×

অর্থনীতি

দুর্বল কোম্পানির ওপর নজরদারি চান বাজার বিশেষজ্ঞরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০৩:২৯ পিএম

দুর্বল কোম্পানির ওপর নজরদারি চান বাজার বিশেষজ্ঞরা
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় চলতে থাকে দেশের পুঁজিবাজার। কিন্তু এই ধারা বেশিদিন টেকেনি। সময়ের ব্যবধানে হারাতে থাকে বাজারের স্থিতিশীলতা। পুঁজিবাজারের দুবারের মহাবিপর্যয়ের সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। তাই এবারো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে, এবারো কি এমন কিছু ঘটতে পারে? এই শঙ্কা উড়িয়ে না দিয়েও বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে হলে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দুর্বল কোম্পানির প্রতি কঠোর নজরদারি। কঠোর হতে হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি)। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৭ দিনের মধ্যে ১৩ কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর মধ্যে শুধু দুই কার্যদিবস ছাড়া বাকি দিনগুলোতে পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও সূচক কমেছে কিন্তু লেনদেন ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ডিএসইর এক্স সূচক ৫ হাজার ৩৮৫ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৫ হাজার ৮৬৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছিল। অন্যদিকে সূচকের এই উত্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আর্থিক ও শেয়ার লেনদেন। চলতি জানুয়ারি মাসে লেনদেন হওয়া ১৩ দিনের মধ্যে সাত দিন ডিএসইতে আর্থিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো জেড ক্যাটাগরির দুর্বল কোম্পানিগুলোর দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে ডিএসই ৫ কোম্পানিকে সতর্ক করেছে অস্বাভাবিকহারে শেয়ারদর বাড়ার কারণে। সতর্ক করা বিমা তিন কোম্পানি হলো বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স। আর বাকি দুটির মধ্যে একটি টেক্সটাইল খাতের সায়হাম টেক্সটাইল অন্যটি বিডি ওয়েল্ডিং। অথচ জানুয়ারির আগে সাড়ে তিন মাসের একদিনও ডিএসইতে এক হাজার কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়নি। এর আগে ২০১৮ সালেও তেমন কৌশলগত বিনিয়োগকারী ছাড়া তেমন কোনো উন্নতি হয়নি পুঁজিবাজারে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজ্জা এ বি আজিজুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন সরকারের কাছে বিনিয়োগকারীদের অনেক প্রত্যাশা। বর্তমান অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারের স্থায়ী উন্নয়নে পদক্ষেপ নিলে বাজার স্থিতিশীল হবে প্রত্যাশা অনেকের। অন্যদিকে, নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে পুঁজিবাজারে দুর্বল কোম্পানির দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। শিগগিরই এসব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার কারণ খতিয়ে দেখতে হবে। নইলে আগামীতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে পুঁজিবাজার। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, ডিভিডেন্ড মৌসুম ও নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বাজারের এই উত্থান। তবে দেশের অর্থনীতির আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুঁজিবাজার যতটা শক্তিশালী হওয়ার কথা ততটা হয়নি। পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্রোকারেজ এসোসিয়েশনের সভাপতি শাকিল রিজভী ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা গত কয়েক যুগ ধরে দেখে আসছি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হরতালসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকে। এবার কিন্তু সেরকম কিছুই হয়নি। যার কারণে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App