×

অর্থনীতি

বাণিজ্যমেলায় জমজমাট ব্যাংকিং সেবা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০৪:০৪ পিএম

বাণিজ্যমেলায় জমজমাট ব্যাংকিং সেবা
বরাবরের মতো ব্যাংকিং সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে ব্যাংকগুলো। বাণিজ্যমেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীর সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি ব্যাংক অর্থ জমা উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক। আর এটিএম বুথের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার ট্রানজিকশন হচ্ছে। মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মেলায় আসা ক্রেতা দর্শনার্থীরা পাচ্ছেন ব্যাংকের সেবা। পাশাপাশি রয়েছে মোবাইলে অর্থ লেনদেনকারী ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান নগদ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ। গতকাল শনিবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মেলা সচিবালয়ের পাশের গলিতে রয়েছে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের একটি দৃষ্টি নন্দন স্টল। নান্দনিক ডিজাইনে তৈরি করা এই স্টলের সামনে দর্শনার্থীর ভিড়। কেউ বা সেলফি তুলছেন কেউ বা তুলছেন ছবি। ভিতরে রয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা অবিরত মেলায় আগত দর্শনার্থীর আগ্রহের জবাব দিচ্ছেন। ব্যাংকের বিভিন্ন পণ্যের তালিকা দিচ্ছেন। ব্যাংকিং বিষয়ে জানতে আসা মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। শুধু ইসলামী ব্যাংকের বুথেই দৈনিক প্রায় ৫ হাজার ট্রানজিকশন হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা। এমনি গ্রাহকের ভিড় ডাচ-বাংলা ব্যাংকে। এই ব্যাংকের গ্রাহকরা অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রের বুথকেই বেছে নিচ্ছেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন কর্মকর্তা গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলছেন। মেলায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গেইটে কথা হয় রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা আমেনা বেগমের সঙ্গে। তিনি ভোরের কাগজকে জানান, মেলায় ব্যাংকের বুথ থাকায় সবার জন্য মেলার পর কেনাকাটা সহজ হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংকের সামনেও দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখা গেছে। এ সময় কথা হয় ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার এ এম মহিবুল্লাহর সঙ্গে। তিনি ভোরের কাগজকে জানান, সেবার পরিধি বিস্তৃত করতে মেলায় আসা। মেলায় আসা ক্রেতা দর্শনার্থীর ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতেই আসা। লেনদেন কী পরিমাণে হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, দৈনিক ৫ হাজার ট্রানজিকশন হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং সেবার বিভিন্ন বিষয়ে মেলায় আসা মানুষরা খোঁজ নিচ্ছেন। এদিকে মেলায় মোবাইলে অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশের বুথে তুলনামূলক বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মেলায় কেনাকাটা আরো সহজ করতে এসব প্রতিষ্ঠান যোগান দিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মেলার বিভিন্ন স্টল, প্যাভিলিয়নে রয়েছে বিকাশ অ্যাপসে লেনদেনে ছাড়ের বিজ্ঞাপন। বিকাশের একটি বুথে কথা হয় অ্যাপসে টাকা উত্তোলন করতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে। তিনি ভোরের কাগজকে জানান, টাকা আছে তবে মেলা তো তাই আরো এক হাজার টাকা তুলে রাখলাম। প্রয়োজনে খরচ করতে পারব। তবে মেলায় মোবাইল লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের সেবার কারণে কেনাকাটা সহজ হয়েছে বলে জানান এই দর্শনার্থী। মেলায় প্রথমবারের মতো সেবা দিচ্ছে ডাক বিভাগের নতুন সেবা নগদ। এটি বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। এর লেনদেনের সীমা দিনে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা। নতুন এই সেবা নিতে নগদের প্যাভিলিয়নে তরুণ গ্রাহকদের বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। মূল ফটক দিয়ে মেলায় প্রবেশের পর বড় টাওয়ার হয়ে একটু বাম দিকে গেলেই নগদের প্যাভিলিয়ন চোখে পড়বে। প্যাভিলিয়নটির সাজসজ্জা ডাক বিভাগের ঐতিহ্যই তুলে ধরেছে। পোস্ট বক্স ও ডাক হরকার অবয়বই বলে দেয় দেশের সেই পুরনো ডাক। তবে ভেতরে প্রবেশ করলেই পাওয়া যাবে নগদের আধুনিক সেবা। নতুন করে ডাকের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এ যেন নতুন উদ্যোগ। এই প্যাভিলিয়নে সেবা নিতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আমিনুর রহমান। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, লেনদেনের ক্ষেত্রে সরকারি সেবার প্রতি সবার আস্থা বেশি। যেহেতু বিকাশের মতো বেসরকারি সেবা গ্রহণ করছি, তাই ডাক বিভাগের চালু করা সহজ সেবার গ্রাহক হয়ে গেলাম। নতুন এই সেবায় যুক্ত হয়ে খুব ভালো লাগছে। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে তাদের সরবরাহ করা ভার্চুয়াল কার্ড। এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, বিকাশে দিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা যায়। কিন্তু নগদে আড়াই লাখ পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। এ কারণে নগদের প্রতি আমার মতো অনেকেরই আকর্ষণ বাড়বে। এটি রাষ্ট্রীয় একটি সেবা তাই আমাদের বিশ্বাসের জায়গাটি এর প্রতি বেশি। আমরা চাই এই নগদ সেবা যেন জনগণের কাছে পৌঁছে যায়। এ বিষয়ে নগদের কর্মকর্তারা বলছেন, মেলায় প্রায় হাজার খানেক গ্রাহক নগদে একাউন্ট খুলেছেন। সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে নগদ নিয়ে অন্য রকমের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নগদের উদ্যোক্তা ছড়িয়ে পড়ছে। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূণ স্থানে এখন নগদের পয়েন্ট আছে। আর ডাক বিভাগের প্রতিটি জিপিও থেকে নগদ সেবা পাওয়া যাচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App