×

অর্থনীতি

ঋণখেলাপি তৈরিতে হাত রয়েছে ব্যাংকারদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:১৩ পিএম

ঋণখেলাপি তৈরিতে হাত রয়েছে ব্যাংকারদের
ব্যাংকাররাই ঋণখেলাপি তৈরি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের বারবার পুনঃতফসিল হয়ে থাকে। কতবার ঋণখেলাপিরা এ সুযোগ পেয়ে থাকেন তা আমার জানা নেই। আর এ সুযোগ দিয়ে থাকেন ব্যাংকাররা। এভাবেই ব্যাংকাররা চেষ্টা করেন যাতে উদ্যোক্তারা ঋণখেলপি হতে পারেন। ব্যাংকাররাই এ অবস্থা তৈরি করেছেন। যাতে দ্রুত সে ঋণখেলাপি হয়ে যায়। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) মিলনায়তনে পাঁচ দিনব্যাপী রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক পরিচালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, খেলাপি ঋণের অনবরত পুনঃতফসিল (রিশিডিউলিং) হওয়ায় ঋণখেলাপি বেড়ে যাচ্ছে। এখন এর একটু লাগাম টানা প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে অবসায়ন বা একীভ‚তকরণ হলো সবচেয়ে ভালো সমাধান, কিন্তু সেটি হয় না। কারণ ব্যাংকাররাই চায় উদ্যোক্তারা তাদের বাধ্য থাকুক। আমার কাছে মনে হয় ব্যাংকারদের এটা একটা অস্ত্র। যেটা ব্যবহার করেন এবং করতে চান। এই লক্ষ্যটা অত্যন্ত খারাপ। ব্যাংকারদের উদ্দেশে আমার একটি উপদেশ হচ্ছে, জোর করে হলেও এ লক্ষ্য থেকে আপনারা বিরত থাকবেন। একজন উদ্যোক্তাকে শুরুতে সাহায্য করবেন। কিন্তু ব্যাংকাররা সেটা করেন না। এ ক্ষেত্রে আপনাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, এক সময় ব্যাংকিং খাত সরকারি ছিল। কিন্তু এখন ব্যাংকিং খাতে ব্যক্তি মালিকানা অনেক প্রসারিত। ব্যাংকিং খাতের সিংহভাগ ব্যবসা ব্যক্তি মালিকানা খাতেই হয়ে থাকে। এক সময় ছিল সোনালী ব্যাংক সবচেয়ে বড়। এখন আর সেটা নেই। তার মানে ব্যংকিং খাতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে গত কয়েক বছরে। এ খাত নিয়ে অনেক সমালোচনা, আলোচনা বিদ্যমান। অনেকেই বলতে চান এ খাতটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এবং এটি দুর্বল খাত হিসেবে অনেকেই বিবেচনা করেন। আর একটি কথা বলা হয়, আমাদের এখানে ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি। সরকারিসহ ৬৩টি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ সরকারি ব্যাংক। খাত নিয়ে এটি আরেকটি সমালোচনা। মুহিত বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে সবচেয়ে বড় সমালোচনা হচ্ছে খেলাপি ঋণ। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আছে সরকারি ব্যাংকগুলো নিয়ে। সেগুলোতেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেশি। এটা রোধে দেশের ব্যাংকগুলোকে একীভ‚ত করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে এ ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। এ ক্ষেত্রে একটি আইন হয়েছে। তবে আইনটি খুব উপযুক্ত নয়। ব্যাংকে একেবারেই বন্ধ না করে দিয়ে একীভ‚তকরণ করা যেতে পারে। এটা খুব ভালো হবে। এ ছাড়া প্রাইভেট ব্যাংকে ঋণখেলাপি সে রকম নেই। তবে প্রাইভেট খাতে আরেক রকম ফাঁকিবাজি রয়েছে। প্রাইভেট এক ব্যাংকের পরিচালক সমঝোতার মাধ্যমে অন্য ব্যাংক থেকে লোন নেন। তিনি তার নিজের ব্যাংক থেকে ঋণ নেন না। এটা নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কষ্টকর। তবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। আমাদের উপায় বের করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটা হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App