×

মুক্তচিন্তা

অঙ্গীকার বাস্তবায়ন দেখতে চাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:২১ পিএম

নির্বাচনী ইশতেহার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইশতেহারে রাজনৈতিক দলের আদর্শ ও লক্ষ্যের প্রতিফলন ঘটে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

এ ছাড়া এরশাদের জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছে। বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত হলেও ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে পৃথক ইশতেহার। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২১ দফা বিশেষ অঙ্গীকার তুলে ধরেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

ইশতেহারে তারুণ্য এবং গ্রাম উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় যেতে পারলে দেশের প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক নগরের সুবিধাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আরো চাঙ্গা করা হবে গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে থাকবে জিরো টলারেন্স নীতি। পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ, পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলকে ইশতেহারে বিশেষ বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ধরে রাখতে মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

অন্যদিকে বিএনপি ১৯ দফা অঙ্গীকার সংবলিত এ ইশতেহারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার বিধান চালু করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ৩৫ দফা ঘোষণা সংবলিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারের উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতিগুলো হলো- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকা, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোনো বয়সসীমা না রাখা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা।

জাতীয় পার্টির ১৮ দফা প্রতিশ্রুতি সংবলিত ইশতেহারের উল্লেখযোগ্য প্রতিশ্রুতিগুলো হলো- এককেন্দ্রিক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তন করে দুই স্তরবিশিষ্ট অর্থাৎ ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, দুই স্তরে অর্থাৎ কেন্দ্রে ও প্রদেশে সংসদ চালু করা, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করে আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিধান করা ইত্যাদি। বিশেষ করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তা মূল্যায়ন করতে শুরু করেছেন।

আমরা মনে করি, ইশতেহার হচ্ছে জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার। যদিও এসব অঙ্গীকারের পুরোটা বাস্তবায়ন হয় না। আওয়ামী লীগ তাদের ইশতেহারেও অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে। এটা বাংলাদেশে বিরল ঘটনা। এ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ভুল স্বীকার করার বিষয়টি নেই।

বিগত দশ বছরে আওয়ামী লীগ কী করেছে এর ওপর ভর করেই তাদের পক্ষে ভোট আসবে। বিএনপিও ভালো কিছু উদ্যোগের কথা বলেছে তাদের ইশতেহারে। আমরা আশা করব, ক্ষমতায় যারাই আসুন, তারা তাদের ইশতেহারে বর্ণিত অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে আন্তরিক হবেন। এতে করে নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন ও ঘোষণার বিষয়টি অর্থবহ হয়ে উঠবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App