×

জাতীয়

সাক্ষরতায় অনন্য অর্জন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:১৬ পিএম

সাক্ষরতায় অনন্য অর্জন
এক দশক আগে দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৪৭ শতাংশ। ১০ বছরে সাক্ষরতার হার ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৭৬ শতাংশে। বাংলাদেশের সাক্ষরতা হারের ওপর ইউনেস্কো ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটিসটিক্সের (ইউআইএস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ইউআইএসের প্রতিবেদন (গত মার্চে প্রকাশিত) অনুযায়ী, সাক্ষরতার ক্ষেত্রে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, ভুটানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। তথ্য মতে, ভারত ৬৯ দশমিক ৩০ ভাগ, নেপাল ৫৯ দশমিক ৬৩, ভুটান ৫৭ দশমিক ০৩ এবং পাকিস্তানে এই হার ৫৬ দশমিক ৯৮ ভাগ। শুধু সাক্ষরতায় নয়, দশ বছর আগে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণের সময় প্রাথমিক স্তরে ভর্তির হার ছিল ৬১ শতাংশ। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা শেষ করার আগেই ঝরে পড়ত ৪৮ শতাংশ। বর্তমানে প্রাথমিকে ভর্তির হার প্রায় শতভাগ। ঝরেপড়া রোধ হয়েছে ২৮ শতাংশ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকে ঝরেপড়ার হার এখন ২০ শতাংশ। ইতোমধ্যে ২৬০ কোটি ৮৫ লাখ ১ হাজার বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে সরকার। চলতি বছরে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ বই বিতরণ হয়েছে। প্রথম শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছেন ২০ দশমিক ৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থী। ২০১৬-১৭ সালে মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ ৯৩ হাজার ১১৮ জন শিক্ষার্থীকে। ২০১৩ সালে একযোগে জাতীয়করণ করা হয়েছে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৯ বছরে নিয়োগ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৭৬ জন। শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা ৬০ শতাংশে উন্নীত করেছে সরকার। ধাপে ধাপে জাতীয়করণ করা হয়েছে ৫শ কলেজকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলায় ১৯টি আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ভোরের কাগজকে বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্কুলে ঝরেপড়া রোধে কাজ শুরু করি আমরা। এখনো সবাইকে ধরে রাখতে পারিনি, তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষায় মেয়েরা খুব পিছিয়ে ছিল, তাদের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করি। বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে গুণগত শিক্ষা, উন্নত গবেষণালয় তৈরির জন্য সরকার কাজ করছে। সবমিলিয়ে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জন করেছি আমরা। শিক্ষা খাতে আমাদের ভুলত্রু টি স্বীকার করি, তবে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি বলেন, সরকার চায় মানবসম্পদের উন্নয়ন। এ জন্য কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমাদের সরকার গঠনের সময় কারিগরি শিক্ষার হার ছিল ১ শতাংশ। এখন ১৪ শতাংশ। টার্গেট, ২০২০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ২০ শতাংশে উন্নীতকরণ। বর্তমানে গ্রামের শিক্ষার্থীরাও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে পড়ালেখা করছে। ৫০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য নতুন প্রজš§কে দক্ষ-যোগ্য ও তথ্যপ্রযুক্তিতে আধুনিক করে গড়ে তোলা; যেন বিশে^র সব দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে পারে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় রয়েছে ১ কোটি শিক্ষার্থী। আর ৯৩ উপজেলার ৩০ লাখ ৫ হাজার ৪০৯ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট বিতরণ করা হচ্ছে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা সহায়তার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়েছে। ১১টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার। অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৪৪টি নতুন বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের। ৭টি নার্সিং ইনস্টিটিউকে কলেজে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত করণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৯২ জন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষককে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App