বীথি রহমান
একটি স্বাধীনতার কবিতা লিখব বলে
দৈনন্দিন জীবন থেকে অঘোষিত ছুটি নিয়েছি
শাহবাগ থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকা দিয়ে মুজিবের আত্মজীবনী কিনে
মগজে ঢেলেছি টানা তিন রাত।
এরপর- ঢাকা সেন্ট্রাল রোড থেকে বের হয়ে এল
আমার গুলিবিদ্ধ খুলি
আমার কলম হয়ে গেল স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান
আমার স্নায়ুতে জড়ানো ভীরুতার শৃঙ্খল
পেরিয়ে গেল বিজয় নিশান।
মুজিবনগর থেকে রেসকোর্স ময়দান
ঘুরে বেড়াতে লাগল আমার অনার্য ছায়া
কৌম সমাজ ছেড়ে যশোর রোড ধরে
হেঁটে চলল
আমার মুক্তিকামী আহত কায়া।
আমার রক্তাক্ত আঙুল ছয় থেকে এগারো দফা
লিখে চলল অন্ত্যমিলে
ছেষট্টি থেকে সত্তর ঘূর্ণিপাক খেয়ে খেয়ে
উত্তাল ঢেউ উঠল
ঘুমিয়ে থাকা অলস রক্তপ্রবাহে।
একদিকে বাবার বীভৎস দেহ বধ্যভূমিতে
পড়ে আছে চিহ্ন নিয়ে সোনার দেশের
আরেকদিকে কচুরিপানায় ঢেকে থাকা
কিশোরীর লজ্জাস্থানে
পুনর্জন্ম হলো আমার ছেনালি পৌরুষের।
একটি স্বাধীনতার কবিতা লিখব বলে
টগবগিয়ে পেরিয়ে এলাম একাত্তর
স্বাধীন আকাশে লাল-সবুজ উড়িয়ে দিলাম
নাতিশীতোষ্ণ সকালে
অথচ- শিরায় বহমান মীরজাফরি রক্ত নিয়ে
মুখ থুবড়ে পড়ে রইলাম বত্রিশ নম্বরের সিঁড়িতে!