ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : মূল্য ও চাহিদা না থাকায় উৎপাদিত মুলার ক্ষেত নষ্ট করে দিচ্ছেন ঈশ্বরদীর কৃষকরা। সলিমপুর ইউনিয়নের সরদারপাড়ায় মাঠের পর মাঠের মুলা এভাবেই মাঠেই নষ্ট করা হচ্ছে। ওই এলাকার মুলাচাষি শামসুল সরদার, দুলাল প্রামাণিক, আশাদুল খান, পলাশ হোসেন ও মুরাদ প্রামাণিক ট্রাক্টর দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন ১৯ বিঘা জমির মুলা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী সরদারপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের মাঠে উৎপাদিত মুলা ট্রাক্টর দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছেন। মূল্য ও চাহিদা না থাকায় ক্ষোভে কৃষক তাদের উৎপাদিত ওই মুলা চাষ দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে ফেলছেন।
মুলাচাষি শামসুল সরদার বলেন, অনেক কষ্ট করে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে উৎপাদিত ফলন্ত মুলা ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছেন অনেক কৃষক। বাজারে মূল্য ও চাহিদা না থাকায় মুলা ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে মাটিতে মিশিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। মাঠ থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় তা থেকে খরচ বেশি হওয়ায় কৃষক মুলা তুলছেন না। এক বিঘা মুলা উৎপাদনে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। কিছু দিন আগে বিঘা প্রতি জমির মুলা ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন বেপারিরা মুলা কিনতে আসছেন না এবং দামও বলছেন না।
সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা বলেন, সলিমপুর উপজেলার মধ্যে সবজি উৎপাদনখ্যাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রথমদিকে মুলাচাষিরা মুলা বিক্রি করে টাকা আয় করলেও এখন চাহিদা না থাকায় বেপারিরা মুলা কিনছেন না। এ অঞ্চলের চাষিরা ফলন্ত মুলা নষ্ট করে দিচ্ছেন।
ঈশ^রদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল লতিফ বলেন, এখন মুলা উৎপাদনের সঠিক সময় নয়। যারা আগাম মুলা চাষ করেছিলেন তারা চড়া মূল্যে মুলা বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করেছেন। ঈশ^রদীতে প্রচুর পরিমাণে মুলা উৎপাদন হওয়াতে চাহিদা কমে গেছে। মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে কৃষকরা পদে পদে ঠকছেন। ঈশ^রদীর বাইরে যেখানে মুলা হয় না সেসব এলাকায় বাজার সংযোজন করতে পারলে কৃষক সঠিক মূল্য পাবেন। বেপারি না আসাতে কিছু কৃষক তাদের মাঠে মুলা মেরে ফেলছেন।