×

জাতীয়

আসন বণ্টন জটিলতায় ২০ দল-ঐক্যফ্রন্ট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ০১:০৯ পিএম

আসন বণ্টন জটিলতায় ২০ দল-ঐক্যফ্রন্ট
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আসন বণ্টন জটিলতায় পড়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ২০ দলীয় জোটের শরিক এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের দাবি অনুযায়ী আসন দিতে হলে বিএনপি একটি আসনও পাবে না। উল্টো আরো আসন ধার করতে হবে। শরিকদের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। এই জটিলতা এড়াতে ঘোষিত তফসিল আরো এক মাস পেছানোর দাবি নিয়ে আজ ইসিতে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট। যাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আসন বণ্টন জটিলতার নিরসন করতে পারে। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির নিজেরই ৩০০ আসনে রয়েছে একাধিক প্রার্থী। এর বাইরে ২০ দলীয় জোট এখন ২৩ দলীয় জোটে রূপ নিয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে রয়েছে গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য। মোট ২৭ দলের মধ্যে বণ্টন করতে হবে ৩০০ আসন, যা জটিল সমীকরণ বলেই জোট দুটির সামনে হাজির হয়েছে। জোটটির প্রধান দল বিএনপির কাছে বিষয়টি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। নিজ দলের প্রার্থীদের সামাল দিতেই অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। এর ওপর নিজেদের সামর্থ্যরে বাইরে আসন দাবি করছে শরিক দলগুলো, যা বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। জোটের রাজনীতিতে বিএনপির জন্য এটা কঠিন এক পরীক্ষায় ফেলেছে। জানা গেছে, ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো মোট সংসদীয় আসনের চেয়েও বেশি আসন দাবি করেছে। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামী ৭০টি আসন দাবি করেছে। এ ছাড়া এলডিপি, বিজেপিসহ অন্য শরিক দলগুলো মিলে বিএনপির কাছে দাবি করেছে ১৫০টির বেশি আসন। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো বিএনপির কাছে দেড়শর মতো আসন দাবি করছে। এর মধ্যে গণফোরাম ৭৫টি, জেএসডি ৩৫টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ২০টি এবং নাগরিক ঐক্য ২০টি আসন চায়। ২০ দলীয় জোটের শরিক ও ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের চাহিদা যোগ করলে আসন দাঁড়ায় ৩৭০, যা মোট সংসদীয় আসনের চেয়েও ৭০টি বেশি। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির জন্য কোনো আসন বরাদ্দ তো থাকছেই না, উল্টো ৭০টি আসন কম পড়ছে। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তখনকার ৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে ৪১টি আসন ছেড়েছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে এবার আরো বেশি আসন ছাড়তে হবে তা তাদেরও সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্ত সেটা যে এমন হবে তা ভাবতেও পারছে না দলটির শীর্ষ নেতারা। অস্বস্তিকর এবং জটিল এ হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। এমন পরিস্থিতিতে সমাধানের পথ খোঁজতে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো সমাধান বের করতে পারেনি বিএনপি। তবে দলটির একজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, সহসাই সমাধানের রাস্তা বের হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, শরিক ২৬টি দলকে এবার বিএনপি ১০০ আসন পর্যন্ত ছাড় দেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে। আসন বণ্টনের ঘোষণা এলেই তা দৃশ্যমান হবে। ওই নেতার মতে, বিএনপি এবার মনোনয়নপত্র বিক্রি, সাক্ষাৎকার নেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও কাকে মনোনয়ন দিয়েছে সে ঘোষণা দেবে না। তা জানার জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ইসির প্রার্থী তালিকা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বিএনপি যাকে মনোনয়ন দেবে শুধু তার মনোনয়ন ফরমে দলীয়প্রধান বা তার নিযুক্ত দলীয় মহাসচিব স্বাক্ষর করবেন। দুই জোটের শরিক দলগুলো ইতোমধ্যেই নিজ দলের মনোনয়ন প্রার্থীদের কাছে ফরম বিক্রি সম্পন্ন করেছে। কোনো কোনো দল দলীয় নেতাদের সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করেছে। বাকিরাও দুয়েক দিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু করবে। তবে শরিক দলগুলো যত আসনই দাবি করুক, বরাদ্দ নির্ভর করবে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের ওপর। এ নিয়ে বিএনপি নেতারা আবারো কারাগারে যাবেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করার জন্য। তারেক রহমানও এ ইস্যুতে তার মতামত জানাবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App