×

বিনোদন

বগুড়ায় প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’এর উদ্বোধনী মঞ্চায়ন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০২:০৫ পিএম

বগুড়ায় প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’এর উদ্বোধনী মঞ্চায়ন আজ
বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রত্ননাটক প্রযোজনা করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এরই ধারাবাহিকতায় আড়াই হাজার বছরের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’ মঞ্চায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ড. সেলিম মোজাহারের রচনায় এবং নতুনত্বের অনুসন্ধানী নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকীর নির্দেশনায় আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বগুড়ার মহাস্থানগড়ে এই নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন করা হবে। আগামীকাল শনিবার একই স্থানে হবে দ্বিতীয় মঞ্চায়ন। ‘মহাস্থান’ মঞ্চায়নের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত থাকবেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, বিশিষ্ট নাট্যজন অধ্যাপক আবদুস সেলিম, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন, বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ ও বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভ‚ইঞা বিপিএম। মহাস্থান নাটকে আমাদের জাতিসত্তার ইতিহাসকে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। মহাস্থানগড়ের প্রাচীন ইতিহাসের সঙ্গে সময়ের পরম্পরায় বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পর্যন্ত সময়কালকে একক গ্রন্থনায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই নাটকে প্রাচীন শিকারযুগ থেকে শুরু করে বৈদিকযুগ, আদিবাসী পর্ব, রামায়নের গীত, কালিদাসের কাব্য, চর্যাপদ, সুফিসামা, বৈষ্ণব পদাবলি, ব্রাহ্মসঙ্গীত, লোকগান, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ব্রতচারীদের গান, পঞ্চকবির গান, ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ইতিহাস, কাব্য-গীত ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা পালাগানরূপে প্রকাশিত হয়েছে। নতুন প্রজন্মের সামনে ইতিহাস ঐতিহ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি আমাদের যে সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের আলোকিত অধ্যায় রয়েছে, সেটাই মহাস্থান নাটকের মধ্য দিয়ে প্রকাশের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রাচীর বেষ্টিত এই নগরীর ভেতর রয়েছে বিভিন্ন সময়ের নানা প্রত্নতাতত্ত্বিক নিদর্শন। কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য হিন্দু রাজা ও অন্যান্য ধর্মের রাজারা এখানে রাজত্ব করেছিল। ‘মহাস্থান’ প্রত্ননাটকের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সময়ের শাসন-শোষণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই স্থানটি একসময় ধর্মীয় তীর্থস্থান হিসেবেও পরগণিত হয়েছিল। ধর্মের বাণী বুকে নিয়ে কেউ মানবতার কথা বলেছেন কেউ আবার মানুষের অধিকার নষ্ট করেছেন। এসব কীর্তি, কৃষ্টি ও সভ্যতার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে ‘মহাস্থান’ নাটকে। এ প্রসঙ্গে নাটকটির নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, পৃথিবীতে এভাবে আর্কিও ড্রামার ইতিহাস নেই। এর কাজ প্রত্ন-ইতিহাসকে দৃশ্যকাব্যে রূপান্তরিত করে শিল্পে রূপ দেয়া। মহাস্থানের গৌরবোজ্জ্বল আখ্যানের ভেতর দিয়ে সমগ্র বাঙলার মহাস্থান হয়ে ওঠার গল্প। মহাস্থান, কোটি বছরজুড়ে এ-মাটির জেগে ওঠার কথা। হাজার হাজার বছর ধরে তার মানব বসতির কথা। নাট্যকার সেলিম মোজহার বলেন, বাঙলার প্রাচীনতম রাজধানী পুন্ড্রনগরের ‘মহাস্থান’কে কেন্দ্রভ‚মিতে রেখে মহামুনি গৌতম বুদ্ধের বাঙলায় আগমনকাল থেকে ১৯৭১-এর বাংলাদেশ কালব্যাপ্তির এ নাট্য আখ্যানে পুরো গল্পটাকে একসঙ্গে বলার চেষ্টা হয়েছে। বাঙলা অঞ্চলের ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পট ও তার পরিবর্তনের ইতিহাসের ‘জানা ও জনপ্রিয়’ গল্পপ্রবাহ এ নাটকের আখ্যানভাগ। মঞ্চায়ন সবার জন্য উন্মুক্ত। বগুড়ার ভাসু বিহারে মঞ্চায়নস্থলে পৌঁছানোর জন্য বগুড়া শহর থেকে বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বেলা সাড়ে ৩টায় বগুড়া সাতমাথার জিলা স্কুলের সামনে থেকে এবং বগুড়া প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বাস যাত্রা করবে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনায় ‘সোমপুর কথন’ এবং ‘ওয়ারী বটেশ্বর’ শীর্ষক দুটি প্রত্ননাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App