×

জাতীয়

অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বড় দুই দলই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:৩২ পিএম

অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বড় দুই দলই
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনসহ ১১টি আসনেই প্রার্থীদের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। ময়মনসিংহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুদলেই আছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও গ্রুপিং। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক তৎপরতাও বাড়ছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও সভা-সমাবেশ চালাচ্ছে। জেলার সব আসনেই একই চিত্র বিরাজমান। ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং ও অন্তর্দ্ব›দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড মোয়াজ্জেম হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত-উর রহমান শান্ত, প্রফেসর ডা. এম এ আজিজ প্রমুখ নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। মূলত ময়মনসিংহের রাজনীতি দেখভাল করেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও তার ছেলে মোহিত-উর রহমান শান্ত। ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ইকরামুল হক টিটুর সঙ্গে শান্ত গ্রুপের বিরোধ দৃশ্যমান। যুবলীগ নেতা আজাদ শেখ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে মোহিত-উর রহমান শান্ত সাংগঠনিকভাবে কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামূল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় সংগঠন। এখানে ব্যক্তি আক্রোশ, গ্রুপিং-লবিং থাকতে পারে। কিন্তু আমরা আওয়ামী পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে মনোনয়ন বিষয়ে দিক-নির্দেশনা আসতে পারে। মহাজোটের নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদকে আসনটি ছেড়ে দেয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি। এদিকে ময়মনসিংহে মহানগর বিএনপির নতুন কোনো কমিটি গঠিত হয়নি। মামলা-হামলার শিকার এ সংগঠনটি একটি সীমাবদ্ধ গন্ডির মধ্যে থাকায় আন্দোলনেও সফল হতে পারছে না। ফলে মহানগর ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশী, ওয়াহাব আকন্দ, উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ওয়ালিদ ও সদ্য আটক বিএনপি নেতা প্রফেসর শেখ আমজাদ হোসেনসহ একাধিক নেতাকর্মী ভিতরে ভিতরে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ময়মনসিংহের বাকি ১০ আসনেও আওয়ামী লীগ বিএনপি উভয় দলে অন্তর্দ্ব›দ্ব, মারামারি, হানাহানি, গ্রুপিংয়ের মধ্যেও সভা-সমাবেশ চলছে। ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে প্রয়াত সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিনের ছেলে বর্তমান এমপি জুয়েল আরেং কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্ক থেকে ঘুরে আসেন। হালুয়াঘাট-ধোবাউড়াতে আওয়ামী লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও আসনটিতে বাবার জনপ্রিয়তার কারণে জুয়েল আরেংকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন। তবে অন্তর্দ্বন্দ্বের সমাধান না হলে ধানের শীষের জয়ের পথ প্রশস্ত হতে পারে। এদিকে জনপ্রিয়তার কারণে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিমত। তবে বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামলাতে না পারলে তারাও খুব একটা ভালো করতে পারবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা), ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর), ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ), ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল), ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও), ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা), ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল), ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া), ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী ও গ্রুপিং রয়েছে। কলহ-বিবাদের কারণে আসনগুলোতে উভয় দলেরই সাংগঠনিক ভিত্তি একেবারে নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। এলাকাভিত্তিক কোথাও নৌকা আবার কোথাও ধানের শীষ চাঙ্গা রয়েছে। তবে বিএনপির বিদ্রোহীদের কারণে নৌকা, আবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের কারণে ধানের শীষ বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App