×

জাতীয়

উন্নয়নে সরব তাপস নিষ্প্রভ মান্নান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৫ পিএম

উন্নয়নে সরব তাপস নিষ্প্রভ মান্নান
তারুণ্যের জয়গানে উচ্চকিত ঢাকা-১০ আসনের অলিগলি। এ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন গত দুইবারের সাংসদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্ব্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি প্রার্থী আবদুল মান্নান। এ ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকে কে এম শামসুল আলম, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকে আবদুল আউয়াল, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের বাঘ প্রতীকে বাহারান সুলতান বাহার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এলাকাবাসীর দাবি মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে। তবে প্রচারে আগাগোড়া এগিয়ে ছিলেন নৌকার প্রার্থী। তার বিপরীতে ধানের শীষ একেবারেই নি®প্রভ। গত বুধবার সরজমিনে দেখা যায়, এলাকা ছেয়ে আছে নৌকার পোস্টার, ব্যানারে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০ ডিসেম্বর থেকেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্প বসিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রচার শুরুর পর থেকেই মাঠে ছিলেন তাপস নিজেও। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গেছেন তিনি। পাড়া-মহল্লায় বৈঠক করেছেন। আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে নির্বাচনী এলাকাকে একটি আধুনিক আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ফজলে নূর তাপস। ঢাকা-১০ আসনকে মাদক ও বেকারত্বমুক্ত করার অঙ্গীকার করেন। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ১০ বছর আমি আপনাদের আস্থা, ভালোবাসার মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি। পানি সমস্যার সমাধান করেছি। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ট্যানারি স্থানান্তর করেছি। এবার নির্বাচিত হলে গ্যাসের সমস্যা থাকবে না। কাঁঠালবাগানে জলাবদ্ধতার নিরসনে বিশেষ প্রকল্প নেয়া হবে। মানুষ উন্নয়ন, শান্তি ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষেই আগামী ৩০ ডিসেম্বর রায় দেবে বলে আশাব্যক্ত করেন তিনি। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী আবদুল মান্নান ছিলেন অনেকটাই নীরব। বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, নিজের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলা মোকাবেলা করতে তাকে বেশিরভাগ সময় থানা, পুলিশ ও আদালতে কাটাতে হয়েছে। রয়েছে হামলার ভয়ও। সব মিলিয়ে প্রচারণায় সময় দিতে পারেননি তারা। ১৯ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রচারে বাধা দেয়া, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারসহ নানা অভিযোগ করেন আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, আগের শতাধিক মামলার সঙ্গে তফসিল ঘোষণার পর আরো সাত-আটটি মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় তাকে ও নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। পোস্টার, লিফলেট ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় পুড়িয়েও ফেলা হয়েছে। আবদুল মান্নান অভিযোগ করেন, তার আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার পরিবর্তে তাকে বেশিরভাগ সময়ই মামলা মোকাবেলা ও নির্বাচন কমিশনে গিয়ে কাটাতে হয়েছে। এরপরও মাঝে মধ্যে প্রচারণায় নামলে তাকে ও নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি বাসার সামনে সাদা পোশাকের পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। ফলে নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসতেও ভয় পাচ্ছেন। ধানমন্ডির সিটি কলেজের বিপরীতে চটপটির দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন স্থানীয় যুবক। এদের একজন আইটি বিশেষজ্ঞ আরবার আহমেদ বলেন, ফজলে নূর তাপস বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ ও ভালোবাসা আছে। এ ছাড়া তিনি দুইবার সংসদ সদস্য ছিলেন। কলাবাগানের বাসিন্দা বেসরকারি স্কুল শিক্ষক সানজিদা আক্তার বলেন, যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেব। এ ছাড়া যিনি যানজট কমানো, ট্যানারির কাজ পুরোপুরি সরানোর দায়িত্ব নেবেন, যিনি নির্বাচিত হওয়ার পর জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবেন তাকেই ভোট দেব। প্রসঙ্গত, এই আসনের মোট ভোটার তিন লাখ ১৩ হাজার ৭৫৮ জন। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আসন পুনর্বিন্যাসের পর এটি হয় ঢাকা-১০। ওই নির্বাচনে বিএনপির খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমেদকে ৪৯ হাজার ৬৯ ভোটে হারান তাপস। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর দ্বিতীয়বারের মতো জয়ী হন তাপস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App