×

জাতীয়

স্থবির হয়ে পড়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কার্যক্রম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৫১ পিএম

স্থবির হয়ে পড়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কার্যক্রম
বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে সবার জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নিজস্ব অর্থায়নে অর্ধশত প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)। এর মধ্যে আবাসিক ফ্ল্যাট, বাণিজ্যিক স্পেস ও রাজধানীর বাইরে বেশ কিছু প্লট প্রকল্পে রয়েছে। সরকারের এ প্রকল্পগুলোর সঙ্গে স্থানীয় সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। কিন্তু সরকারের শেষ সময়ে এসে বেশ কিছু প্রকল্প সমাপ্ত করার কথা থাকলেও তা করতে পারেনি জাগৃক। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যরা। এ ছাড়া গত ৬ মাসে সংস্থাটির এডিপি রিভিউতে ৬ নম্বরে নেমে এসেছে। যেখানে গত ৬ মাস আগেও ছিল ১ নম্বরে। সংস্থার শীর্ষ পর্যায়কে ম্যানেজ করে সরকারের শেষ মুহূর্তে এসে তড়িঘড়ি করে মিরপুরে প্রায় ১৫ বিঘা জমি বেসরকারি আবাসন কোম্পানি নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও সর্বত্র সমালোচনার ঝড় তোলেছে। জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহিদ উল্লা খন্দকার ভোরের কাগজকে বলেন, ‘জাগৃকের উন্নয়ন কাজে কিছুটা গতি মন্থর তা অস্বীকার করা যাবে না। আমরা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে কথা বলেছি। তাদের (জাগৃক) কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয়ে আরো যতœবান হতে বলেছি।’ জাগৃক সূত্রে জানা যায়, সরকারের শেষ সময়ে এসে কাজের গতি মন্থর হয়ে যাওয়া নির্ধারিত সময়ে তা শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি। এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যায় নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ না করা, জামানতের অর্থ নিয়েও নির্ধারিত সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ দেয়ার লক্ষ্যে লটারি না করা ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে জমি বুঝিয়ে না দেয়া। মিরপুর স্বপ্ন নগর-১ প্রকল্পটি চলতি বছরের জুন মাসে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলে তা হয়নি। পরে তা বাড়িয়ে ডিসেম্বর করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। এখন তা আগামী জুনে শেষ করার কথা রয়েছে। তাও করা যাবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। একই অবস্থা স্বপ্ন নগর-২ ১৫৬০ ফ্ল্যাট প্রকল্পেও। এখানে ৭৫০ ফ্ল্যাট ও ১৫০০ পার্কিং স্পেসের চাহিদা থাকলেও তা এখনো লটারি করতে পারেনি। মিরপুরের ভাসানটেক এলাকার ‘দামাল কোট’ নামের ফ্ল্যাট প্রকল্পটিও ঝুলে গেছে। দুই বছর ধরে আবেদনকারীরা অপেক্ষায় থাকলেও এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর প্রকল্পগুলো নিয়ে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন সময়ে দিয়েছিলেন নানা প্রতিশ্রুতি। ঢাকা-১৫ আসনে কামাল আহমেদ মজুমদারের নির্বাচনী এলাকায় আদর্শ স্কুলের জমি, জামিওল উলুম মাদ্রাসাসহ অনেক কিছুই নিষ্পত্তি করা হয়নি। এ ছাড়া ঢাকা-১৬ আসনের ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা দুয়ারীপাড়া ৪৮০ প্লট অবৈধ দখলমুক্ত করা কাজটিও করা হয়নি। সেই সঙ্গে পুনর্বাসন হিসেবে ১৫২ ফ্ল্যাট দেয়ার বিষয়টিও আজও নিষ্পত্তি করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ঢাকা-১৩ আসনের থাকা লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডিতেও অনেক প্রকল্প ঝুলে আছে। পানির দরে ছাড়া হচ্ছে ১৫ বিঘা সরকারি জমি : মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে জাগৃকের ১৬৮ একর ভূমি রয়েছে। সরকারের এ বিশাল ভূমি থেকে প্রায় ১৫ বিঘা জমি একটি বেসরকারি আবাসন কোম্পানিকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ১৯২তম বোর্ড সভায় মাত্র ৯০ কোটি টাকায় ১৫ বিঘা জমি ছেড়ে দেয়া সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেখানে এ জমির বাজারমূল্য কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ কাজটি সফলভাবে শেষ করার পর এখন আরো ৮০ একর জমি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মাধ্যমে একটি মহলের হাতে তোলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জাতীয় জাগৃকের সদস্য (প্রকৌশলী ও সমন্বয়) এস এম ফজলুল কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জাগৃকের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত ফোনে চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App