×

পুরনো খবর

আসুক ২০১৯ নতুন প্রত্যয়ে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৪ পিএম

আসুক ২০১৯ নতুন প্রত্যয়ে
কোনো বছরের সালতামামি লেখার মানে হচ্ছে একটা চাল টিপে এক গামলা ভাত সিদ্ধ হয়েছে কিনা দেখা। ২০১৮ সালটা কেমন গেল এ মর্মে একট সালতামামি লিখতে গিয়ে বুঝতে পারছি আমাকে অনেক উপর থেকে কথা বলতে হবে। এক একটা ঘটনার উল্লেখ করে বড় বড় সিদ্ধান্ত দিতে হবে, যেন এটি এরকম আরো অনেক ঘটনার অনুরণন করবে। এটা ছাড়া উপায়ও নেই। তাই সালতামামির রচনা মাত্রই ১০% ভাগ বস্তুনিষ্ঠ আর ৯০% ভাগ হচ্ছে ওই সামান্য বস্তুনিষ্ঠতার ওপর ভর করে তৈরিকৃত ধারণার বিবরণ। বুদ্ধদেব বসু ‘তাই পবিত্র, যা কিছু ব্যক্তিগত’ এরকম একটা কবিতা লিখে খুবই সমালোচিত হয়েছিলেন। তাঁকে সমষ্টির বিরুদ্ধে ব্যক্তিমানুষের উদ্বোধনপূর্বক বুর্জোয়া সংস্কৃতির প্রবক্তা বলে সমালোচকরা দুষেছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি ব্যক্তিগত সত্তার উদ্বোধনের মধ্যে একটি সত্য লুকিয়ে আছে। যেমন, ২০১৮ সাল কেমন গেল— এ প্রসঙ্গে বলতে গেলে নিজের ব্যক্তিগত জীবনটা কেমন গেল এ সম্পর্কে একটু ছোট্ট ধারণা দিলে আমার মতো কোটি কোটি বাংলাদেশির কেমন গেল সেটিও হয়তো বোঝা যাবে। ব্যক্তিমানুষকে নিয়েই তো সমষ্টি। ব্যক্তিমানুষকে জানলে পুরো সমাজকে জানা যাবে। অর্থাৎ ভাতের একটা দানা টিপে সব ভাত সিদ্ধ হয়েছে কিনা দেখা। এ বছরটি আমার খুব নির্ঝঞ্ঝাট গেছে। বিস্তর পড়েছি, লেখালেখি করেছি, পড়িয়েছিও বিস্তর। আশা করি, এভাবে বৃহত্তর চাকরিজীবী গোষ্ঠীর সবার নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে কেটেছে। যেমন, আমার এক ছাত্র একটি জেলার ডিসি হয়েছে, আর এক ছাত্রী পুলিশের এআইজি হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৃতই এখন একটি কর্মমুখর গতিশীল সমাজ। মানুষ কাজকে ভালোবাসতে শিখেছে। প্রজ্ঞাবান প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় মানুষ অলসতাকে পরিহার করে কাজের মধ্যে নিজেদের নিয়োগ করতে পেরেছে। উন্নয়নের বাম্পার ফলনে নতুন কাজেরও সৃষ্টি হয়েছে, এবং সদ্য পাস করা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ সমাজ পাকা কুল গাছকে ঝাড়া দিলে যেমন টপাটপ কুল পড়ে তেমনি পাস করা মাত্রই তারা চাকরি খুঁজে পাচ্ছে। এক তরুণী আত্মীয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, তুই কি করিস? বলল, আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম পড়াই। বললাম, তুই তো অনার্স করেছিস, এখনো তো মাস্টার্স শেষ হওয়া বাকি। তা হলে? সে বলল, অসুবিধা নেই। ওতেই চলছে। আরেক তরুণকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলাম। বলল, একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তারি করছে। কোত্থেকে পাস করেছে? তাও একটি প্রাইভেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। গত দশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের অধীনে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আগুয়ান গতিবেগ হয়েছে তার পেছনের কারণ হচ্ছে বেসরকারি সেক্টরে ব্যক্তিগত পুঁজির অবাধ বিনিয়োগ। এ সরকার ধন্যবাদার্হ কারণ এ ক্ষেত্রটি আগে ছিল পদ্মা নদীর শীতকালীন রূপের মতো বিশুষ্ক। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা (অধ্যাপক এম এম আকাশ প্রমুখ) মতামত দিয়েছেন ব্যক্তিগত খাতের অর্থনৈতিক উজ্জীবনের সুস্পষ্ট পরিকল্পিত উন্নয়ন এ ফলাফল এনে দিয়েছে। এবং পাশাপাশি সরকারি উন্নয়নও থেমে থাকেনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় সরকারি উন্নয়নও বেসরকারি খাতের উন্নয়নের মতো সৎ ও উদ্যমী ছিল। এর বড় উদাহরণ হচ্ছে পদ্মা সেতু। অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদুদ্দিন মাহমুদ বছর কয়েক আগে একটি পত্রিকায় লিখেছিলেন বা কোথাও বলেছিলেন একটি কথা যেটি আমি সে সময়ে খুব গ্রহণ করেছিলাম। তিনি কথাটি ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর আলোকে এভাবে বলেছিলেন যে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সিংহভাগ এখন ১৫ থেকে ৪০ বছরের খাপের মধ্যে পড়েছে। যে খাপটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম বয়স। ফলে বাংলাদেশে আগামী ৩০-৩৫ বছর পর্যন্ত এ বয়সবন্দি প্রজন্মের শ্রমের সহায়তা পাবে। তিনি আরো বলেছিলেন, চীন ৩০-৩৫ বছর আগে এ বয়সসীমার মধ্যে পড়েছে, এবং সে জন্য তাদের প্রভ‚ত উন্নতি হয়েছে। এখন তারা অবশ্য সৃজনশীল উৎপাদনমুখী প্রজন্মের শেষ ধাপে পৌঁছেছে। এরপর বয়স্ক লোকের প্রজন্ম বেড়ে যাবে, তরুণ প্রজন্মের সংখ্যা কমে যাবে। ভারতও বছর বিশেক থেকে এ কর্মক্ষম প্রজন্মের ইতিবাচক সহায়তা পাচ্ছে বলে এতটা উন্নতি লাভ করেছে। অধ্যাপক মাহমুদের এ বক্তব্যটি ২০১৮ সালের প্রান্তঃসীমায় এসে একশত ভাগ খাঁটি বলে প্রমাণিত হচ্ছে। বাংলাদেশের ৭%-এর ওপর প্রবৃদ্ধির হার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানেরও আত্ম-ক্ষোভ মিশ্রিত প্রশংসা অর্জন করেছে। সাধারণত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কর্মযজ্ঞ ব্যাহত হয়, অর্থনৈতিক স্থবিরতা আসে। এক সময় হরতাল, ধর্মঘট, বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি আমাদের সমাজে কর্কট রোগের রূপ নিয়েছিল। কিন্তু এখন হরতাল দিলেও পালিত হয় না। এটি অর্থনৈতিক সবলতার পথে বিরাট মোড় ঘোরানো অর্জন। ২০১৮ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়েছিল, কিন্তু আবারো প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত দৃঢ় সিদ্ধান্তের ফলে বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক কোনো আন্দোলনই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন দুটো অরাজনৈতিক আন্দোলন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় প্রথমদিকে এক ধরনের জনসমর্থন এ দুটো আন্দোলনের প্রতি ছিল, কিন্তু ক্রমশ পরিষ্কার হয় যে এ দুটোর পেছনেও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কতিপয় দলের সক্রিয় সহযোগিতা ছিল। গত বছর যেমন, এ বছরও আইনি দিক থেকে একটি কঠিন সময় পার করেছে বাংলাদেশ। গত বছর মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার জন্য বেশ ক’জন নেতা ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলেন, এবং কারো কারো যাবজ্জীবন শাস্তি হয়। একই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধাপরাধের জন্য না হলেও ২১ আগস্ট ২০০৪-এর গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজনের ফাঁসির আদেশ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবজ্জীবন দণ্ড হয়। তদুপরি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্নীতির মামলায় পরাজিত হয়ে কারাজীবন ভোগ করছেন এবং তার প্রার্থিতাপদও খারিজ করা হয়। ধর্মে তো বটেই, সাহিত্যপাঠেও নৈতিকতার বিরাট প্রভাব আছে। অর্থাৎ পাপ করলে শাস্তি পেতে হয়। যেটা রাজনীতিতে হালকাভাবে বললে বলতে হয়, ঢিলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়। জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হয়, তাদের ব্যাপক ষড়যন্ত্রমূলক মানবতাবিরোধী রাজনীতির জন্য তাদের এখন কাফফারা দিতে হচ্ছে। জামায়াত এখন একটি নিষিদ্ধ দল, কিন্তু তারপরও তাদের রাজনীতির জন্য ভালো হয় যুদ্ধাপরাধ সম্পৃক্ত ঘটনাবলীকে ইতিহাসের একটি দুঃখজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করে তাদের পূর্বসূরিদের কৃত অপরাধের জন্য জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে স্বীকার করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি একশত ভাগ আস্থা প্রকাশ করে তাদের বর্তমান সমর্থকগোষ্ঠীকে গ্লানিমুক্ত রাখা। আর বিএনপির জন্য ভালো হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত অবস্থানকে অকুণ্ঠ চিত্তে আনুষ্ঠানিকভাবে মেনে নেয়া এবং সে আলোকে মেজর জিয়ার অবস্থানকে পুনঃমূল্যায়ন করে তাদের রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বঙ্গবন্ধুকে উপেক্ষা করে তার বিপক্ষে প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতির চর্চা করা কখনো কোনো সুবুদ্ধিসুলভ রাজনীতির পরিচায়ক হতে পারে না। জাতীয় ভৌত কাঠামোর উন্নয়নশীলতার পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞানীরা মানবসম্পদের উন্নতির কথাও উল্লেখ করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের শেষের আগের দিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিধায় মানবসম্পদ উন্নয়নের একটি দিক খুব অস্থির অবস্থার মধ্যে পড়েছে। ভোটের প্রার্থিতা পদ, যোগ্য-অযোগ্যের প্রশ্নে বিচারবিভাগসহ নির্বাচন কমিশন ব্যাপকভাবে পরীক্ষিত হয়েছে বলা যায়। ব্যাপক ধর-পাকড়, গ্রেপ্তার এবং সাজা দেয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘসহ কিছু আর্ন্তজাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্র এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন নতুনভাবে বিন্যাসিত হওয়ায় গণমাধ্যমগুলোও বাক-স্বাধীনতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে চাপে আছে বলে প্রতীয়মান হয়। আর নির্বাচন কমিশন হয়তো আরো সক্ষমভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ভালো হতো। সমতলভ‚মির আকাক্সক্ষা নিয়ে কথা বলেছেন খোদ একজন নির্বাচন কমিশনার। তবে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দল, দেশের সুশীল সমাজ, বিরোধী দলগুলো সবাই একবাক্যে অংশগ্রহণমূলক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা করছেন। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে প্রাজ্ঞ-প্রবীণ রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্ট গঠন করলে বিএনপির নির্বাচনে আসার উপলক্ষ তৈরি হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে তাৎক্ষণিক আলোচনায় বসলে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির সুবাতাস বইতে থাকে। ঐক্যফ্রন্টও তাদের বিভিন্ন দাবি থেকে সরে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আস্থা পেয়ে নির্বাচনে নামে। নির্বাচন যখন হবে, রায়ও একটা আসবে। কবি জসীমউদ্দীনের বিখ্যাত হাসির গল্প “কে বড়”তে লড়াইটা ছিল ২৩ মণী পালোয়ানের সঙ্গে ২২ মণী পালোয়ানের। কিন্তু আজ ২৪ ডিসেম্বর (এ লেখাটি রচনা করার দিন) পর্যন্ত অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় সরকারি দলের মুখোমুখি বিরোধী দল মোটেও দাঁড়াতে পারছে না। নির্বাচনী প্রচার মিছিলগুলো এতটাই একপেশে হয়ে যাচ্ছে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির যে চরিত্র ফুটে ওঠার কথা সেটা তেমন একটা টের পাওয়া যাচ্ছে না। বিরোধী দলের নিস্তেজ ভাবের কারণে সরকারি দলও মদমত্ত হয়ে নির্বাচনাভিযান পরিচালনা করতে পারছে না। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে প্রতিযোগিতার উৎসবে ভাটা পড়ে। টিভিতে ডব্লিউ ডব্লিউ রেসলিংয়ে দেখা যায় সময়ে সময়ে একতরফা লড়াইয়ের আয়োজন করা হয়, দর্শকদের নিছক আনন্দ প্রদানের জন্য। তিন মণী পালোয়ানের বিরুদ্ধে হয়তো ৬০ কেজি ওজনের নিধিকান্ত সেপাইকে দাঁড় করিয়ে দেয়া হলো। বাংলাদেশের এবারের নির্বাচনের প্রতিপক্ষতার স্বরূপটি এরকমেরই একটি দৃশ্যের অবতারণা করেছে। “উইনার টেইক অল” এরকম একটা সিস্টেম দাঁড়িয়ে গেছে। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আগের বছরগুলোর তুলনায় তারতম্যমূলক কিছু ঘটেনি। তবে দেখা যাচ্ছে স্কুল-কলেজের যে রেজাল্ট নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকে সে রেজাল্ট অনুযায়ী তাদের জ্ঞান বা মেধার পরিচয় মেলে না। এ ফাঁকটা দিনদিন আরো বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এটি বড় একটি চ্যালেঞ্জ যে যতই পাসের হার বাড়ছে ততোই কেন শিক্ষার মান কমছে। আর রাজধানীর একটি স্কুলের এক ছাত্রীর অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা করার কারণে একজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে কারারুদ্ধ করার ঘটনাটা রীতিমতো চমকে ওঠার মতো ব্যাপার। গণমাধ্যমগুলো পুরো ব্যাপারটির গভীরে না গিয়ে একটি ফেনানো আবেগকে প্রতিষ্ঠিত করে পুরো জাতিকে ভুল ভাবনায় প্ররোচিত করেছিল বলা যায়। ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য এ বছরও উচ্চনিনাদে ঘটেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মার খেলেও জিম্বাবুয়ে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তিন ফর্মেই ভালো করেছে বলা যায়। বিশেষ করে মাশরাফির নড়াইল-২ থেকে নৌকার প্রার্থিতা পদ পাওয়া সত্তে¡ও একদিনের খেলায় নেতৃত্ব দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২-১এ সিরিজ জিতে নেয়া ছিল গৌরবের। মাশরাফির জননী যে ঝাঁটা হাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভিযানে নেমেছিলেন সেটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরাট আলোড়ন তুলেছিল। মাশরাফিও বলেছেন, নির্বাচনের জনসংযোগের সময় তার প্রতিদ্ব›দ্বীদের মনে এবং শরীরে যেন আঘাত না পায়। ফুটবলেও সাফল্য কম নয়। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৮ পুরুষ দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে, আর মহিলা অনূর্ধ্ব-১৫ দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে পাকিস্তানকে হারিয়ে। আবার নির্বাচনের কথায় ফিরে আসি। নির্বাচনের আসল মজা হচ্ছে পোস্টারে। যেমন নৌকা, ধানের শীষ, লাঙ্গল, গোলাপ ফুল, তলোয়ার, হাতপাখা, হাতি, ঘোড়া, হারিকেন, ইলিশ মাছ, দোয়াত, কলম, বই, চেয়ার, তারা, গাছ, ঢেঁকি কত রকমেরই না পোস্টারে সজ্জিত থাকার কথা রাস্তাঘাট। কিন্তু ফেসবুকের কারণে পোস্টার জিনিসটা রাস্তা থেকে উঠে গিয়ে জায়গা নিয়েছে মোবাইল ফোনে বা কম্পিউটারে। এবং সে কারণে কিনা জানি না, আমি একটা লম্বা ভ্রমণেও গিয়েও গ্রামেগঞ্জে তেমন কিছু দেখিনি। কোনো একটা গ্রামের পথ দিয়ে যাওয়ার সময় শুধু একটা ‘তলোয়ার’ মার্কা পোস্টার একটা গাব গাছের গায়ে ঝুলতে দেখেছিলাম। যদি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে বলতে হবে বাংলাদেশ খুব ভালো একটি বছর কাটালো। সে আলোকে ২০১৯ সালও পয়মন্ত হবে ধারণা করা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App