×

মুক্তচিন্তা

সুশাসন নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:০৯ পিএম

এ যাবৎকালের সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় চলছে ব্যাংক খাত। রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যা দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত। শনিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে ব্যাংক খাতের অবস্থা নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে।

এতে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ব্যাংক খাত নিয়ে নাগরিক কমিশন গঠন করবে সিপিডি। নাগরিক কমিশন ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবে। সমাধানের লক্ষ্যে আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরবে কমিশন।

এ ছাড়া ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করার জন্য নির্বাচনী ইশতেহারে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সংলাপে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বড় কয়েকটি ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় গত ১০ বছরে ব্যাংক খাতে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এসব অনিয়মের বেশিরভাগই রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোতে হয়েছে। এর মধ্যে এককভাবে শুধু জনতা ব্যাংকে সবচেয়ে বেশি ১০ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে।

এ ছাড়া সোনালী, বেসিক, ফারমার্সসহ বিভিন্ন ব্যাংকে অনিয়মের মাধ্যমে অনেক অর্থের অপচয় হয়েছে। এভাবে ব্যাংকের টাকায় অনিয়ম-দুর্নীতি হলেও সরকারের তরফ থেকে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যাচাই-বাছাই ছাড়াই রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ দেয়া হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছেন অনেকে। ব্যাংকের মালিক, পরিচালক ও এক শ্রেণির অসৎ ব্যাংকারের যোগসাজশে জনগণের আমানত দুর্নীতিবাজদের হাতে চলে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণের কারণে মূলধন সংকটে পড়া এসব ব্যাংককে বছরের পর বছর ধরে অর্থ দিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে বারবার। ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন যদি সঠিকভাবে না হয়, তাহলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন আশা করা যায় না।

বলা যায়, খাতটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কবলে পড়েছে। সিপিডি এ খাতের পরিস্থিতির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন করে প্রকৃত অবস্থার আলোকে ব্যবস্থা, খারাপ অবস্থায় থাকা ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগ, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে নতুন করে কোনো ব্যাংক না দেয়া, খেলাপি ঋণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে।

আমরা মনে করি, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন ফিরিয়ে আনার বড় চ্যালেঞ্জ এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা সরকারের সামনে। শক্ত হাতে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এ জন্য সর্বপ্রথম ব্যাংকগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। দ্রুতই আর্থিক খাতের বিদ্যমান অবস্থার উন্নতি না ঘটলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় আইন, গাইডলাইন এবং নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App