×

জাতীয়

মহাজোটে দরকষাকষি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০১৮, ১১:১১ এএম

মহাজোটে দরকষাকষি
তফসিল ঘোষণার ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, যুক্তফ্রন্ট ও ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকও হচ্ছে দলগুলোর মধ্যে। ১৪ দলে আসন বণ্টন নিয়ে খুব একটা জটিলতা দেখা না দিলেও জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জোট, বিকল্পধারার নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট ও ইসলামী দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ইসলামী ঐক্যজোটের আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখনো দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে। ৩শ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের কাছে শরিকদের চাহিদা প্রায় দেড়শ আসন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টিই ১০০ আসনের তালিকা জমা দিয়েছে। ১০ থেকে ২০টি আসন চায় যুক্তফ্রন্ট, ইসলামী জোটের চাওয়া ৫টি। আর ১৪ দলের শরিকরা ২৫ থেকে ৩০টি। এদিকে মহাজোটের আকার যত বড়ই হোক না কেন, শরিকদের ৬৫ থেকে ৭০টির বেশি আসন ছাড় দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বরাবরই এমন তথ্য জানিয়ে আসছেন। এতদিন প্রথমে এককভাবে তিনশ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণার পর সমঝোতার ভিত্তিতে জোট শরিকদের আসন ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়ে এলেও গতকাল তিনি জানান, জোট শরিকদের অনুরোধে তিনশ আসনেই যৌথভাবে প্রার্থী ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। জানা গেছে, দফায় দফায় বৈঠকের পর ১০০ জনের তালিকা থেকে সর্বশেষ ৬০টি আসনের দাবি তুলেছে জাতীয় পার্টি। গতকাল সচিবালয়ে এমন কথা জানিয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শ্রমবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির শীর্ষ নেতাদের দেন দরবার চলছে। দুয়েকদিনের মধ্যে সমঝোতা হয়ে যাবে বলেও জানান এই নেতা। সম্প্রতি একটি বিদেশি গণমাধ্যমকে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়ও জানিয়েছেলেন, আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আলোচনার টেবিলেই নির্ধারিত হবে। বাস্তবিক অর্থে তিনশ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের আছে। এখন আমাদের যদি জোটগতভাবে নির্বাচন করতে হয়, তখন কীভাবে আর কোথায় কোথায়, কোন আসনে আমাদের ভালো প্রার্থী আছে, সেটা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা করেই নির্ধারিত হবে। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টি জোটকে এবার সর্বোচ্চ ৩৫টি আসনে ছাড় দিতে চায় আওয়ামী লীগ। যুক্তফ্রন্টকে ৫টি, চৌদ্দ দলের শরিকদের ১৫ থেকে ২০টি এবং ইসলামী জোটকে ২টি আসন ছাড়তে চায় আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে বর্তমানে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আছেন এমন কিছু আসন নিয়েও দেন দরবার করছে জাতীয় পার্টি ও যুক্তফ্রন্ট। ফলে এ আসনগুলো নিয়েও কিছুটা জটিলতায় আছে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড। এদিকে শরিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সবমিলিয়ে দেড়শর মতো আসন চাওয়ায় মহাজোটে কোনো টানাপড়নের আশঙ্কা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিদেশি ওই গণমাধ্যমটিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছিলেন, এখানে টানাপড়েনের কিছু নেই। কারণ আমাদের নেত্রী আগেই বলেছেন, আসন বণ্টনটা সংখ্যাভিত্তিক হবে না, এটা হবে নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে। সে কারণে কে কতটা আসন দাবি করল, সেটা বড় কথা নয়। শরিক দলগুলোর মধ্যে কার কতটা আসনে জয়লাভের সক্ষমতা আছে, সেই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আসন বণ্টন হবে। শরিকদের কতটা আসন ছাড়া হবে, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি উল্লেখ করে হানিফ আরো বলেন, আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আগেই বলেছেন, শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টনের ব্যাপারে, আমাদের চৌদ্দ দল, মহাজোটের জাতীয় পার্টি, সদ্য আসা যুক্তফ্রন্ট, বিকল্পধারাসহ আরো কয়েকটি দল আছে, সবার কথা বিবেচনা করে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০টা আসন ছাড়া হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App