আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দৌড়ে পিছিয়ে নেই নারী প্রার্থীরা। বর্তমান সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক ছাত্রনেত্রী, শিক্ষক, উদ্যোক্তা, অভিনেত্রী, শিল্পী সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন দলীয় মনোনয়নের দৌড়ঝাঁপে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন তুলেছেন একঝাঁক নারী নেত্রী। এরই ধারা-বাহিকতায় এবার ফেনী-১ ও ফেনী-৩ আসনেও মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছেন ছয় নারী নেত্রী। ফেনী-১ আসন (ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী) থেকে বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজমা আক্তার। অপরদিকে ফেনী-৩ আসন (সোনাগাজী ও দাগনভূঞা) থেকে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক অভিনয় শিল্পী শমী কায়সার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আইনজীবী শাহানা আক্তার শানু মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছেন। ফেনী-১ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা চারবার নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি দুইটি দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি। তার পক্ষে দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু। এ আসনে খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপি থেকে আবদুল আউয়াল মিন্টু, নুর আহম্মদ মজুমদারসহ ৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কেন্দ্রীয় জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। এ ছাড়া এ আসন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমসহ পাঁচজন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পাশাপাশি জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজমা আক্তার। এদিকে ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। তিনি দীর্ঘদিন থেকে রাজধানীতে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। গত দুই বছর যাবত এলাকায় নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এলাকায় গণসংযোগ করছেন। তার পৈত্রিক বাড়ি সোনাগাজীর চর ছান্দিয়া গ্রামে। এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শমী কায়সারও দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক পরিচিত নাম। অভিনয়, প্রযোজনাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত তিনি। তার বাবা ’৭১-এর একজন শহীদ বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক-সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার। মা পান্না কায়সারও সাবেক সাংসদ। তার পৈত্রিক বাড়ি সোনাগাজীর নবাবপুর ইউনিয়নের মজুপুর গ্রামে। এ ছাড়া এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল বাশার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, জাপান আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম ভুট্টুসহ ১৯ জন। অপরদিকে এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহানা আক্তার সানু শিক্ষা জীবন থেকেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি ঢাকায় আইন পেশায় নিয়োজিত। পৈত্রিক বাড়ি সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ছাড়াইতকান্দি গ্রামে। এ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি নেতা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহসভাপতি সোলায়মান ভূঞা, বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা নাজমুল করিম দুলালসহ ২৪ জন বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। এ আসনে জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন এক-এগারোর আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। যোগদানের পরদিনই তাকে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়েছে। এ আসনটি ২০১৪ সালেও মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এ আসন থেকে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।