×

জাতীয়

ভোটের মাঠে নেতাদের দল বদলের চমক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৩৪ এএম

ভোটের মাঠে নেতাদের দল বদলের চমক
রেজা কিবরিয়া আওয়ামী পরিবারের সন্তান। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারে ছিলেন তার পিতা অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহত হন তিনি। নির্বাচনী দলবদলের বাজারে দারুণ এক চমক দেখালেন সেই এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হতে চান তিনি। এ লক্ষ্যে যোগ দিয়েছেন ড. কামালের গণফোরামে। তার এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য শুধু রেজাই নন। একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে নীতিহীন রাজনীতির গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়েছেন আরো কয়েকজন ডাকসাইটে নেতাও। নির্বাচন এলেই শুরু হয় মনোনয়নযুদ্ধ। দেশের প্রায় আসনেই প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে থাকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিজ দলের মনোনয়ন না পেলে চলে দলবদল। গত কয়েকটি নির্বাচনের ন্যায় এবারো এমন চিত্র দৃশ্যমান। দল ও জোটের প্রার্থিতা নিশ্চিত নয় আঁচ করতে পেরে অনেকেই দল ছাড়ছেন, যোগ দিচ্ছেন আরেক দলে, জোটে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এমন পরিস্থিতিকে চমক হিসেবে দেখছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড়ের মধ্যে ২৬ অক্টোবর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারায় যোগ দেন বেশ কয়েকজন রাজনীতিক। এদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, এরশাদ আমলের দুই প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন ও নাজিম উদ্দিন আল আজাদ। ২৩ এপ্রিল জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এ টি এম আলমগীর। এর আগে তিনি কুমিল্লা-১০ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) সংসদীয় আসন থেকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। গত ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টিতে ফেরেন স্বতন্ত্র এমপি রুস্তম আলী ফরাজী। ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও পরে যোগ দেন বিএনপিতে। ২০০১ সালে বিএনপির টিকেট নিয়ে সংসদ সদস্য হন। পরে ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে হেরে যান। তবে আর বিএনপিতে সক্রিয় হননি তিনি। ২০১৪ সালে ফের স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে এমপি হন। ১ মার্চ ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম হারুন অর রশিদ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মঞ্জুর আলম চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। তিনি মূলত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি, সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর শিষ্য হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত। আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ফারুক আলম গাইবান্ধা-৫ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। ১/১১-এর আলোচিত চরিত্র লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ফেনী-৩ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনেন। সেখানে সাড়া না পেয়ে ভোল পাল্টে পরদিনই তিনি একই আসনের জন্য জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরম কেনেন। রাতারাতি বনে যান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এরশাদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ২০০১ সালে বিএনপির বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়ে আলোচনায় আসেন এম এম শাহীন। এরপর ফেরেন বিএনপিতে। কিন্তু ১/১১ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় যোগ দেন কিংস পার্টিতে। পরে আবারো দলে ফিরে গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির শক্ত প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় দীর্ঘদিন মাঠে ছিলেন তিনি। কিন্তু রাতারাতি দল বদল করে ফের বিএনপি ছেড়েছেন এম এম শাহীন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারায় যোগ দেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফন্ট থেকে মনোনয়নের অনিশ্চতার কারণে শাহীন দল বদল করেছেন বলে জানা গেছে। চাউর রয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুলতান মনসুর মনোনয়ন পাবেন এমন আভাস পেয়ে দল বদল করেন এম এম শাহীন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App