×

শিক্ষা

"রোবো কার্নিভাল-২০১৯" চ্যাম্পিয়ন বশেমুরবিপ্রবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০৬:২৫ পিএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) আয়োজিত রোবো কার্নিভাল-২০১৯ এর প্রোজেক্ট-শো পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) বিভাগের রোবো গ্যাং টিম। ১৭ এবং ১৮ই জানুয়ারি দুই দিন ব্যাপী ঐ আয়োজনে অংশগ্রহন করে বুয়েটের পাঁচটি টিম সহ দেশের স্বনামধন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বশেমুরবিপ্রবির রোবো গ্যাঙ্গ টিমের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের হাবিবুল্লাহ নিয়ন, ওহিদুর রহমান বাপ্পি, তানভীর আহম্মদ রিমন ও মেহেদী হাসান। তাদের এ অর্জন, তাদের প্রোজেক্টের কাজ ও এর অর্থ-সামাজিক প্রভাব নিয়ে কথা হয় রোবো গ্যাং টিমের দলনেতা মেহেদী হাসান ও হাবিবুল্লাহ নিয়নের সাথে। দলনেতা মেহেদী হাসানের কাছে তাদের বিজয়ের অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আমরা খুবই আনন্দিত যে এরকম একটি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দেশের স্বনামধন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়কে পিছনে ফেলে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ গৌরব ছিনিয়ে আনতে পেরেছি'। প্রোজেক্ট সম্পর্কে হাবিবুল্লাহ নিয়ন জানান, আমরা দেশীয় প্রযুক্তিতে কম খরচে ড্রোনের প্রয়োজনীয়তা এবং উপকারিতার কথা বিবেচনা করে একটি বুদ্ধিমান ড্রোন তৈরী করার চেষ্টা করেছি, যেন এর ব্যবহারের ক্ষেত্রকে সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখতে পারে। হাবিবুল্লাহ নিয়ন আরো সহজ করে বলেন, ড্রোন আবিষ্কার হল তা প্রায় অনেক বছর আগের কথা। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশে ড্রোনের তেমন ব্যবহার চোখে পড়ে না। এর প্রধান কারন হল ড্রোন সম্পর্কে আমাদের ধারনা খুবই কম আর যারা ড্রোন তৈরী করে তারা নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যাবহার না করে বহিঃর্বিশ্বের তৈরী রেডিমেট যন্ত্রাংশ যুক্ত করে ড্রোন তৈরী করে যার ফলে সঠিক উপকারিতা থেকে আমদের দেশ বঞ্চিত। যেহেতু বিজ্ঞান গবেষনায় বাংলদেশ অনেকটা পিছিয়ে সেই চিন্তা মাথায় রেখে আমরা কাজ করেছি। উল্লেখ্য, তাদের ড্রোনের এয়ারফ্রেম তৈরী করা হয়েছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে আকাশি গাছের কাঠ দিয়ে। প্রসেসিং ইউনিট হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে এ আর এম কর্টেক্স এম৩ প্রসেসর। সেন্সর হিসেবে গাইরোস্কোপ, ব্যারোমিটার ও জিপিএস যা স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা এবং হার্ডওয়্যার পরিচালনায় তারা ব্যবহার করেছে নিজস্ব তৈরী উচ্চ ক্ষমতাসমপন্ন ইন্টেলিজেন্ট সফটওয়্যার। হাবিবুল্লাহ নিয়ন আরও বলেন, এ ড্রোন পরিচালনায় আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যাবহার করেছি যার ফলে গুগোল ম্যাপে গন্তব্য ঠিক করে দিলে নিজ থেকেই সেই স্হানে গিয়ে জরুরী সহায়তা দিয়ে ফিরে আসতে পারবে চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই। ড্রোনটিকে চাইলে ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে যাতে কোন ইন্টারনেটের প্রয়োজন হবে না। হাবিবুল্লাহ নিয়ন আরো জানান, তাদের তৈরী ড্রোনের সমমানের ড্রোন কিনতে হলে আন্তর্জাতিক বাজারে খরচ করতে হবে প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। কিন্ত তারা ঐ একই সুবিধা সম্পন্ন ড্রোন তৈরী করতে মাত্র ২৫ হাজার টাকা খরচ করেছেন। দলনেতা মেহেদী হাসান বলেন, এর মাধ্যমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বন্যা কবলিত বা দূর্গত পাহাড়ি এলাকায় ঔষধ ও ত্রান সামগ্রী সরবরাহ, নির্দিষ্ট এলাকা টহল দেয়া সহ ভালো রেজুলেশনের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ ও সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে। এমনকি গোয়েন্দা সংস্হা ও নিরাপত্তা বাহিনীর হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা ও বিশৃঙ্খলা রোধে ট্রাকিংয়ের কাজও করতে পারবে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, আমরা ড্রোনটিকে আরো উন্নত করতে চাই যেন চার্জ শেষ হলে এটি ঐ স্থানের বৈদ্যুতিক খুটিতে সংযুক্ত হয়ে চার্জনিয়ে আবার কাজ করতে পারে। দলনেতা জানান, আমাদের টিমের সবাই খুব পরিশ্রম করেছে কাজটি নিখুত করার জন্য। তানভীর আহম্মদ রিমন, ওহিদুর রহমান বাপ্পি সহ তাদের টিমের বাকি সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। উল্লখ্য বশেমুরবিপ্রবি রোবো গ্যাঙ্গ টিমের সদস্যরা এর আগে "ডিইউ সায়েন্স ফেস্ট ২০১৭" তে অংশগ্রহন করে চ্যাম্পিয়ন ও আইইউটি এসোন্যান্স ২০১৭" সেকন্ড রানারআপ হয়েছিলো। তাদের তৈরি এই ড্রোনকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক নিরাপত্তায় ব্যাবহার করা গেলে ড্রোন আমদানি করতে না হওয়ায় একদিকে যেমন আমাদের অনেক রাজস্ব অপচয় রোধ হবে অপরদিকে এর ব্যাবহারে আমাদের দূর্যোগ প্রবণ বাংলাদেশে সঠিক সময়ে ত্রাণ ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌছানোর ক্ষেত্র এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে, যার সুফল পাবে সারাদেশের মানুষ এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App