×

জাতীয়

আ.লীগ-বিএনপি দুদলেই গ্রুপিং : কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:২৯ পিএম

আ.লীগ-বিএনপি দুদলেই গ্রুপিং : কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনসহ জেলার ১১টি আসনেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপক প্রস্ততি ও হিসাব-নিকাশ চলছে। ময়মনসিংহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুদলেই আছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, গ্রুপিং, লবিং। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় দলগুলোর সাংগঠনিক তৎপরতাও বাড়ছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়ে সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। জেলার সব আসনেই একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে গ্রুপিং-লবিং ও অন্তর্দ্ব›দ্ব। নির্বাচনে দুগ্রুপেই একাধিক প্রার্থী থাকায় ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আছে বলে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা মনে করছেন। সদর আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমান ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. মোয়াজ্জেম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোহিত-উর রহমান শান্ত, প্রফেসর ডা. এম এ আজিজ নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও তার ছেলে মোহিত-উর রহমান শান্ত বেশিরভাগ সময় ময়মনসিংহের রাজনীতি দেখভাল করে থাকেন। ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ইকরামুল হক টিটুর সঙ্গে প্রকাশ্যে শান্ত গ্রুপের বিরোধ রয়েছে। এসব কারণে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা কিছুটা দেখা যায়। এ ছাড়া, সম্প্রতি যুবলীগ নেতা আজাদ শেখ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে মোহিত-উর রহমান শান্ত সাংগঠনিকভাবে রাজনীতিতে কিছুটা কোণঠাসা পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় সংগঠন। এখানে গ্রুপিং-লবিং থাকতে পারে। কিন্তু আমরা আওয়ামী পরিবারে অন্তর্ভুক্ত আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে মনোনয়ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা আসবে। মূলত মহাজোটের নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদকে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনটি ছেড়ে দেয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি। এদিকে মহানগর বিএনপির বর্তমানে কোনো নতুন কমিটি নেই। মামলা-মোকাদ্দমার কারণে মহানগর ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমও আস্তে আস্তে ঝিমিয়ে পড়ছে। মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়াহাব আকন্দ, উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ওয়ালিদ ও বিএনপি নেতা প্রফেসর শেখ আমজাদ হোসেনসহ এশাধিক নেতাকর্মী ভেতওে ভেতরে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ময়মনসিংহের বাকি ১০ আসনেও আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলে অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যেও সভা-সমাবেশ চলছে। ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে প্রয়াত সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিনের ছেলে বর্তমান এমপি জুয়েল আরেং কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্ক থেকে ঘুরে আসেন। যদিও হালুয়াঘাট-ধোবাউড়াতে আওয়ামী লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন, তথাপি এখানে বাবার জনপ্রিয়তার কারণে জুয়েল আরেংকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীরা মনে করেন। তবে দ্বন্দ্বের সমাধান না হলে ধানের শীষের জয়লাভের পথ প্রশস্ত হতে পারে বলে আওয়ামী লীগেরই অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন। এদিকে জনপ্রিয়তার কারণে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিমত। তবে বিএনপি বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামলাতে না পারলে সেখানেও দলটির ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন অনেকে। ময়মনসিংহ-২ ফুলপুর-তারাকান্দা, ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর, ময়মনসিংহ-৮ ঈশ^রগঞ্জ, ময়মনসিংহ-৯ নান্দাইল, ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও, ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা, ময়মনসিংহ-৭ ত্রিশাল, ময়মনসিংহ-৬ ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ-৫ মুক্তাগাছা এসব আসনেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী ও দ্বন্দ্বের চিত্র দেখা যায়। গ্রুপিং-লবিং ও কলহ-বিবাদের কারণে এসব আসনেও দুদলেরই সাংগঠনিক ভিত্তি একেবারে নাজুক পরিস্থিতে রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম বিএনপির খুব একটা ভালো নেই। যদিও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিএনপির বিদ্রোহীদের কারণে নৌকা আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের কারণে ধানের শীষ বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App