×

মুক্তচিন্তা

দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারাধীন করুন

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:১৭ পিএম

খবরে প্রকাশ, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অমান্য করে শোডাউন করার সূত্র ধরে গত বুধবার বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়া পল্টনসহ আশপাশের এলাকা রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ার পর গাড়ির যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে গেছে অনেকেই। দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশ, বিএনপি নেতাকর্মী, পথচারী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন। নির্বাচনের আগে এই ধরনের সহিংসতা শুভ লক্ষণ নয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে রয়েছে তখন খোদ রাজধানীতে পুলিশের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটছে, তখন বিষয়টি অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। পুলিশ যদি নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে জননিরাপত্তা বিধান হবে কী করে।

জানা গেছে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তৃতীয় দিনের মতো ওইদিন মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। এই কারণেই দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নেতাকর্মীসহ ঢাকায় এসেছেন। প্রার্থীদের ছবিসহ ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে নেতাকর্মীদের মিছিলসহ শোডাউন করতে করতে নয়াপল্টনে হাজির হচ্ছিলেন। স্বাভাবিক কারণেই রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মীর্জা আব্বাসের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের বিশাল একটি মিছিল ফকিরাপুলের দিক থেকে বিএনপি কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হয়। এতে করে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় সব যানবাহন স্থির হয়ে পড়ে। চারদিকে অন্তত এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়ে যায়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নেতাকর্মীদের রাস্তা খানিকটা ফাঁকা রেখে ফুটপাতের দিকে অবস্থান নিতে বলেন। যাতে ধীর গতিতে হলেও যানবাহন চলাচল করতে পারে। এতে করে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পুলিশ নেতাকর্মীদের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কথাটিও জানান। এমনকি নির্বাচন কমিশন থেকে সব ধরনের শোডাউন নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও নেতাকর্মীদের অবহিত করেন। পুলিশের এমন কথার সূত্র ধরে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পুলিশও হাল্কা লাঠিচার্জ করতে থাকে। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া আর ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে রাখা পুলিশের একটি পিকআপ ও একটি পেট্রোলকারে আগুন ধরিয়ে দেয়। নির্বাচনী আমেজের মধ্যে হঠাৎ করেই এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপি কর্মীরা নির্বাচন সামনে রেখে ইস্যু তৈরির লক্ষ্যে বিনা উসকানিতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। নাশকতা করে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের একটা অপচেষ্টা এটা- বলছেন সরকারি মহল। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। হামলাকারীদের যদি চিহ্নিত করা না যায়, ধরা না যায় তাহলে তো হামলা আরো হবে। এর আগে দেখেছি, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা। বিভিন্ন চেকপোস্টে একের পর এক পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা মনে করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পল্টনের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারাধীন করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App