×

জাতীয়

বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর জন্মদিন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ০১:০৪ পিএম

বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীর জন্মদিন আজ
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন-অগ্নিযুগের বিপ্লবী-মাস্টারদা সূর্যসেনের ঘনিষ্ঠ সহচর বিনোদ বিহারী চৌধুরীর ১০৮তম জন্মদিন আজ। ১৯১১ সালের এ দিনে তিনি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার উত্তর ভূর্ষি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার দীর্ঘ বর্ণাঢ্যময় জীবনের অবসান ঘটে ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ১৯৯৮ সালে ভোরের কাগজ পরিবার আমৃত্যু বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীকে সম্মাননা জানিয়েছিল। এরপর ২০০০ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক স্বাধীনতা পদকসহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। আজীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এ বিপ্লবী নানা সময়ে রাজপথে থেকে এ সমাজের পথপ্রদর্শক হিসেবে পথ দেখিয়েছেন। আগামীকাল শুক্রবার ভোরের কাগজের সাময়িকীটি প্রকাশিত হচ্ছে এ বিপ্লবীকে উৎসর্গ করে। বোয়ালখালীর উত্তরভূর্ষি গ্রামের আইনজীবী কামিনী কুমার চৌধুরী ও রমারানী চৌধুরীর পঞ্চম সন্তান বিনোদ বিহারী ১৯২৯ সালে সারোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়ে প্রথম বিভাগে পাস করেন। ১৯৩৪, ১৯৩৬ ও ১৯৩৯ সালে জেলে বন্দি থাকা অবস্থায়ই উচ্চ মাধ্যমিক, বিএ, এমএ ও বিএল (আইনে স্নাতক) পাস করেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী অথচ অত্যন্ত সংযমী-প্রতিবাদী বিনোদ বিহারী চৌধুরী ১৯৪০ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ১৯৪৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৭-এ দেশভাগের পর তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমএলএ) নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। ব্রিটিশ-পাকিস্তান আমল মিলিয়ে তিনি কমপক্ষে ৭ বছর বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন, অত্যাচার সহ্য করেছেন, কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে শেখেননি। আজীবন তিনি সংসার-জীবনের ব্যয় নির্বাহ করেছেন ছাত্রছাত্রী পড়িয়ে। ইংরেজি বাংলা উভয় ভাষাতেই অত্যন্ত দক্ষ এ বিপ্লবীর কাছে চট্টগ্রামের অনেক মানুষই তাদের শিক্ষাজীবনের পাঠ নিয়েছেন, যারা এখন দেশে-বিদেশে নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত। সাতচল্লিশে দেশ ভাগ ও একাত্তরের স্বাধীনতার পর সা¤প্রদায়িক দাঙ্গাসহ বিভিন্ন কারণে ধর্মীয় সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের অনেকেই দেশ ছাড়লেও বিনোদ চৌধুরীকে টলাতে পারেনি কোনো কিছুই। নানা প্রতিক‚ল অবস্থার মধ্য দিয়েও তিনি টিকেছিলেন স্বদেশের প্রতি মমত্ববোধ, প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং দেশের প্রতি নিবেদিত প্রতিশ্রুতির কারণে। আর তাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০১৩ সালে ১০ এপ্রিল তার জীবনাবসান ঘটলেও তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী চট্টগ্রামের মাটিতেই নিয়ে আসা হয়েছিল এই বীরের প্রাণহীন দেহ। চট্টগ্রাম জালালাবাদ যুদ্ধ ও যুব বিদ্রোহের অন্যতম এ বীর সৈনিকের দেহভস্ম ছড়িয়ে আছে তার প্রিয় জন্মভূমি চট্টগ্রামে। ভোরের কাগজের পক্ষ থেকে আজীবন অসাম্প্রদায়িক ও গণমানুষের শোষণমুক্তির সংগ্রামে নিবেদিত এ বিপ্লবীর প্রতি সশ্রদ্ধ অভিবাদন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App