×

মুক্তচিন্তা

ভর্তি বাণিজ্য রোধে দুদকের তৎপরতা সময়োপযোগী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫০ পিএম

সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে চলছে ভর্তি বাণিজ্য। বেশিরভাগ স্কুলেই উন্নয়ন ফির নামে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা। এ অবস্থায় জিম্মি হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরাও। কোনো উদ্যোগই যেন তাদের দমন করা যাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে দুদকের অভিযান আশার আলো দেখায়।

ভর্তি বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে গত বুধবার অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক স্কুলটিতে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির দুই সদস্যের একটি টিম এ অভিযান চালায়।

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণির লটারিতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। কিন্তু এরপরও গত মঙ্গলবার নতুন করে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে কর্তৃপক্ষ। সেটি পরদিন বুধবারও অব্যাহত ছিল। ঘোষিত আসনের বাইরে অবৈধভাবে এ ভর্তির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানে নামে দুদক। এমন অভিযোগ শুধু ভিকারুননিসার বিরুদ্ধে নয়।

দেশের নামি-দামি স্কুলগুলোতে নতুন বছরে ভর্তির সময়টাতে বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকা মহানগরীর স্কুলে পার্শ্ববর্তী এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ এলাকা কোটা সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়ে ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা-২০১৮’ প্রণয়ন করেছে।

এর আগে বেসরকারি স্কুলের ভর্তি নীতিমালাও প্রকাশ করা হয়েছিল। নীতিমালা অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবশ্যিকভাবে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে। পাশাপাশি শূন্য আসনের সমান সংখ্যক অপেক্ষমাণ তালিকাও প্রস্তুত রাখতে হবে।

ভর্তি কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ভর্তি করা হবে। এটাই যথাযথ। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেত। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সরকারের নীতিমালা উপেক্ষা করে রাজধানীর নামি-দামি প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বিগুণ-তিনগুণ ফি আদায় করছে।

এ ছাড়া প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য উন্নয়ন ফি বাবদই নেয়া হচ্ছে বাড়তি ২৫ হাজার টাকার মতো। অন্যান্য শ্রেণিতে আদায় করা হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। স্কুল কর্তৃপক্ষ বাড়তি ফি আদায় নিয়ে নানা অজুহাত দাঁড় করায়। তাদের অজুহাতের কাছে অভিভাবকরা এক প্রকার অসহায়।

উদ্বেগের ব্যাপার হলো- দেশে আইনকানুন আছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আইনকানুন, বিধিবিধান মেনে চলছে কিনা তা দেখার জন্যও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। আমরা দেখছি সেই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা কাজ করে না।

অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে দুর্বলতা কোথায়? এই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বেচ্ছাচারিতার শক্তির উৎসই বা কোথায়? আমরা চাই, স্কুল কর্তৃপক্ষ যাতে ইচ্ছেমতো বাড়তি বেতন-ফি আদায় না করতে পারে তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে সরকার কঠোর হোক। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App