নিরপেক্ষ তদন্ত করলে দুদকের দুর্নীতিও বেরিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়কর মেলা-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এনবিআরের আয়কর বিভাগের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির ১৩ উৎস এবং এসব ‍দুর্নীতি প্রতিরোধে ২৩টি সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন দুদক গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর জমা দিয়েছে। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দুদকের প্রতিবেদন এখনো পাইনি। এ ব্যাপারে আমি দুদকের সাথে দ্বিমত পোষণ করি। কারণ হলো- আপনি যদি একেবারে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করেন তাহলে ‍দুদকের দুর্নীতিও কত ধরনের সেটা বের করতে পারবেন। কাজেই সকলেরই দুর্নীতি আছে আমাদের দেশে, এই সংস্কৃতিটা পরিবর্তন করতে হবে। সেটি পরিবর্তনের জন্য আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দুদক যদি শুধু কর-কাস্টমস বিভাগকেই টার্গেট করে এবং এখানে তাদের অফিস স্থাপনের চেষ্টা করে, সেটা তো হবে না। দুদক যাই বলুক, যে রিপোর্টই দিক, ইনকাম ট্যাক্স আইন এবং কাস্টমস আইন অনুযায়ী যদি তাদের অ্যাক্টিভিটিজ আমাদের এখানে অ্যালাও করে তাহলেই শুধু করতে পারবে, আদারওয়াইজ নট।’ দুর্নীতি আগের চেয়ে কমেছে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে আরো সচেতনতা বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সরকারের সৎ কর্মকর্তাদের পুরস্কার এবং অসৎ কর্মকর্তাদের তিরস্কার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। দুদকের প্রতিবেদনে আয়কর মেলা আয়াজনে ‘বিলাসবহুল ব্যয়’ হয় বলে যে দাবি করা হয়েছে, সে বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারা দেখেন, কোনটা বিলাসবহুল? একজন চিন্তা করতে পারে, এটি বিলাসবহুল, আবার আরেকজন এটাকে প্রয়োজন মনে করে বলে সেটি বিলাসবহুল নয়।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচন করবেন, তাদের যদি ট্যাক্স ক্লিয়ার করা থাকে বা যাদের সার্টিফিকেট গ্রহণ করা দরকার তারা তো নিজ আগ্রহে করছেন। আমরা সবার পিছনে দৌঁড়াব না। নির্বাচন কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে, এখানে আমরা কিছু করতে যাচ্ছি না। নির্বাচনের কারণে রেভিনিউ কম-বেশি এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’ ভ্যাট ও শুল্কখেলাপী ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটা চলে যাক। তারপর নতুন সরকারের প্রথমদিক থেকেই এ ব্যাপারে একটা উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলায় দুদকের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে পরে এ মামলা থেকে খালাস পান।