×

মুক্তচিন্তা

দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতিও বিবেচনায় আনা জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:১৩ পিএম

ইন্দোনেশিয়ায় সুনামির আতঙ্ক এখনো কাটেনি। এর মধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরের আরেক দেশ ফিলিপিন্সে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। খবরে প্রকাশ, গত শনিবার তীব্র কম্পনে ঘুম ভাঙে ফিলিপিন্সের। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.২। ওইদিন বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। সময় কেটে গেলেও আতঙ্ক কাটেনি ম্যানিলার বাসিন্দাদের। প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের উপকূল এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।

আগেরদিন শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় পাপুয়া প্রদেশে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই দেশটিতে ভয়াবহ সুনামিতে চার শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। নতুন করে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে আঘাত হানতে পারে, ওই অঞ্চলের বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার পালু শহরে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামির আঘাতে দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। ২০১০ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলীয় মেনতাওয়াই দ্বীপে ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ১০ ফুট উচ্চতার সুনামি আঘাত হানে। এতে চার শতাধিক মানুষ মারা যায়।

এর আগে ২০০৬ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় জাভা উপকূলে সুনামির আঘাতে কমপক্ষে ৬৬৮ জন নিহত হয়। বলা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ ইন্দোনেশিয়া। বিশেষ করে ভূমিকম্প ও সুনামির সঙ্গে যেন দেশটির নিত্য বসবাস। বাংলাদেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। প্রকৃতি তার রুদ্র রূপের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর। নদীভাঙন, বন্যা, অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির মতো নিষ্ঠুর প্রাকৃতিক ঘটনা কেড়ে নেয় সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, সহায় সম্পত্তি। নিঃস্ব করে কত শত মানুষকে। মাঠ হয় ফসল শূন্য। অগণিত গবাদি পশুর মৃত্যু হয়।

তবে ভূমিকম্পের বিষয়টি এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানবকুল তথা প্রাণিকুলের জন্য একটা বড় ধরনের অভিশাপ। এ অভিশাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে বিশ্বজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ভূমিকম্প এমন এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যাকে প্রতিরোধ করার কোনো উপায় মানুষের আয়ত্তে নেই। এমনকি এর পূর্বাভাস দেয়াও সম্ভব হয় না। তাই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পূর্ব প্রস্তুতিই আসল। কিন্তু গরিব দেশগুলোতে সে ধরনের প্রস্তুতি থাকে না ফলে এসব দেশে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়।

জাতিসংঘ দুর্যোগ ঝুঁকি সূচকের তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে ঢাকার নাম। ভারত, মিয়ানমার, জাপান, নেপাল, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পর পর বড় ভূমিকম্প আঘাত হানার পর আমাদের অবস্থা সঙ্গত কারণেই আলোচনায় চলে আসে।

যে কোনো সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা অমূলক নয়। কাজেই এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সরকার বা জনগণ কতটা প্রস্তুত সেটা বিবেচনায় আনা খুবই জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App