×

জাতীয়

আজ ফেনী মুক্ত দিবস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:৫৯ পিএম

আজ ফেনী মুক্ত দিবস
১৯৭১’র এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখ সমরে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীর মাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে ছিল। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনীর নৃশংস বর্বরতায় ক্ষত-বিক্ষত ফেনী শহরে স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীরা বিজয়ের নিশান উড়িয়ে উল্লাস করে। জেলার বিভিন্ন স্থানে আটটি বধ্যভূমিতে শহীদদের লাশ সনাক্ত করতে বা তাদের কবর চিহ্নিত করতে ছুটে বেড়িয়েছিল স্বজন হারারা। ফেনী অঞ্চলের মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক হিসাবে কর্মরত তৎকালীন ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম ভারতের বিলোনীয়া ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল থেকে ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অভিযানে বিলোনিয়া, পরশুরাম, মুন্সিরহাট, ফুলগাজী, যুদ্ধ করতে করতে এগুতে থাকে। পর্যদুন্ত হয়ে ফেনীর পাক হানাদার বাহিনীর একটি অংশ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী হয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের রাস্তায় অপর অংশ শুভপুর ব্রীজের উপর দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। অপরদিকে বিএলএফ তথা মুজিব বাহিনীর ফেনী মহাকুমা কমান্ডার অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি’র নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দাগনভূঞা, রাজাপুর, সিন্দুরপুর হয়ে শহরের দিকে এগুতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পাক হানাদাররা ৬ ডিসেম্বর রাতে কুমিল্লার দিকে পালিয়ে পায়। সে সময় ফেনী অবাঙ্গালী মহাকুমার প্রশাসক বেলাল এ খান পাকবাহিনীর সঙ্গে চলে যায়। ফেনী হানাদারমুক্ত হওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে করে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সূর্য উদিত হওয়ার বিষয়টি সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর অনেকগুলো রণাঙ্গনের মধ্যে মুন্সীর হাটের মুক্তারবাড়ী ও বন্ধুয়ার প্রতিরোধের যুদ্ধ ইতিহাস খ্যাত হয়ে আছে। এ রণাঙ্গনে সম্মুখ সমরের যুদ্ধ কৌশল বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানী মিলিটারী একাডেমীগুলোতে পাঠসূচীর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা এ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের অহংকার আর গর্বের বিষয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ফেনী সরকারী কলেজ, তৎকালীন সিও অফিসসহ কয়েকটি স্থানে স্বাধীনতাকামী নিরীহ মানুষকে নির্মম ভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছিল। সে অমর শহীদদের স্মৃতির ভাস্কর হিসেবে ফেনী কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ ও জেল রোডের পাশে বীর শহীদদের নামের তালিকাসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ ও বিলোনীয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। এদিকে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনে জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এ উপলক্ষে ৬ডিসেম্বর সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App