×

জাতীয়

ধরে রাখতে তৎপর আ.লীগ, ফেরত চায় ২০ দলীয় জোট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৩৫ পিএম

ধরে রাখতে তৎপর আ.লীগ, ফেরত চায় ২০ দলীয় জোট
পিরোজপুর-১ সংসদীয় আসনটি যুদ্ধাপরাধ মামলায় আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত ও নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কারণে একদিকে আলোচিত ও অন্যদিকে বিতর্কিত। এ আসনটি এককভাবে কোনো দলই দখলে রাখতে পারেনি কখনো। বিভিন্ন সময় জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী ও আবারো আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে জাতীয় পার্টি থেকে এ আসনে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হন ৬০ দশকের তুখোর ছাত্রনেতা বর্তমান জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার। ১৯৯১ সালের ৫ম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সুধাংশু শেখর হালদার আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। ১৯৯৬ সালের বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়ে জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুল মাত্র ১২ দিনের জন্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছর ৭ম সংসদ নির্বাচনে সুধাংশু শেখর হালদারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসেন ৪ দলীয় জোট প্রার্থীর নতুন মুখ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও ওয়াজ মাহফিলে সুকণ্ঠ বক্তা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। সুচতুর সাঈদী আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ও ধর্মীয় পুঁঁজিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে মাত্র ২৫৬ ভোটে সুধাংশু শেখর হালদারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১ সালে আবারো সুধাংশু শেখর হালদারকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ৯ম সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম এ আউয়াল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের হারানো আসনটি পুনরুদ্ধার করেন। ২০১৪ সালে আবারো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিদ্বতায় এ কে এম এ আউয়াল সাংসদ নির্বাচিত হন। মাওলানা সাঈদী যুদ্ধাপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছেন বিএনপির জেলা সভাপতি ও সাবেক সাংসদ গাজী নুরুজ্জামান বাবুল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ও সহসভাপতি ও নাজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান। অন্যদিকে মাওলানা সাঈদীর পুত্র শামীম বিন সাঈদী ঈদসহ বিভিন্ন সময় পিরোজপুর-১ আসনের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার সাঁটিয়ে জানান দিচ্ছেন প্রার্থী হওয়ার। মাঝেমধ্যে সাঈদী ফাউন্ডেশনে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আড়ালে সভা-সমাবেশ করে নির্বাচনী মাঠ সরগরম রাখছেন। অপরদিকে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার চাচ্ছেন পিরোজপুর-১ আসনে জোটের প্রার্থী হতে। এতো গেল ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের কথা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কমপক্ষে হাফ ডজন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায়। এদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এডাভোকেট শ ম রেজাউল করিম, প্রয়াত সাংসদ এডভোকেট এনায়েত হোসেন খানের কন্যা ও শেখ পরিবারের পুত্রবধূ শেখ এ্যানি রহমান, সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ শাহ আলম, পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমান মালেক, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য গোলাম হায়দার। পিরোজপুরবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দৃষ্টি এখন কেন্দ্রের দিকে। কে পাবেন নৌকার টিকেট? আর সাধারণ জনগণের প্রশ্ন কে হবেন আগামী একাদশ জাতীয় সংসদের এমপি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App