×

জাতীয়

জিরো পয়েন্টে ৭০ হাজার রোহিঙ্গা, ওপারে অপেক্ষায় লক্ষাধিক

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:২৭ পিএম

মিয়ানমারে চলমান সহিংসতায় এখনো থামেনি। নতুন করে আবারো ধেঁয়ে আসছে রোহিঙ্গা মুসলিমরা।

গত ২ দিনে মিয়ানমারের মেদি সীমান্ত অতিক্রম করে এপারের উখিয়া আঞ্জুমানপাড়া দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে ঢুকে পড়েছে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা। এর মধ্যে সোমবার প্রথম ধাপে ৫০ হাজার এবং মঙ্গলবার ভোরে ঢুকে পড়ে আরো ১০ হাজার রোহিঙ্গা। বিজিবি’র দুঃসাহসিক অবস্থানের ফলে অনুপ্রবেশকারী এসব রোহিঙ্গারা অবস্থান নিয়েছে আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। তবে সীমান্তের দায়িত্বরত বিজিবি’র সদস্যসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার লোকজন এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রান্না করা ও বিভিন্ন শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের এক জনপ্রতিনিধি’র তথ্য মতে, ওপারের মেদি সীমান্তের কাছাকাছি আরো লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, চিংড়ি ঘেরে হুড়াহুড়ি করে অবস্থান করছে বেশ সংখ্যক রোহিঙ্গা। বিজিবি তথ্যমতে ২০ হাজার ধারণা করা হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি ৬০ হাজার।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা কৌশলে বিজিবি’র চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও গ্রামেগঞ্জে ঢুকে পড়ে স্থানীয়দের বাড়ি-ঘরে আশ্রয় নিলেও সীমান্তে রয়ে যায় অর্ধ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার। মঙ্গলবার ভোরে আরো ১০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা নতুন করে এপারে ঢুকে পড়েছে।

যারা বর্তমানে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছে। গুটি কয়েক অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা পরিবার তাবু করে অবস্থান নিলেও বেশির ভাগ রোহিঙ্গা পরিবার খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে কান্নার রোল পড়ে যায় সীমান্তের জিরো পয়েন্টে।

সীমান্তের জিরো পয়েন্টে মিয়ানমারের বুচিডং মগ্নাপাড়ার আবু ছৈয়দ (৫৫) বলেন, মনে করেছিলাম মিয়ানমার নির্যাতনের মাত্রা কমে আসবে, পরিবেশ স্বাভাবিক হবে। কিন্তু এতদিনেও তা না হওয়ায় পরিশেষে পরিবারের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ ৮ সদস্য নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। জিরো পয়েন্টে কষ্ট করে অবস্থান করলেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিজিপি’র আতঙ্ক নেই।

পালংখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুলতান আহমদ জানান, সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা আমাদের ওয়ার্ডের আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের এপারে ঢুকে পড়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজারের অধিক কৌশলে বিভিন্ন রোহিঙ্গা বস্তি এবং সীমান্তে স্থানীয়দের বাড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছে।

৩৪ বিজিবি’র ক্যাপ্টেন রুবেল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আইনশৃংখলা দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। তাই আপাততে উপরের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এদের অবস্থান হবে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। কিন্তু এসব রোহিঙ্গাদের কোন প্রকার যেন সমস্যা, সংকট না হয় সেদিকে বিজিবি নজর রাখছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App