×

খেলা

সাকিব-রুবেল দুই দুগুনে ছয়

Icon

মাসউদ

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৭, ১১:০৯ পিএম

শিরোনাম দেখে অনেকে হয়তো চমকে উঠে জানতে চাইবে নামতা কি ভুলে গেল রিপোর্টার। দুই দুগুনে চার হবে। সেখানে ছয় হয় কি করে ? গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে সাকিব-রুবেল বল হাতে ছয় উইকেট তুলে নিয়েছেন। চারদিকে টাইগার বোলারদের নিয়ে যখন কথার তীর ছোড়া হচ্ছিল  তখনই ঘটে গেল দুই দুগুনে ছয়ের ঘটনা। পার্লে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামলেও সতর্কতার সঙ্গেই ব্যাট করছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা অনায়াসে ৪০০ রানের ল্যান্ডমার্ক পেরিয়ে যাবে। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪৪৪ সর্বোচ্চ রান। গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে এ রান করেছিল ইংল্যান্ড। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪৩৫ রান করেও ম্যাচ জিততে পারেনি। ৯ উইকেট হারিয়ে ৪৩৯ রান করে এক উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল প্রোটিয়ারা। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩৯ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। একই বছর ভারতের বিপক্ষে ৪৩৮ রান তুলেছিল প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯১ রান করেছিল ইংল্যান্ড। বুধবার পার্লে স্বাগতিকরা ৪০০ রান পেরিয়ে যাওয়ার যে সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল, তাতে শেষদিকে লাগাম টেনে ধরেছে টাইগার বোলাররা। কিম্বার্লিতে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ ২৭৮ রান সংগ্রহে ম্যাচ হেরেছে ১০ উইকেটে। ওই ম্যাচে প্রোটিয়াদের কোনো উইকেটের পতন ঘটাতে পারেনি কোর্টনি ওয়ালশের শিষ্যরা। ৮৫ ওভার পর উইকেটের মুখ দেখেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পার্লে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামলেও সতর্কতার সঙ্গেই ব্যাট করছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা দেখেশুনে খেলেন ১০ ওভার। উদ্বোধনী জুটিতে উঠে ৫০ রান। একপর্যায়ে আরো হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছিল এই জুটি। শত রানের একেবারে কাছাকাছি ছিল। দলীয় ৯১ রানে এই জুটি ভেঙে প্রতিরোধের দেয়াল ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৪৬ রানে ব্যাট করতে থাকা কুইন্টন ডি কককে এলবিডব্লিউ করেন। এরপর নতুন নামা ফাফ ডু প্লেসিকেও থিতু হতে দেননি তিনি। একই ওভারের (১৮) শেষ বলে ঘূর্ণিজাদুতে বোল্ড করেন প্লেসিকে (০)। স্বাগতিকদের সংগ্রহ ১৮ ওভারে ২ উইকেটে ৯২ রান। সাকিবের জোড়া আঘাতের পর দারুণ জুটি গড়েছিলেন হাশিম আমলা ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল এই জুটি। গড়েছিলেন ১৩৬ রানের পার্টনারশিপ। তখন আঘাত হানেন রুবেল। তার গুড লেন্থের বলটি থার্ডম্যানে খেলতে চেয়েছিলেন আমলা। কিন্তু ঠিকভাবে সংযোগ না হওয়ায় ব্যাটে চুমু খেয়ে বল যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকর রহিমর হাতে। ফলে কাংখিত  ব্রেক থ্রু পায় বাংলাদেশ। তবে আউট হওয়ার আগে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেছেন আমলা। ৯২ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ডি ভিলিয়ার্স ডাবল সেঞ্চুরিটি পাবেন কি না, সে প্রশ্ন কিন্তু জোরের সঙ্গেই উঠেছিল। ৪৬তম ওভারেই ১৫০ (৯৩ বলে) করে ফেলার পর ব্যাপারটিকে খুব সম্ভব বলেই মনে হচ্ছিল। তাসকিনের পরের দুই বলে একটি চার ও একটি ছয় মারার পর তো দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড নিয়েই গবেষণা শুরু করে দিতে হয়েছিল। তবে গেইলের রেকর্ডটা অন্তত আজকের জন্য নিরাপদ করলেন রুবেল। ১৭৬ রানে করেই আউট হয়ে যান ডি ভিলিয়ার্স। ১৫ চার ও ৭ ছক্কার ইনিংসটির জন্য মাত্র ১০৪ বলই দরকার হয়েছে তার। অথচ ইনিংসটি ২ রানেও থেমে যেত পারত যদি সাকিবের বলে স্লিপে দাঁড়িয়ে নাসিরের প্রতিক্রিয়াটা একটু দ্রুত হতো! তিনি বলে হাতই ছোঁয়াতে পারেননি। ডি ভিলিয়ার্স ফেরার পর বেশ শান্তই হয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং। শেষ ১৪ বলে মাত্র ১০ রান তুলেছে স্বাগতিক দল। শেষ তিন বলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে একটু নাটকীয়তা এনেছিলের রুবেল। কিন্তু শেষ বলটা অল্পের জন্য স্টাম্পে লাগল না। ৬২ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েই সন্তুষ্ট হতে হলো রুবেলকে। অনেক দিন পর রুবেল ছন্দে ফেরায় টাইগার বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের মুখে হাসি ফোটেছে। গতকাল মাশরাফি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সাতজন বোলার ব্যবহার করলেও ফায়দা লুটতে সক্ষম হয়েছেন সাকিব-রুবেল। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ১০ ওভারে ৬০ রান খরচ করে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App