×

জাতীয়

গাইবান্ধায় ডায়রিয়াসহ শীত জনিত বিভিন্ন রোগের ঝুকিতে পড়েছে শিশুরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:২১ এএম

গাইবান্ধায় ডায়রিয়াসহ শীত জনিত বিভিন্ন রোগের ঝুকিতে পড়েছে শিশুরা
গাইবান্ধায় শীতের প্রকোপে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ শীত জনিত বিভিন্ন রোগ। ঠান্ডা ও রোটা ভাইরাসে আক্রান্তের কারণে ঝুকিতে পড়েছে শিশুরা। গত এক সপ্তাহে জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৬ শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। রোগির অতিরিক্ত চাপ হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। অভিভাবকরা সচেতন হলে এই রোগ থেকে শিশুদের সহজে রক্ষা করা সম্ভব বলে চিকিৎসকরা জানান। জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শিশু ডায়রিয়া, নিমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের নিয়ে জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসছেন অভিভাবকরা। রোগির চাপ বেশী হওয়ায় মেঝেতে থাকতে হচ্ছে অনেককেই। চিকিৎসা দিতে শিশুদেরকে নিয়ে সিড়িতেই থাকছেন কেউ কেউ। গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫ জন শিশু শীত জনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত জেলা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে। যাদের অনেকের বয়স এক বছরের কম। এদের মধ্যে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের শাহজাহানের ৮ মাস বয়সের শিশু নিশাদ, ঘাগোয়া গ্রামের মেহেদী হাসানের ২ মাস বয়সের শিশু বৃত্ত, কঞ্চিবাড়ী গ্রামের শাহজাহানের ১১ মাস বয়সের শিশু সাদিয়া, কুপতলা গ্রামের সোহেল হোসেনের ৫ মাস বয়সী মেয়ে সুমাইয়া, রঘুনাথপুর গ্রামের হাসান আলীর ৫ মাসের শিশু হাদিয়া, মালিবাড়ী গ্রামের নবাই শেখের ১৪ মাসের শিশু বায়োজিত, কুঠিপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়ার ৮ মাস বয়সের শিশু মোয়াজ, সাদুল্যাপুর উপজেলার শরিফুলের ১০ মাসের শিশু আদিব হাসান, তরফ কামাল গ্রামের আপন মিয়ার ১৪ মাসের শিশু ইলিয়াস, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধুবনী গ্রামের আতিকুরের দেড় বছর বয়সের মেয়ে নুর শেফা, পলাশবাড়ী উপজেলার ঢোলভাঙ্গা গ্রামের রউফ মিয়ার ৭ মাসের শিশু জিম, ফুলছড়ির কঞ্চিপাড়া গ্রামের শাহজাহানের ১৩ মাস বয়সের শিশু সাদিয়া, সাঘাটা উপজেলার সাতালিয়া গ্রামের মাসুদ মিয়ার ৬ মাসের শিশু ইবনে সাঈদ, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকঢালী গ্রামের সুমন মিয়ার ৫ মাসের শিশু সাবা খাতুনসহ ৪৫ জন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া যারা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে, সদর উপজেলার দক্ষিন ফলিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ৬ মাসের শিশু সাফিয়া, বাগুড়িয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ৭ মাসের শিশু সকাল, বালুয়া গ্রামের আব্দুস সালামের ১১ মাসের শিশু শাওন, কিশামত মালিবাড়ী মাস্টারপাড়া গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ১০ মাসের শিশু মিম, কামারজানি গো-ঘাট এলাকার স্বপন কুমার দাসের দেড় বছরের শিশু স্বপ্না, গিদারী প্রামের আব্দুল মতিনের ৩ বছরের শিশু মিম, কুপতলা গ্রামের সবুজ মিয়ার ২ বছরের শিশু আলতাফ, বড় দুর্গাপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ৯ মাসের শিশু আলিফ, হাট লক্ষিপুর কুঠিপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ৮ মাসের শিশু মাহিদ, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বজরা কঞ্চিবাড়ী গ্রামের আনিসুর রহমানের ৭ মাসের শিশু আব্দুল্যাহ ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। এদের মধ্যে অনেকের বয়স এক বছরের নিচে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকছে অন্তত ৪৫ জন রোগি। অনেকে ডায়রিয়া ও নিমোনিয়ায় আক্তান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রোগির চাপ বেশী হওয়ায় তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। একই অবস্থা গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালর শিশু বিশেষজ্ঞ, ডা. আবুল আজাদ মন্ডল বলেন, বেশীরভাগ শিশু রোটা ভাইরাসের মাধ্যমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এছাড়া শীত জনিত নিমোনিয়া ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে শিশুরা আসছে বেশী। তিনি বলেন, তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতাল তত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আসাদুজ্জামান জানান, ডায়রিয়া নিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৪৫ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়া বহি:বিভাগে ৪০ থেকে ৫০ জন চিাকৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালে থেকে পর্যাপ্ত ঔষধ ও সেলাইন দেওয়া হচ্ছে। এই রোগ থেকে শিশুদের রক্ষায় অভিভাবকদের সচেতন করা হচ্ছে। শিশুরা যাতে কোনক্রমে ঠান্ডা না পায়, সেজন্য তাদের গরম কাপড়ের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ঠান্ডা ও বাসি খাবার না খাওয়ার জন্য অভিভাবকদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানালেন হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আসাদুজ্জামান। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়ায় এবার শীত আরম্ভ হওয়ার পর থেকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোন শিশুর মৃত্যু হয়নি। তবে ডায়রিয়া, নিমোনিয়াসহ বিভিন্ন শীত জনিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষায় অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App