×

মুক্তচিন্তা

রাষ্ট্রক্ষমতায় শেখ হাসিনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৩৩ পিএম

বিজয়ের মাসে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি রেকর্ডভঙ্গকারী ঘটনা। এ বিজয় মুক্তিযুদ্ধের, এ বিজয় দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা, সার্বিক উন্নয়নের, এ বিজয় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কাঠামো রক্ষার বিজয়।

এ ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ হলো, সুগম হলো স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী সগৌরবে উদযাপনের। বাঙালি জাতির ভাগ্য ভালো, দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবেন। আমাদের সৌভাগ্য, শেখ হাসিনার মতো বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন গুণবতী নারী আমাদের প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক দুনিয়া যে মহামানবীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক নেতারা ও গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নানা উপাধিতে ভূষিত করেছেন। দুর্নীতি যাদের স্পর্শ করেনি, বিদেশে যাদের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, বিশ্বের এমন সৎ ৫ জন সরকারপ্রধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় তার অবস্থান ৩৩তম। বিশ্বে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। লিডার্স ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনা ২৭ জনের মধ্যে ২১তম।

এ ছাড়া কর্মদক্ষতা ও মহানুভবতার জন্য শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কাছ থেকে অসংখ্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা শেখ হাসিনাকে ‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’, ‘ক্যারিসমেটিক লিডার’, ‘প্রাচ্যের নতুন তারকা’, ‘বিশ্বের নেতা’, ‘বিশ্বশান্তির দূত’, ‘নারী অধিকারের স্তম্ভ’, ‘মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা’, ‘বিশ্বমানবতার আলোকবর্তিকা’ প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত করেছে। শেখ হাসিনা একজন মানবতাবাদী সুলেখকও বটে। অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ, সংস্কৃতিমনা, অসাম্প্রদায়িক ও উদার ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী, বিশ্বের দীর্ঘস্থায়ী নারী সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা শত ব্যস্ততার মধ্যেও ১১টি বই লিখেছেন।

তার প্রকাশিত বইগুলো- ১. শেখ মুজিব আমার পিতা ২. দারিদ্র্যবিমোচন, কিছু ভাবনা ৩. ওরা টোকাই কেন? ৪. বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম ৫. আমার স্বপ্ন, আমার সংগ্রাম ৬. আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি ৭. সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র ৮. সাদা কালো ৯. সবুজ মাঠ পেরিয়ে ১০. মাইলস টু গো ১১. দ্য কোয়েস্ট ফর ভিশন ২০২১।

বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা। শব্দ তিনটি এখন একাকার। এর ব্যবহারে রাজনৈতিক কোনো পরিচয়ের দরকার নেই। বঙ্গবন্ধুর মতো আকাশসম ব্যক্তিত্বকে যদি কেউ এড়িয়ে চলতে চায় তাতে তার কিছু যায় আসে না। কেননা, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু নয়। বাঙালি জাতীয় অস্তিত্বের সঙ্গে এ নামটি আষ্টেপৃষ্ঠে মিশে আছে।

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মুজিব দেশকে তার মনেরমতো সাজাতে চেয়েছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলার। বঙ্গবন্ধু তার জীবনের চেয়ে এ দেশের মাটি ও মানুষ ভালোবাসতেন। পাকিস্তানি জান্তা তাকে মারতে সাহস করেনি অথচ তার প্রিয় বাঙালিদের হাতে কলঙ্কিত হয় মধ্যরাত ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫।

সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে দেশ। দীর্ঘ একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় এসে দেশকে আবার মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন। দশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবারো সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছে। ইশতেহার বড় বিষয় নয়, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ইশতেহারের বাইরেও অনেক কিছু করা যায়।

আমার প্রত্যাশা, ২০১৯ সালে নতুন সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে শক্তিশালী ও কার্যকর করবে। টেকসই যোগাযোগব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণ, খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রযুক্তিগত সুবিধাসহ সাংবিধানিক সব সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

আগামী মেয়াদে নতুন সরকারকে সুশাসন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধিশালী দেশ নির্মাণের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।

দীর্ঘ সময়ের পুঞ্জীভূত জঞ্জাল পরিষ্কার করে এমন এক দেশ উপহার দিতে হবে- যেখানে আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নেতাশূন্য করতে সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হবে না, রাষ্ট্রপ্রধানকে হতে হবে না সপরিবারে খুনের শিকার, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেই সরকার জনস্বার্থে কাজ করবে- যা হবে বিশ্বের বিস্ময়।

মোহাম্মদ ইউসুফ: প্রধান সম্পাদক, সাপ্তাহিক চাটগাঁর বাণী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App