×

মুক্তচিন্তা

মেয়র মহিউদ্দিন: তুমি ছিলে বীর চট্টগ্রাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৫১ পিএম

মেয়র মহিউদ্দিন: তুমি ছিলে বীর চট্টগ্রাম
মেয়র মহিউদ্দিন: তুমি ছিলে বীর চট্টগ্রাম

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ২১ বছর পরে ক্ষমতায় ফিরে আসার ক্ষেত্রে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কী অপরিসীম অবদান ছিল। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি সরকার প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের আয়োজন করে। সংসদ গঠিত হলে তার বিরুদ্ধে মহিউদ্দিন দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। এতটা বিধ্বংসী ছিল সে আন্দোলন যে চারদিনের মাথায় বোঝা যায় চট্টগ্রাম অচল হয়ে গেছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার প্রমাদ গুনে এবং সদ্য নির্বাচিত সংসদ ও সরকার ভেঙে দিতে বাধ্য হয়।

মহিউদ্দিন চৌধুরী সাধারণ মানুষের নেতা ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তি ছিল মানবসেবা। অথবা মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রমাণ করেছিলেন যে মানুষকে ভালোবাসতে গেলে রাজনীতি লাগে না। মানবসেবার প্রকরণটি তাঁর বহুমাত্রিক ছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল আপ্যায়ন। যখন মেয়র হিসেবে দপ্তর চালাতেন, প্রত্যেক দুপুরেই মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন থাকতো এবং কর্মব্যাপে যিনিই বা যারা ওই সময়ে উপস্থিত থাকতেন না কেন, তারা কেউ না খেয়ে যেতে পারতেন না। সহাস্যে বলতেন, না খেয়ে গেলে গৃহস্থের অকল্যাণ হবে।

একই ব্যবস্থা রাত্রিকালীন তাঁর চশমাহিলের বাসভবনে চালু ছিল। আমি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকার সময় একবার শীতের মৌসুমে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও তাদের ছেলেমেয়েসহ চল্লিশজনের একটা বিরাট দল সেন্ট মার্টিনস ঘুরে এসে তাঁর ষোলশহরের বাসায় রাতে এক মহাভোজন করেছিলাম।

মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্পর্কে স্বাধীনতার পর থেকেই নানা গুঞ্জনের মধ্য দিয়ে কথা শুনতে থাকি। এ পর্বে তিনি ‘ডালিম হোটেল’কে কেন্দ্র করে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কিছুদিন মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম আর শুনতে পাইনি। শুনেছি, সে সময় তিনি ভারতে চলে গিয়েছিলেন।

মহিউদ্দিন চৌধুরী পরপর তিনবার চট্টগ্রামের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। প্রথমবার এবং তৃতীয়বার তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন যখন সরকার ছিল বিএনপির। দ্বিতীয়বার অর্থাৎ ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারে তিনি বিপুল ভোটে মীর নাসিরের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন।

তার আগে ১৯৯১ সাল থেকে তিনি চট্টগ্রামের লোকের নয়নের মণি হয়ে উঠতে থাকেন। সে সময় আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকি। এরশাদ সরকারের পুরো আমলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ ছিল সবচেয়ে রাজনীতিমুখর।

বিশেষ করে ১৯৮৯ সালে তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ আলী পদত্যাগ করলে, পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সিনেট সভাকে কেন্দ্র করে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ সিনেটর-শিক্ষক প্রফেসর আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজউদ্দিনকে ভোট দিলে তিনি সর্বোচ্চ ভোটে উপাচার্য প্যানেলে নির্বাচিত হন এবং প্রেসিডেন্ট এরশাদ তাকে উপাচার্য নিয়োগ দেন। কিন্তু সে যে ১৯৮৬ সালের ২৬ অক্টোবরে এরশাদের ছাত্র সংগঠন নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের নেতা হামিদকে দুহাতের কব্জি কেটে দিয়ে ইসলামী ছাত্র শিবির চবি ক্যাম্পাসে পূর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল সেটা বজায় থাকে এবং সর্বত্র তাদের কর্মকা- হয়ে পড়ে উৎপীড়নমূলক। ফলে অধ্যাপক সিরাজউদ্দিনকে তারা এক মুহূর্তের শান্তি দিচ্ছিল না।

১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে এবং অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন পদত্যাগ করতে অস্বীকার করলে, ১৯৯৭ সালের একটি আইন প্রয়োগ করে সরকার তাকে সরিয়ে দিয়ে প্রফেসর আর আই চৌধুরীকে নিয়োগ দেন। ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট অনুযায়ী সিনেট দ্বারা উপাচার্য নির্বাচিত করার বিধান সে যে লঙ্ঘিত হয়, এখনো সে লঙ্ঘিত বিধান অনুযায়ী চবিতে উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু আছে।

ঠিক এ সময়ে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একটি বড় অংশের সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরীর যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। মহিউদ্দিন চৌধুরী মুসলিম ইনস্টিটিউট হলকে সাময়িক পুনর্বিন্যাস করে চমৎকার একটি ডাইরিয়া হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এটার সেবাদান এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দেখে আমি এতই উদ্বুদ্ধ হই যে আমার ‘ঝড়’ শীর্ষক একটি গল্পে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে একজন ডাক্তারের চরিত্রের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করি। মুসলিম হলের প্রাঙ্গণে বিকেলে টেবিল-চেয়ার পেতে মহিউদ্দিন চৌধুরী বসতেন, আর তখন তাঁর ভক্তের সংখ্যা এত বাড়তে থাকে যে পাতানো চেয়ারে সবার বসার সুযোগ হতো না, দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। কিন্তু আমাদের শিক্ষকদের জন্য মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছিল আলাদা শ্রদ্ধা।

সে সময় আমাদের নেতৃস্থানীয় শিক্ষকরা তাঁর কাছে উপায় জানতে চান যে চবির ক্যাম্পাসকে কীভাবে জামায়াত-শিবিরের একচেটিয়া আধিপত্য থেকে মুক্ত করা যায়। তখন কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে মার্কিন ঔপন্যাসিক মারিও পুজোর বিখ্যাত উপন্যাস ‘গড ফাদার’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র ডন কোরিওলনি হিসেবে দেখতে থাকি। ‘ডালিম হোটেল’ থেকে শুরু করে তাঁর তৎসময়ের কর্মকাণ্ডে এক ধরনের সাহসী রোমাঞ্চ ছিল যা আমাকে খুব আকর্ষণ করত। দেখলাম শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় তাঁর রসালো কথাবার্তায় আমরা প্রবলভাবে আকর্ষিত হচ্ছি। ইউসুফ ভাই (অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ আলম, চবি উপাচার্য থাকাকালীন লোকান্তরিত) ছিলেন তাঁর সহপাঠী এবং নিরন্তর দোসর। কিন্তু ইউসুফ ভাইকে তিনি ডাকতেন ‘আঁর বোনের জামাই’। ইউসুফ ভাই মারা গেলে মহিউদ্দিন চৌধুরী তাঁর জেয়াফতের ব্যবস্থা করেন এবং পরবর্তী সময়ে ইউসুফ ভাইয়ের একমাত্র মেয়ের বিয়ের যাবতীয় দায়িত্ব তিনি পালন করেন।

এক পর্যায়ে মান্নান ভাই (অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বর্তমানে ইউজিসির মাননীয় চেয়ারম্যান) চবির উপাচার্য এবং ইউসুফ ভাই উপউপাচার্য হলে দুজনেই যেহেতু মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছের লোক ছিলেন এবং দুজনের মধ্যে যখন প্রশাসনিক ব্যাপার নিয়ে খানিকটা দূরত্ব তৈরি হয়, তখন মহিউদ্দিন চৌধুরী তাদের আড়ালে আমাদের কাছে দুজন সম্পর্কে এমন রসিকতা করে মন্তব্য করতেন যে হাসিতে পেট ফেটে যেতো।

ইউসুফ ভাই ছিলেন চবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা এবং প্রতি বছর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ সংগঠন থেকে বঙ্গবন্ধুর ওপর সেমিনার অনুষ্ঠিত হতো এবং মহিউদ্দিন চৌধুরী আড়াল থেকে এর সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করতেন।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনীতি সম্পর্কে এন্তার লেখা হয় কিন্তু এ কথাটা কখনো ঠিকমতো আসে না যে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ২১ বছর পরে ক্ষমতায় ফিরে আসার ক্ষেত্রে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কী অপরিসীম অবদান ছিল।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি সরকার প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের আয়োজন করে। সংসদ গঠিত হলে তার বিরুদ্ধে মহিউদ্দিন দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। এতটা বিধ্বংসী ছিল সে আন্দোলন যে চারদিনের মাথায় বোঝা যায় চট্টগ্রাম অচল হয়ে গেছে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার প্রমাদ গুনে এবং সদ্য নির্বাচিত সংসদ ও সরকার ভেঙে দিতে বাধ্য হয়। আমার ব্যক্তিগত ধারণা মহিউদ্দিন চৌধুরী ওই আন্দোলনটা গড়ে না তুললে সরকারের পতন হতো না এবং ১৯৯৬ সালে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া আর তার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা হতো না।

ইংরেজি ভাষার প্রতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর এক ধরনের মুগ্ধতাবোধ ছিল। একদিন বললেন, একটা ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট ডে করেন। করলাম, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী স্যারকে প্রধান অতিথি করে সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, কায়সার হক, ফকরুল আলম, কাজী মোস্তায়ীন বিল্লাহ আর গোলাম সারোয়ার চৌধুরীসহ সব ইংরেজির ডাকসাইটে অধ্যাপকদের নিয়ে নানামুখী অনুষ্ঠান করলাম।

অনুষ্ঠানে তখন প্রিমিয়ারের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজীম আরিফ হলেন সভাপতি আর মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী করলেন উদ্বোধন। তাঁর মেয়ে টুম্পা সুন্দর বক্তৃতা করল ইংরেজিতে। পরে ইউসুফ ভাই আমাকে একদিন বললেন, মেয়র সাহেব জিজ্ঞেস করেছেন, আপনি সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, কায়সার হক আর ফকরুল আলমকে বিভাগে পড়ানোর জন্য যে ঢাকা থেকে নিয়ে আসেন সেটা বাই রোডে আনেন কেন? আমি বললাম, খরচের জন্য আর কি। ইউসুফ ভাই বললেন, না, মেয়র সাহেব বলেছেন প্লেনে করে আনা-নেয়া করতে। সেটা আমরা করেছিলাম।

২০০৩ সাল থেকে অর্থাৎ ইংরেজি বিভাগ শুরু হওয়া থেকে ২০০৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত (মেয়র সাহেব গ্রেপ্তার হোন মার্চ মাসে) ইংরেজি বিভাগে আমরা ৪২টি মাসিক সেমিনার করেছিলাম এবং বর্তমান উপাচার্য অনুপম সেনও উৎসাহ দেয়াতে আমরা আবার মাসিক সাহিত্য সেমিনার নতুন উদ্যমে শুরু করেছি।

মেয়র সাহেব গ্রেপ্তার হলে আমিও ঢাকায় চলে যাই। ইউল্যাবে জয়েন করি। কিন্তু মেয়র সাহেবের গ্রেপ্তার হওয়াকে আমি সহজভাবে নিলাম না। ‘প্রথম আলো’তে একটা কলাম লিখলাম। এখন শিরোনাম মনে নেই, কিন্তু ব্যাখ্যা করলাম কোনো রাজনীতিবিদদের জেলখানায় রেখে দমানো যায় না। আমি ইউল্যাবে সকালে অফিসে ঢুকব, একটা টেলিফোন পেলাম। দুদকের চেয়ারম্যানের পিএস পরিচয় দিলেন। বললেন, আমি যে কয়েকদিন আগে রাজনৈতিক নেতাদের কারান্তরীণ নিয়ে কলাম লিখেছি সেটা চেয়ারম্যান মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং তিনি এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। তখন চেয়ারম্যান ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত লে. জে. হাসান মসউদ চৌধুরী। নির্দিষ্ট দিনে অপরাহ্ন বেলায় আমি তার সেগুনবাগানস্থ অফিসে গেলাম। অত্যন্ত ভদ্রলোক ও সজ্জন ব্যক্তিত্ব হাসান মসউদ চৌধুরী চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, রাজনৈতিক নেতাদের জেলে পুরতে অসুবিধা কি? আমি বললাম, কারণ এদের জনপ্রিয়তা।

বিশেষ করে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা বললাম যে আমি তাকে কাছে থেকে জানি, তাঁর মতো দেশপ্রেমিক মানবহিতৈষী নেতা আমি আর দেখিনি। উদাহরণস্বরূপ বললাম, সাবেক রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন সাহেবের মতো ভালো লোক খুব কম আছে। কিন্তু তারতো অনুসারী নেই। রাজনীতিতে অনুসারী থাকাটা হচ্ছে একটা বিরাট ফ্যাক্টর।

আমি চট্টগ্রাম এলেই মেয়র সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করতাম, অনেক সময় স্ত্রীকে নিয়ে আসতাম। আমাকে বলতেন, স্যার, ‘অনে চলি আইয়ুন’। তারপর সে অমোঘ কথাটি বললেন, ‘অনে মরি গেলে হাইট্যে হনে ধরিবু’। (আপনি মারা গেলে আপনার খাটিয়া কারা বহন করবে?) আমি এসেছি ঠিকই, কিন্তু অনেকটা দেরি করে ফেলেছি। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার উপাচার্যের দায়িত্ব শেষ হবার পর আমি আর ঢাকায় থাকব নাকি চট্টগ্রাম চলে আসব এ দ্বিধাদ্বন্দ্বে যখন ছিলাম, তখন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার খোরশেদুর রহমান একদিন টেলিফোন দিলেন। বললেন, মেয়র সাহেব চান আমি যেন চট্টগ্রামে ফেরত আসি এবং প্রিমিয়ারে যোগ দিই।

আমি ৫ নভেম্বর ২০১৭ সালে প্রিমিয়ারের ইংরেজি বিভাগে আবার যোগদান করে বিকেলে ক্যাম্পাসের তাঁর অফিসে দেখা করতে গেলাম। তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ফেট ভরি, মন ভরি খুশি অই। (পেট ভরে, মন ভরে খুশি হয়েছি)। পর ৬ নভেম্বর নতুন ব্যস্ততায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। সেকশন অফিসার কামরুল বলল, মেয়র সাহেব ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ নিয়েছেন আমার বসার জায়গা-টায়গা ঠিক হয়েছে কীনা।

৭ নভেম্বর সকালে অফিসে ঢুকব, পিয়ন দৌড়ে এসে খবর দিল যে মেয়র সাহেব অসুস্থ। দৌড়ে গেলাম ম্যাক্স হাসপাতালে। দেখি তিনি অচেতন, চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন, সারা শরীরে নানা ধরনের পাইপ লাগানো। তাকে ঢাকায় নেয়া হলো স্কয়ার হাসপাতালে। সেখানেও দুবার গেলাম দেখতে। ভাবি, নওফেল, ডাক্তার সেলিম এদের সঙ্গে দেখা হলো, কিন্তু মেয়র সাহেবকে ওপরে ডায়ালাইসিস করতে নিয়ে যাওয়াতে দেখতে পেলাম না। ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

অধ্যাপক ড. মোহীত উল আলম : ইংরেজি বিভাগ, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App