×

বিনোদন

হলিউডের ৭ মিউজিক্যাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৪১ পিএম

হলিউডের ৭ মিউজিক্যাল
 
হলিউডি সিনেমাতে মিউজিক্যাল নামের ধারাটি গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে পেয়েছিল ভীষণ জনপ্রিয়তা। এরপর ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা হারালেও মাঝে মাঝেই ফিরে এসে বিনোদন দিয়েছে দর্শকদের। হলিউডের সেরা ২৫ মিউজিক্যাল নিয়ে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের তালিকাটি প্রকাশ পায় ২০০৬ সালে। সেই তালিকার থেকে সেরা ৭ সিনেমার কথা
সিঙ্গিং ইন দ্য রেইন বিশ শতকের গোড়ার দিকের কথা। হলিউড তখন সবে নির্বাক যুগ থেকে যাত্রা শুরু করেছে ‘টকিজ’-এর দিকে। ডন লকউড, ক্যাথি সেলডেন আর কসমো ব্রাউন হলিউডে নিজের জায়গা খুঁজে নিতে চান শিল্পী হিসেবে। তাদের বেড়ে ওঠার গল্প নিয়েই ১৯৫২ সালের সিনেমা ‘সিঙ্গিং ইন দ্য রেইন’। কেবল মিউজিক্যাল হিসেবেই নয়, সর্বকালের সেরা সিনেমার তালিকাতেও ওপরের দিকেই আছে জিন কেলির এই সিনেমাটি। সিনেমায় তার দুই সহশিল্পী ডোনাল্ড ও’কনর ও ডেবি রেইনল্ডসকে সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা আর রেইনকোট গায়ে সেই বিখ্যাত গান ‘সিঙ্গিং ইন দ্য রেইন’ আজো মনে রেখেছে সবাই। নিকো হার্ব ব্রাউনের সুর আর আর্থার ফ্রিডের কথায় সিনেমার অন্য ১২টি গানও তখন সিনেমাপ্রেমীদের মুখে মুখে ফিরত। ওয়েস্ট সাইড স্টোরি সেই চিরাচরিত রোমিও-জুলিয়েটের গল্প, তবে সময়টা ষাটের দশক আর স্থান নিউইয়র্কের ম্যানহাটন। ‘ওয়েস্ট সাইড’ মহল্লার দুই গ্যাং জেটস আর শার্কসের সদস্য টনি আর মারিয়া শত্রু হয়েও প্রেমে পড়ে যায় তারা ১৯৬২ সালে সেরা চলচ্চিত্রসহ ১০ বিভাগে অস্কার জেতে এই সিনেমা। নাটালি উড আর রিচার্ড বেইমারের দারুণ রসায়নে সিনেমাটি বক্স অফিস কাঁপিয়ে দেয়। সিনেমাটিতে লিওনার্ড বের্নস্টেইনের সুর স্টেফান সন্ডহেইমের কথায় ছিল মোট ৯টি গান। মারিয়া আর টনির দ্বৈত গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন মার্নি নিক্সন আর জিমি ব্রায়ান্ট। তাদের দুজনের গাওয়া ‘সামহোয়ার’-গানটা এখনো সর্বকালের সেরা রোমান্টিক গানগুলোর একটি। দ্য উইজার্ড অফ অজ আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সর্বকালের সেরা শত গানের তালিকায় রয়েছে এই সিনেমার ‘ওভার দ্য রেইনবো’ গানটি। জুডি গারল্যান্ড, জ্যাক হেলি, ফ্র্যাঙ্ক মরগান, রে বোলগার অভিনীত এই সিনেমা অভিনব সব পোশাক আর সেট ডিজাউনের জন্যও বিখ্যাত। হ্যারল্ড আরল্যানের সুর আর ই ওয়াই হারবার্গের কথায় সিনেমার গানগুলোও সমাদৃত হয় দারুণ। সব মিলিয়ে, এমজিএম স্টুডিওর আইকনিক এই ফ্যান্টাসি সিনেমা এখনো দখল করে আছে বিশ্বের পপ কালচারের অনেক বড় অংশ। ইতিহাসের অন্যতম ব্যয়বহুল এই সিনেমাকে তাই বিশ্বসেরা সিনেমার কাতারে প্রথমদিকে রাখেন অনেকেই। দ্য সাউন্ড অফ মিউজিক ১৯৬১ সালের ‘ওয়েস্ট সাইড স্টোরি’র দলই যেন আরো একবার পর্দা মাতাতে ফিরে এল ১৯৬৫ সালের সিনেমা ‘দ্য সাউন্ড অফ মিউজিক’ নিয়ে। রিচার্ড রজার্সের সুর, অস্কার হ্যামারস্টেইনের কথা, জুলি অ্যান্ডরুজের কণ্ঠ, অভিনয় এবং তার সঙ্গে রবার্ট ওয়াইজের পরিচালনা, খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায় সিনেমাটিকে। ফলাফল আরো একবার অস্কারের আসরে বাজিমাত করলেন ওয়াজ, সেরা সিনেমা তো বটেই সেরা পরিচালকের অস্কারও সেবার বাগিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। ক্যাবারে একটি দৃশ্য বাদে পুরো সিনেমার দৃশ্যায়ন একটি ক্লাবের নাচের মঞ্চে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগে, বার্লিনে যখন সবে উত্থান ঘটছে নাৎসি বাহিনীর, সেই সময় একটি ক্লাবে ক্যাবারে নাচিয়েদের গল্প নিয়েই সিনেমাটি। লিজা মিনেলি, জোয়েল গ্রেদের অসাধারণ অভিনয় আর গানের ফলে মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই বøকবাস্টার হিট হয় সিনেমাটি। অস্কারের মঞ্চেও দারুণ সফল হয়েছিল সিনেমাটি। সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেত্রী, পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেতাসহ মোট আটটি পুরস্কার জিতে নিয়েছিল ১৯৭২ সালের এই সিনেমা। মনোনীত হয়েছিল সেরা চলচ্চিত্র বিভাগেও নেহাতই বছরটা ছিল ‘দ্য গডফাদারের’। সবচেয়ে বেশি পুরস্কার জিতেও তাই সেরা সিনেমা হওয়া হয়ে ওঠেনি। মেরি পপিন্স ডিজনি প্রযোজিত সিনেমাগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বেশি অস্কার মনোনয়ন পাওয়া সিনেমা। ১৯৬৪ সালের এই সিনেমায় মূল ভ‚মিকায় অভিনয় করেছিলেন জুলি অ্যান্ডরুজ। জাদুবিদ্যায় সিদ্ধহস্ত, দুষ্টু বাচ্চাদের শায়েস্তা করায় ওস্তাদ কিন্তু একই সঙ্গে অসম্ভব মমতাময়ী গভর্নেসের চরিত্রে অভিনয় করে ক্যারিয়ারের প্রথম এবং একমাত্র অস্কারটি জিতে নিয়েছিলেন তিনি। শারম্যান ভাইদের সুরে ও কথায় সিনেমাটিতে গান ছিল ১৭টি। এর মধ্যে জুলির কণ্ঠে ‘চিম চিম চিরে’ গানটি জিতে নিয়েছিল সেবারের সেরা অরিজিনাল সংয়ের অস্কার। আ স্টার ইজ বর্ন ভিকি লেস্টার এক তরুণ অভিনেত্রী এবং গায়িকা; চিত্রজগতের বড় তারকা হওয়ার স্বপ্ন তার চোখে। ওদিকে নরম্যান মেইন হলিউডের অভিজ্ঞ অভিনেতাদের একজন; বয়স আর মদ্যপানে আসক্তি যাকে নিয়ে এসেছে ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে। কিন্তু তারপরেও সে চেষ্টা করতে থাকে ভিকির ক্যারিয়ার গড়ে দিতে। এমনই এক গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছিল ১৯৫৪ সালের সিনেমা ‘আ স্টার ইজ বর্ন’। অনেকদিন পর এই সিনেমার মাধ্যমেই অভিনয়ে ফেরেন জুডি গারল্যান্ড। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কাজ করেও সিনেমাটির জন্য সেরা অভিনেত্রীর অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। সিনেমায় তার গাওয়া ১৩টি গানই প্রশংসিত হয়। সঙ্গীত পরিচালনার জন্য অস্কার অর্জন করেন রে হেইনডর্ফ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App