×

আন্তর্জাতিক

সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্কে 'ফাল্গুনীর ক্যাটারিং' এর ৭ম বর্ষপূর্তি

Icon

শামীম আহমেদ

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৪ এএম

সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্কে 'ফাল্গুনীর ক্যাটারিং' এর ৭ম বর্ষপূর্তি
সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্কে 'ফাল্গুনীর ক্যাটারিং' এর ৭ম বর্ষপূর্তি
সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্কে 'ফাল্গুনীর ক্যাটারিং' এর ৭ম বর্ষপূর্তি
সুরের মূর্ছনায় নিউইয়র্কে 'ফাল্গুনীর ক্যাটারিং' এর ৭ম বর্ষপূর্তি
বাংলাদেশকে মায়ের মতোই ভালোবাসেন মাসুদ রানা। প্রবাসে থাকলেও বাংলার সোদা মাটির গন্ধ দারুন টানে তাকে। ভুলতে পারেন না মহান মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ। হৃদয়ের গভীরে টান অনুভব করেন ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের। বিদেশে থাকলেও বহু মানুষ দেশকে স্মরণ করেন নানান ভাবে। বাংলাদেশকে তারা বিদেশের কাছে তুলে ধরেন যার যার সাধ্যমতো। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে মাসুদ রানারও কিছু একটা করার ইচ্ছা জাগে ৭ বছর আগে। তিনি বেছে নেন বাংলার খাবার। বাঙালির খাবার। যার ঐতিহ্য হাজার বছরের। মাসুদ রানা মনে করেন বাঙালির পরিচয় তার কথায়, কাজে। ভাষায়, সংস্কৃতিতে। পোশাকে এবং খাবারে। এজন্য তিনি বেছে নেন একটা বাঙলা নাম, ফাল্গুনী। না ফাল্গুনী তার কোন আপনজনের নাম নয়। বাংলার মাস ফাল্গুনকে স্মরণ করেই এই নাম। ফাল্গুনী ক্যাটারিং নামে নিউইয়র্কে শুরু করেন খাবারের ব্যবসা। বাংলাদেশী স্টাইল লাঞ্চ, ডিনারের পাশাপাশি তিনি চটপট্টিও বিক্রি করেন তিনি। আস্তে ধীরে প্রবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। বিশেষ করে ব্রঙ্কস এলাকার পথমেলায় ফাল্গুনীর রয়েছে আলাদা কদর। গতকাল ৭ জানুয়ারী রোববার ছিলো ফাল্গুনী ক্যাটারিং এর ৭ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষ্যে ব্রঙ্কসের স্টার্লিং এভিনিউতে আয়োজন করা হয় এক জমকালো অনুষ্ঠানের। এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের হলরুমে এ অনুষ্ঠান শুরু হয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকনের শুভেচ্ছা বক্তব্য দেয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর গিটার হাতে মঞ্চে আসেন আশির দশকে বাংলাদেশ কাপানো ব্যান্ডদল চাইমের ভোকাল ও গিটারিষ্ট আল আমিন বাবু। তিনি সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে চাইম গঠনের ইতিহাস তুলে ধরেন। বর্ণনা করেন তৎকালীর স্বৈরশাসকের নির্দেশে তাদের প্রচারনার জন্য পাঠানো দুটি গান করে না দেয়ার অপরাধে কিভাবে তাকে দেশ ছাড়া করা হয়েছিলো সেই ইতিহাস। একজন উগ্যেক্তা হিসেবে তুলে ধরেন শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট। দেশ ছেড়ে ইউরোপ আমেরিকায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে কিভাবে সংগঠিত করেছেন তাও উঠে আসে তার আলাপচারিতায়। এরপর ফাল্গুনীর জন্মদিনকে স্মরণীয় করে তুলতে তিনি গিটারে তোলেন সুরের মূর্ছনা। একে একে গেয়ে শোনান চাইমের কালজয়ী গান 'কীর্ত্তন খোলা নদী আমার, যেমন ছিলো তেমনই আছে, আমরা বাঙালি, বাঙলা মোদের গর্ব, ভালোবাসা দেব উজাড় করে বাংলা মায়ের জন্যসহ বেশ কয়েকটি গান। তার গিটারের ধ্বণিতে মোহিত হন অনুষ্ঠানে আগত শ্রোতা দর্শক। জনপ্রিয় শিল্পী, গীতিকার আল আমিন বাবুর সঙ্গে গিটার প্লে করেন প্রশংসা কুড়ান মুসাফির মুক্তা। ফাল্গুনীর কর্ণধার মাসুদ রানা তার আবেগজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি দেশকে ভালোবাসি। বাংলা আমার মা। আমার গর্ব। আমার জন্ম জন্মান্তরের অহংকার। আমি ভালোবাসি বাংলার মাঠ ঘাট। বাংলার সুর। বাংলার গান। এবং বাংলার নানা স্বাদের খাবার। নিউইয়র্ক প্রবাসীদের কাছে বাংলাদেশের খাবারের স্বাদ পৌচ্ছে দিতে ফাল্গুনী ক্যাটারিং এর সূচনা করি। সেটা ৭ বছর আগের কথা। হাটি হাটি পা পা করে ফাল্গুনী আজ ৭ বছরের এক পরিনত শিশু। একদিন এই শিশু কিশোর হবে। কিশোর যুবক হবে। তারপর এক পরিপূর্ণ মানুষের মতো পরিপূর্ণতা পাবে এই বিশ্বাস নিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বিয়ে, জন্মদিন, সুইট সিক্সটিন, বা যে কোন ঘরোয়া আয়োজনে ফাল্গুনী পৌচ্ছে দেয় তাদের নানা স্বাদের খাবার। তাই জীবনের স্মরণীয় দিনগুলোতে ফাল্গুনীকে স্মরণ করে রাখতে ফাল্গুনীকে আহ্বান জানানোর অনুরোধ করেন মাসুদ রানা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি এম এ মুহিত, স্টার্লিং বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন, কবি মাকসুদা আহমেদ, সমাজকর্মী মামুন রহমান, কন্ঠশিল্পী শারমিন তানিয়া, হৃদয়ে বাংলাদেশের পল্লব সরকার, ফয়েজ আহমেদ, প্রবাস নিউজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাবর, মিসেস মাসুদ রানা ও মিসেস মুক্তা। পরে কি বোর্ড বাজিয়ে বাউল গান পরিবেশন করেন এম এ মুহিত। ফাল্গুনীর পরিবেশনায় সুস্বাদু খাবারে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App