×

তথ্যপ্রযুক্তি

হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০৩:৫৭ পিএম

হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ
সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকে ‘হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে ফেসবুক ব্যবহারকারীকে পাশাপাশি দুটি ছবি পোস্ট করতে হবে এবং দুই ছবি ধারণের মধ্যে সময়ের পার্থক্য হতে হবে ১০ বছর। অর্থাৎ ২০০৯ সালে ধারণ করা একটি এবং ২০১৯ সালে ধারণ করা একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করতে হবে। বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেলিব্রিটিরাও এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। ফেসবুকে মজার এ চ্যালেঞ্জ এখন রীতিমতো ভাইরাল। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ফেসবুকের এ চ্যালেঞ্জ কি শুধুই মজা করার জন্য নাকি এর পেছনে রয়েছে বড় কোনো উদ্দেশ্য? বিশ্লেষকদের মতে, ফেসবুক কয়েক বছর ধরেই ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এর মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম আরো উন্নত করতে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সময়ের ও বিভিন্ন আঙ্গিকের ফেসিয়াল ডাটার প্রয়োজন। ফেসবুকসহ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রিত আরো কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এ প্রতিযোগিতা নিজেদের মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও উন্নত করার একটি টুল। বিখ্যাত প্রযুক্তিবিষয়ক লেখক কেট ও’নিল সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জকে ব্যবহারকারীদের বয়সসংশ্লিষ্ট বৈশিষ্ট্য এবং ফেসিয়াল ডাটা সংগ্রহের বিস্তর পরিকল্পনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, কল্পনা করুণ আপনি একটি ফেসিয়াল রিকগনিশন অ্যালগরিদমকে বয়সসংশ্লিষ্ট বৈশিষ্ট্যসহ আরো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে চান। স্বাভাবিকভাবেই একযোগে বিপুলসংখ্যক মানুষের ফেসিয়াল তথ্যের প্রয়োজন পড়বে। হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে ১০ বছর আগের ও পরের ছবি কেন চাওয়া হচ্ছে? এ বিষয়ে কেট ও’নিল বলেন, ফেসিয়াল রিকগনিশন অ্যালগরিদম উন্নয়নে একই মানুষের বিভিন্ন সময়ের মুখাবয়বের ছবির প্রয়োজন। এর ফলে ভবিষ্যতে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় নির্দিষ্ট কাউকে খুব সহজে অন্যদের থেকে আলাদা করা এবং শনাক্ত করা সম্ভব হবে। কারো মুখাবয়বের ১০ বছরের পরিবর্তনের চিত্র একটি সার্ভারে থাকলে পরবর্তীতে তার চেহারা আমূল বদলে গেলেও মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম তা সহজেই শনাক্ত করতে পারবে। তিনি বলেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অতীত এবং বর্তমানের প্রোফাইল ছবি এরই মধ্যে সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের হাতে রয়েছে। পাশাপাশি আগের ও বর্তমানের ছবির বিশ্লেষণ মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমকে প্রশিক্ষণ দিতে সহায়তা করবে। এর ফলে সূ² ফেসিয়াল পরিবর্তনগুলোও অ্যালগরিদমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধরা পড়বে। ফেসবুকের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ভাইরাল হওয়া হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জের সঙ্গে তাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। টুইট বার্তায় ফেসবুক জানিয়েছে, চলমান হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জ ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে সৃষ্ট একটি মজার প্রতিযোগিতা। এর সঙ্গে প্ল্যাটফর্মটির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ফেসবুকে নানা ধরনের ফানি পোস্ট করা হয়। এটিও সে রকম একটি প্রতিযোগিতা। ফেসবুক চলমান হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জের সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করলেও অসংখ্য ব্যবহারকারী কেট ও’নিলের মতবাদকে সমর্থন জানিয়েছেন। ফেসবুক নানা উপায়ে তাদের বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে আসছে, যা এখন গোপন কিছু না। ব্যবহারকারীদের তথ্য শুধু নিজেরাই নয়, তৃতীয় পক্ষের কোম্পানিকেও ব্যবসার স্বার্থে ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ব্রিটিশ রাজনৈতিক পরামর্শক ও তথ্য বিশ্লেষক ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা এ রকমই একটি প্রতিষ্ঠান। নিজেদের প্ল্যাটফর্মে প্রতিষ্ঠানটির একটি অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছিল ফেসবুক। ওই অ্যাপের মাধ্যমে ফেসবুকের প্রায় নয় কোটি ব্যবহারকারী এবং তাদের বন্ধুদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। পরবর্তীতে এসব তথ্য গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পশিবিরের পক্ষে কাজে লাগানো হয়েছিল। গত বছর ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা তথ্য কেলেঙ্কারি প্রকাশের পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি। এরপর আরো কয়েকটি তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ পায়। স¤প্রতি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে একযোগে হ্যাশট্যাগ টেন ইয়ার চ্যালেঞ্জের সূচনা হয়। এখন পর্যন্ত ফেসবুক নিয়ন্ত্রিত ইনস্টাগ্রামে ১৬ লাখ ছবি পোস্ট করা হয়েছে। ফেসবুকে তিনদিনে পোস্ট হয়েছে ৫২ লাখ ছবি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App