×

পুরনো খবর

আয়কর মেলায় করদাতাদের উপচে পড়া ভিড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৭ পিএম

আয়কর মেলায় করদাতাদের উপচে পড়া ভিড়
আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় অনেক করদাতাকে মেঝেতে বসেও রিটার্ন ফরম পূরণ করতে দেখা গেছে। মেলায় আগত করদাতাদের উল্লেখযোগ্য অংশই আয়কর রিটার্ন জমা দিচ্ছেন। এ ছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নেয়ার মাধ্যমে নতুন করে আয়করের খাতায়ও নাম লিখাচ্ছেন অনেকে। রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। মেলায় আগতরা জানান, অফিসের লোকের মাধ্যমেই রিটার্ন জমা দিতাম। এবারই প্রথম নিজের ফরম নিজেই জমা দিতে এসেছি। এখানে এসে হেল্পডেস্ক থেকে শুনে নিয়েছি কি কি করতে হবে। সে অনুযায়ী রিটার্ন ফরম পূরণের জন্য কোনো জায়গা না পেয়ে মেঝেতে বসেই করছি। আকতার বানু নামে একজনকেও মেঝেতে বসে রিটার্ন ফরম পূরণ করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, মেঝেতে বসে হলেও কাজটা শেষ করে ফেলা ভালো। এক বছরের মতো আর টেনশন থাকল না। কর দেয়ার জন্য মেলায় এক ছাদের নিচে সব সুবিধা পাওয়া যায়। ফরম পূরণে ভুল হচ্ছে কিনা সন্দেহ হলেই সেটা হেল্পডেস্ক থেকে দেখিয়ে নেয়া যায়। তাই মেলাতেই রিটার্ন দাখিল করতে এসেছি। তা ছাড়া কার্পেট বিছানো থাকায় মেঝেতে বসে ফরম পূরণে তাদের কোনো অভিযোগও নেই। মেলায় বেশ কিছু আইনজীবী করদাতাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। মামুন এমনই একজন কর আইনজীবী। তিনি বলেন, ব্যক্তি শ্রেণির বা কোম্পানি, যারা কর দিতে আসছেন তাদের আমরাসহ এনবিআরের হেল্প বুথ থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। কীভাবে রিটার্নগুলো সুন্দরভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে, কোথাও রেয়াত পাওয়া যাবে কিনা এসবসহ সামগ্রিক বিষয়ে করদাতাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। মেলার আয়োজক জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলা শেষ হবে আগামী ১৯ নভেম্বর। গত ৮ বছরে আয়কর মেলা পেয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ, বেড়েছে জনপ্রিয়তা। মেলায় সেবাগ্রহীতার সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। ২০১০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে আয়কর মেলায় সেবাগ্রহীতা ও রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে ১৯ গুণ। একই সময়ে মেলা থেকে নিবন্ধন নেয়া নতুন করদাতার সংখ্যা বেড়েছে ৫ গুণ ও রিটার্ন জমা দেয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৬ গুণ। ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে ৭ দিন, জেলা শহরে ৪ দিন, ৩২ উপজেলায় দুদিনব্যাপী এবং ৭০টি উপজেলায় একদিন ভ্রাম্যমাণ আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন ও আলোকসজ্জায় সেজেছে মেলাগুলো। এ ছাড়া আয়কর মেলা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে করবিষয়ক এসএমএসও পাঠানো হয়েছে। টিভি ও টকশোতেও থাকবে মেলা সম্পর্কে আলোচনা। সচেতনতা বাড়াতে তৈরি করা হয়েছে আয়কর ডকুমেন্টারি ও ডকু ড্রামা, যা প্রচার করা হবে বিভিন্ন টেলিভিশন ও মেলায়। এদিকে আয়কর মেলায় করদাতারা সহজেই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারছেন। ঢাকায় প্রতিটি কর অঞ্চলের জন্য আলাদা বুথ থাকছে। নেয়া যাচ্ছে নতুন কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন)। এনবিআরের ই-পেমেন্ট ওয়েবসাইট ব্যবহার করে পরিশোধ করা যাচ্ছে কর। মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য রয়েছে আলাদা বুথ। মেলায় স্থাপিত সোনালী ও জনতা ব্যাংকের বুথে করদাতারা আয়কর জমা দিতে পারছেন। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন শুল্ক, ভ্যাট, সঞ্চয় অধিদপ্তর, বিসিএস (কর), একাডেমি, কাস্টমস একাডেমি এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের পৃথক পৃথক বুথ রয়েছে। এসব বুথ থেকে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা সংশ্লিষ্ট বিভাগ সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারছেন। করদাতাদের মেলা প্রাঙ্গণে আয়কর রিটার্ন, ই-টিআইএন আবেদন ফরম এবং চালান ফরম সরবরাহ করা হবে। করদাতাদের সুবিধার্থে মেলায় হেল্প ডেস্ক, তথ্য কেন্দ্র ও আয়কর অধিক্ষেত্র-সংক্রান্ত বুথ রয়েছে। এসব বুথের মাধ্যমে করদাতাদের আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ, চালান ও পে-অর্ডার প্রস্তুতসহ আয়কর আইনবিষয়ক প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। করদাতাদের সুবিধার্থে মেলায় রয়েছে ফটোকপির ব্যবস্থাও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App