×

মুক্তচিন্তা

আন্তরিক অভিনন্দন শেখ হাসিনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৯ পিএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয় পেয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেও শরিকদের ছাড়াই তারা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা আবারো দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সরকারপ্রধানের। টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলে এটাও হবে একটি রেকর্ড। অভিনন্দন জানাচ্ছি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী এই দলকে।

এবারের নির্বাচনে ২৯৯ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসন পেয়ে বিশাল জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৭, জাতীয় পার্টি ২২, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরিকত ও বিকল্পধারা দুটি করে আসন পেয়েছে। জেপি (মঞ্জু) পেয়েছে একটি আসন। চারটি আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

তবে তাদের তিনজনই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সমর্থিত। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র ৭টি আসন। এর মধ্যে বিএনপি পাঁচটি ও গণফোরামের দুটি আসন রয়েছে। ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী প্রচারণায় দলের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি মহাজোটের বড় ব্যবধানে জয়ী হওয়ার নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে বলে আমরা মনে করি।

অন্যদিকে ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর এবারই প্রথম বিএনপি সবচেয়ে কম আসন পেয়েছে। দলটির বেশ কয়েকজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্তের মতো ঘটনা ঘটেছে। সব গণতান্ত্রিক দলের অংশগ্রহণে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবার।

সারাদেশের ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়। তা সত্ত্বেও বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের অভিযোগের অন্ত নেই। ভোটের দিন কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া, ভোট প্রদানে বাধা প্রদানসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে কিছু প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। নির্বাচন কমিশন এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া মোটা দাগে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে।

তাছাড়া এবারই প্রথম সাধারণ নির্বাচনের ছয়টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছে। ইভিএমে ভোট দিয়ে মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে নির্বাচনী সহিংসতা আমাদের দেশে যেভাবে জেঁকে বসেছে, তা থেকে বেরোনো গেল না এবারো। নির্বাচনের আগে ও নির্বাচকালীন ১৫ জেলায় ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রক্তপাতের দায় ক্ষমতাসীন ও বিরোধী- দুই পক্ষই এড়াতে পারে না।

আমরা দেখছি, নিহতদের মধ্যে দুই পক্ষেরই নেতাকর্মী রয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনকে কী সান্ত¡না দেবেন আমাদের রাজনীতিকরা? নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা নিহত হয়েছেন, তার বিচার হতেই হবে। এগুলোকে গণবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিবেচনা করেই দায়ীদের শনাক্ত ও বিচার করা জরুরি। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ রাখার মধ্য দিয়ে সরকারি দল ও বিরোধী দল স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রশ্নে ঐকমত্য প্রদর্শন করবেন।

এ ক্ষেত্রে নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষের দায়িত্বই বেশি। তারা প্রতিপক্ষের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণের পরিবর্তে সহযোগিতার বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে- এটাই আমরা দেখতে চাইব। আজ নতুন বছরের প্রথম দিন। সংকীর্ণ ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের কল্যাণ-চিন্তায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ায় একমত হোন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মহল। ২০১৯ সালের প্রতিটি দিন হোক সুন্দর ও কল্যাণময়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App