×

শিক্ষা

জাবিতে সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের মতানৈক্য, একাংশের সভা বর্জন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ০১:০৪ পিএম

জাবিতে সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষকদের মতানৈক্য, একাংশের সভা বর্জন
প্রায় দেড় বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সিন্ডিকেট সভায় পক্ষ-বিপক্ষ অবস্থান নেয় আওয়ামী শিক্ষকদের দুটি গ্রুপ। উপাচার্য বিরোধীরা সভায় বাঁধা দিলেও, প্রক্টরিয়াল টিম সহ প্রশাসনের সহায়তায় নির্ধারিত সময়ের অাধা-ঘন্টা পর সভা শুরু হয়। এদিকে আওয়ামী শিক্ষকদের অন্য গ্রুপের সিন্ডিকেট সদস্যরা নানা অভিযোগ এনে সভা বর্জন করে। দেখা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গতকাল বুধবার বিকাল ৪ টায় সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সভাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই ক্যাম্পাস থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। শিক্ষকদের পাশাপাশি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও ছিল সরব। বিকাল থেকেই শিক্ষকদের দুই গ্রুপ অবস্থান নিতে থাকে প্রশাসনিক ভবনে। উপাচার্য বিরোধী তথা সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরপন্থী শিক্ষকরা কয়েকদফা দাবি নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের সভায় যেতে এক সদস্যকে বাঁধা দেয়। এসময় প্রক্টরিয়াল টিম সহ উপাচার্য পন্থি শিক্ষকদের সহায়তায় বাঁধাপ্রাপ্ত সদস্য মোতাহের হোসেন মোল্লা সভাকক্ষে প্রবেশ করে। এসময় শিক্ষকদের দুটি গ্রুপের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এদিকে সভা শুরু হলে সাবেক উপাচার্য শরীফপন্থী ৪ জন সিন্ডিকেট সদস্য নানা অভিযোগ এনে সভাকক্ষ ত্যাগ করে সিন্ডিকট সভা বর্জন করে। অভিযোগে বলেন, কোন শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়াই, উপাচার্যের আজ্ঞাবহ ৬ সদস্য নিয়ে সভা করছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজির বিহীন। উপস্থিত থাকা সত্তেও উপ- উপাচার্য আমির হোসেন সহ শরীফপন্থী ৪ সদস্য বাদেই সভা পরিচালনা করার অভিযোগ করেন তারা। সভা বর্জন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শরীফপন্থী শিক্ষকরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেন। এসময় সাবেক উপাচার্য শরীপপন্থী ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজে’র সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আজকে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি অনভিপ্রেত। আমরা দাবি নিয়ে উপাচার্যের সাথে দেখা করতে এসেছি।’ সম্মেলনে সিন্ডিকেট সদস্য ড. নাজমুল হাসান তালুদার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিমাসে নিয়মিত সিন্ডিকেট বৈঠক হওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তুু দীর্ঘ প্রায় ১ বছর ৩ মাস পর এ বৈঠক আহবান করে উপাচার্য তার অনুগত সিন্ডিকেট সদস্যদের দিয়ে বৈঠক শুরু করেন। এ সময় শরীফপন্থী শিক্ষক হোসনে আরা বলেন, একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ৬ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে। ৬ মাস পর সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অবৈধ হয়ে যায়। উপাচার্য আজকের বৈঠকে নিয়ম অমান্য করে ২০১৫ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে নিয়োগ দিচ্ছেন যা রীতিমতো অন্যায়। এছাড়াও প্রশাসন সিন্ডিকেট সদস্যদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট কক্ষের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে যে সভা করছেন তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে বলে দাবি শরীফপন্থী শিক্ষকদের। উল্লেখ্য, শরীফপন্থী শিক্ষকদের দাবি, মেয়াদউত্তীর্ণ সিন্ডিকেট সদস্যদের নির্বাচন সহ ডীন নির্বাচন না করে নতুনভাবে যেন কোন নিয়োগ দেয়া না হয়। কিন্তু সভায় নতুন নিয়োগের এজেন্ডা থাকায় সভায় বাঁধা দেন উপাচার্য বিরোধীরা। এসময় বিএনপি পন্থি শিক্ষকরা উপাচার্যের কিছু অসংগতি তুলে ধরে নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কথা সাংবাদিকদের জানান। এ বিষয়ে প্রক্টর সিকদার জুলকারনাইন বলেন, বিশ্বিবিদ্যালয়ের বৃহৎ স্বার্থে সিন্ডিকেট সভা জরুরী ছিল। আমরা চেয়েছি যাতে সুষ্ঠভাবে সভা সম্পন্ন হয়, কেননা এ সভায় অনেক বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ, আপগ্রেডেশন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমুলক অনেক এজেন্ডা রয়েছে। এদিকে সিন্ডকেট চলাকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবিতে প্রতিশীল ছাত্রজোট লিফলেট বিতড়নসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App