, মাইনরিটি ওয়াচ ইত্যাদি, মাদক দ্রব্যের ব্যাপক প্রসার, অনলাইন আকটিভিটিজের ব্যাপ্তি, পরিবার-ব্যবস্থাকে বিলোপের দিকে ঠেলে দেয়া, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংহতিকে দুর্বল করে শিথিলতাকে বাড়িয়ে তোলা, অর্থ-সম্পদের কেন্দ্রীকরণ ও মনোপলি প্রতিষ্ঠা, ধনতন্ত্রের প্রসার ইত্যাদি। আগে কী ছিল, গত চল্লিশ বছরের মধ্যে নতুন কী চালু করা হয়েছে এটা বিচার করলেই পরিবর্তনটা বোঝা যায়। অনেকে এটাকে নিঃরাজনীতিকরণ বলে থাকেন। দুনিয়াব্যাপী দুর্বল জাতিগুলোর ওপর সাম্রাজ্যবাদী মহল থেকে এসব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। চাপিয়ে দেয়ার শক্তিগুলো হলো বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, জি-সেভেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, ন্যটো, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিবর্গ। জাতিসংঘ তো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সঙ্ঘ। চীন নিজের ধারায় জাতীয়তাবাদী নীতি নিয়ে চলছে। আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনে কিংবা সাম্রাজ্যবাদী কর্মনীতি গ্রহণে চীন অনাগ্রহী। রাশিয়াও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব না নিয়ে জাতীয়তাবাদী কর্মনীতি নিয়ে চলছে। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতি নিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহী। ফলে বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় কর্তৃত্ব করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তাদের সহযোগীরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই শক্তি নানা স্থানে যুদ্ধের পর যুদ্ধ বাঁধিয়েছে এবং গণহত্যা চালিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলোপের পর কয়েক বছর বসনিয়া-হারজেগোভিনা, সার্বিয়ায় যুদ্ধ গিয়েছে। তারপর যুদ্ধ ও সৈন্য সমাবেশ চলছে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ায়। এসব যুদ্ধেরই মূল কর্তৃত্বে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দুনিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে যুদ্ধবাজ। বিশ্বায়নের নামে যে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে তা মানব জাতিকে সভ্যতার ধারায় পরিচালনা করছে না; পরিচালনা করছে সভ্যতাবিরোধী ধারায়। যুদ্ধ সভ্যতাবিরোধী বর্বরতার পরিচায়ক। এই ধারায় যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ হবে না বরং বাড়বে।

মানবজাতির অভীষ্ট প্রগতিশীল ভবিষ্যতের জন্য জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদের ভিত্তিতে বিশ্বব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে হবে। আর রাষ্ট্রব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে হবে সর্বজনীন গণতন্ত্র অবলম্বন করে। চলমান উদার গণতন্ত্রের স্থলে সর্বজনীন গণতন্ত্রের ধারণা উদ্ভাবন করে নিতে হবে। গ্রেকো-রোমান-ইউরো-আমেরিকান সভ্যতার স্পষ্ট দুটো দিক লক্ষ করা যায় : এক. তাদের প্রগতিশীল জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-শিল্প-সাহিত্য, ইতিহাস, গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র ইত্যাদি আদর্শ। প্রগতিশীল এই দিকটা সব জাতির মনোযোগ দাবি করে। সব জাতিই তাদের এ দিকটা থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রহণ করে উপকৃত হতে পারে। দুই. তাদের উপনিবেশবাদ, ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ। এ দিকটা সব জাতির জন্যই পরিহার্য। বাংলাদেশকে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জনের ও গ্রহণীয় বিষয়গুলো গ্রহণের উপায় এবং পরিহার্য বিষয়গুলো পরিহার করার উপায় উদ্ভাবন করতে হবে। এখন পরিহার্য বিষয়গুলোই বাংলাদেশ গ্রহণ করে চলছে। আর গ্রহণীয় বিষয়গুলো গ্রহণ করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে।

আর একটি বিষয় সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর বাইরে সব জাতিকে বুঝতে হবে। রেনেসাঁসের মধ্য দিয়ে, আধুনিক যুগের সূচনার মধ্য দিয়ে, ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দী থেকে ইউরোপে যে সভ্যতা বিকশিত হয়ে চলছিল, বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই তাতে অবক্ষয় সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেখা যায়, সবকিছু অপশক্তির কর্তৃত্বে চলে গেছেÑ শুভবুদ্ধি পরাজিত, অপশক্তি ক্ষমতাসীন। একে একে দেখা দেয় দুই বিশ্বযুদ্ধ। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে পেছনে ফেলে সামনে আসে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। বিজ্ঞানের আবিষ্কার-উদ্ভাবন, শিল্পের বিকাশ ইত্যাদি চলে; কিন্তু সভ্যতা বলে যে ব্যাপারটিকে বোঝানো হয়, তা হারিয়ে যেতে থাকে। মানুষ মানবিক গুণাবলি হারিয়ে চলে। শক্তিমানেরা হয়ে পড়ে ভোগবাদÑ অবস্থার প্রভু কিন্তু প্রবৃত্তির দাস। সাধারণ মানুষ হয়ে পড়ে অবস্থার দাস, কিন্তু প্রতিবাদী ও সংগ্রামী। মার্কসবাদ, রুশ বিপ্লব, চীন বিপ্লব, উপনিবেশ দেশসমূহে স্বাধীনতা সংগ্রাম...। মার্কসবাদীরা মার্কস-এঙ্গেলস-লেনিনের চিন্তাধারাকে ধর্মে পরিণত করেন। আরো কিছু মৌলিক ত্রæটির জন্য মার্কসবাদীরা বেশিদূর এগোতে পারেননি। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন লোপ পেয়ে যায়। তাতে বিশ শতকের সূচনায় যে সভ্যতার সংকট দেখা দিয়েছিল তা আরো ভয়াবহ রূপ নিয়ে সামনে আসে। এ অবস্থায় এশিয়া-আফ্রিকা ও অন্যান্য মহাদেশের দুর্বল জাতিগুলোর অন্ধভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিকে অনুসরণ করে চলা অপরাধ। অন্ধ অনুগমনের ফলে দুর্বল জাতিগুলো নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মানব জাতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেÑ নতুন সভ্যতার উদ্ভব এতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। দুর্বল জাতিগুলোর কর্তব্য স্বাধীনভাবে চিন্তা করা, নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা, সুযোগ মতো রাশিয়া, চীন, ভারত প্রভৃতি রাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে নতুন সভ্যতা, নতুন সংস্কৃতি, নতুন আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা। ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা শক্তিশালী হতে পারে। আত্মনির্ভরতার নীতি নিয়ে, বাইরে প্রতি সহিষ্ণু মনোভাব ও উন্নত কর্মনীতি নিয়ে তারা শক্তিশালী হতে পারে।

বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পরিচালনাধীন না থেকে স্বাধীন সত্তায় দাঁড়াতে হবে। শিল্পব্যবস্থা, প্রশাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ও আইন-কানুন রাষ্ট্রীয়, জাতীয় ও জনজীবনের স্বার্থে পুনর্গঠিত করতে হবে। জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদ এবং জাতীয় পর্যায়ে সর্বজনীন গণতন্ত্রের আদর্শ উদ্ভাবন করে নিয়ে কাজ করতে হবে। এসবের জন্য উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক নেতৃত্ব লাগবে। রাষ্ট্রপর্যায়ে চিন্তার স্বাধীনতা ও স্বাধীন চিন্তাশীলতা লাগবে। তরুণদের স্বাধীন আত্মবিশ্বাসের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এনজিও ও সিএসওতে নিয়োজিত বিশিষ্ট নাগরিকদের দ্বারা এসব হবে না।

সাম্রাজ্যবাদী চক্রে পড়ে, নৈতিক চেতনাকে গুরুত্ব না দিয়ে বাংলাদেশ চরম দুর্গতিতে পড়েছে। এ থেকে উঠতে হবে বাংলাদেশকে। এর জন্য উন্নত বৌদ্ধিক চরিত্রবলসম্পন্ন চিন্তক-সাহিত্যিক-শিল্পীর আত্মপ্রকাশ দরকার।

রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নেতৃত্ব ও সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল অপরিহার্য। বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব রাজনৈতিক দল আছে, সেগুলো নিয়ে চলমান ধারায় বাংলাদেশ যেমন চলছে, তেমনি চলবেÑ অবস্থা এরচেয়ে উন্নত হবে না। অবস্থা উন্নত করে সারা দেশের সব মানুষের সচ্ছল সম্মানজনক জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তা করতে হলে রাজনীতির উন্নতি অপরিহার্য। রাজনীতির উন্নতি আরম্ভ হতে পারে উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক দল গঠন দ্বারা। বাংলাদেশে দল গঠনের প্রশ্নে এখন কারো মনোযোগ নেই। সাধারণ মানুষও এ ব্যাপারে নিস্পৃহ। যে দলগুলো আছে তারা তাদের রাজনৈতিক চরিত্র উন্নত করতে সচেষ্ট হতে পারে। নতুন দল গঠন করা যেতে পারে। উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক দল ছাড়াই যারা নাগরিক উদ্যোগ দ্বারা রাজনীতির উন্নতি সাধন করতে চান, তাদের চিন্তা আমি ঠিক বুঝতে পারি না। কখনো কখনো মনে হয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বোধহয় তারা কাজ করছেন।

সেই ১৯৮০-র দশকের মাঝামাঝি থেকে শুনে আসছি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা। তারপর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ অরাজনৈতিক তত্বাধায়ক সরকারের কথা। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের পরীক্ষা করা হয়ে গেছে। জরুরি অবস্থা ও মাইনাস টু ফরমুলার কথা শোনা গেছে। তারপর শোনা যাচ্ছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হচ্ছে না। সেই ১৯৮০-র দশক থেকেই তো চলছে রাজনীতির ওপর সিএসওর পরিচালনা। কয়দিন আগে নির্বাচন কমিশন যে সংলাপের আয়োজন সম্পন্ন করেছে তারও সূচনা করা হয়েছে সিএসওর বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে।

কেবল চিন্তা দিয়ে হবে না, চিন্তার বাস্তবায়নের জন্য কাজ দরকার। জনসাধারণকে জাগতে হবে, ভালো উদ্যোগে সাড়া দিতে হবে। ‘হুজুগে বাঙালি’কে হুজুগবিরোধী হতে হবে। হুজুগ নয়, চাই জাগরণ। মহৎ মানবিক গুণাবলির জাগরণ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App