×

মুক্তচিন্তা

নির্বাচন বানচাল ষড়যন্ত্র!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৭ পিএম

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকা না থাকা নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বিএনপি থাকবে কিনা এ নিয়ে খোদ দলের ভেতরেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। দলের একাংশ চাচ্ছে নির্বাচনে থাকতে, অপর অংশ চাচ্ছে শোচনীয় পরাজয়ের চেয়ে আগেই বর্জন করতে।

আজকালের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে পারে। নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা আগে নির্বাচন বয়কট করার ঘোষণা এলে দেশে এক ধরনের অরাজকতা সৃষ্টির আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এমন পরিবেশ কোনোভাবেই কাম্য নয়। নিরপেক্ষ সরকার ও খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো অবস্থাতেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে না- এমনটি বরাবরই বলে আসছিলেন দলটির সিনিয়র নেতারা। বিএনপি সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না, তারা কোনপথে এগোবে- আন্দোলন, না নির্বাচন? এর ফলে সৃষ্ট অচলাবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছিল গণতন্ত্র ও উন্নয়নের জন্য বড় হুমকি।

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য ও কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবিত সংলাপে প্রধানমন্ত্রীও সাড়া দেন। সংলাপে বিরোধীপক্ষের দেয়া শর্ত মানুক আর না-ই মানুক, ঐক্যফ্রন্টসহ ছোট-বড় সব দলই এবার নির্বাচন করছে।

ঐক্যফ্রন্ট নেতারা এও বলছেন, তারা নির্বাচনের মাঝপথে সরে দাঁড়াবেন না। শেষ পর্যন্ত লড়বেন। এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি নেতারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার কথা বললেও অধিকাংশ এলাকায় পোস্টার না লাগানো এবং প্রচার না চালানোর কৌশল দেখে মনে হয় শেষ মুহূর্তে তারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিতে পারে।

যেভাবে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটের দিন দুপুরে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল। কারণ হিসেবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না হওয়া, হামলা-মামলার অভিযোগের গুরুত্ব না দেয়াকে সামনে নিয়ে আসবে। তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলের সিনিয়র নেতাদের একাংশ শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নির্বাচনে থাকার পক্ষে।

তাদের মতে, ২০১৪ সালের মতো এবার নির্বাচন বর্জন হবে দলের জন্য বড় ধরনের ভুল। এতে দল হিসেবে বিপর্যয়ের মুখে থাকা বিএনপি অস্তিত্বের সংকটে পড়বে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা আরো বাড়বে। কিন্তু লন্ডন প্রবাসী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের অপর অংশ চাচ্ছে বৈরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে শোচনীয় পরাজয়বরণের চেয়ে বর্জনই শ্রেয়।

আমরা মনে করি, এবারের নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন বানচাল করা গেলে দেশে এক ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি হবে। জ্বালাও-পোড়াও, খুনাখুনির মতো পরিস্থিতি হতে পারে। কোনোভাবেই তা হতে দেয়া যাবে না।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যে আশার আলো জ্বলছে তা যেন কোনোভাবেই নিভে না যায়। একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সুসংহত হোক বাংলাদেশের গণতন্ত্র এমনই প্রত্যাশা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App