×

বিনোদন

নামের বান্ধব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:০০ পিএম

নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
নামের বান্ধব
একই নামের দুজন অভিনেত্রী একই আঙিনায় বিচরণ করলে কখনো কখনো বিপত্তি বাধে। নামের বান্ধব টেনে আনে যম, দর্শকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আবার রয়েছে সহাবস্থানের দৃষ্টান্তও। দুজন অভিনেত্রী দিব্যি হেসেখেলে শোবিজ দাপাচ্ছেন। মেলা খুঁজে নিল এমনই কয়েকজন অভিনেত্রীকে যারা একে অপরের নামের বান্ধব। তুলে ধরল সংঘর্ষের কিছু ঘটনাও। লিখেছেন মাহফুজুর রহমান
মৌসুমী ১৯৯৩ সালে সিনেমায় অভিষেকের পরপরই সারাদেশে লাখো ভক্তের জন্ম দেন মৌসুমী। ১৮ কোটি মানুষের দেশে তার পরিচিতি বিপুল ও বিশাল। অভিনয় আঙিনায় একই নামের অভিনেত্রী এলে স্বাভাবিকভাবেই তাকে উপাধি নামের সঙ্গে বহন করতে হবে। নতুবা দর্শকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। সে কারণেই কিনা লাক্স সুন্দরী মৌসুমী শুরু থেকেই ‘হামিদ’ উপাধিটি নামের সঙ্গে ব্যবহার করেছেন। এক সময় তিনি সিনেমায় নামার চেষ্টা করেন। তখন অনিমেষ আইচ তার অসমাপ্ত ছবিতে মৌসুমী হামিদের নাম পাল্টে দিয়েছিলেন ‘মৌমী’। নামটি অবশ্য টেকেনি। মৌসুমী হামিদের সময়েই দেখা দেন মৌসুমী নাগ। উপাধি আলাদা হওয়ায় দর্শকরা খুব বেশি জটিলতায় পড়েননি। মিম নামের মিলের কারণে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছেন বিদ্যা সিনহা মিম ও সাবরিন সাকা মিম। শোষোক্ত মিমকে দর্শকরা ‘ছোট মিম’ হিসেবেই বেশি চেনেন। এর কারণ শিশুশিল্পী হিসেবে একসময় তার জনপ্রিয়তা। শিশুশিল্পী থেকে প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেত্রী হলেও শিশুকালের জনপ্রিয়তাকে আর কখনো ছাড়াতে পারেননি মিম। পরবর্তী সময়ে তিনি নাটকে আর ব্যস্ততা ধরে রাখতে পারেননি। নাম লিখিয়েছেন সংবাদ পাঠিকা হিসেবে। এদিকে বিদ্যা সিনহা মিম গত এক দশক ধরে আলোচিত অভিনেত্রীর খাতায় নিজের নামটি ধরে রেখেছেন। বছর তিনেক আগে এই মিমকে ক্যারিয়ারের শুরুর মতো আবারো ‘নতুন মিম’র মুখোমুখি হতে হয়। নাদিয়া মিম নামে এক অভিনেত্রীর জন্ম হয় লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা থেকে। অনেক মিমের ভিড়ে এই তিন মিমই এখন দর্শকদের কাছে সর্বাধিক পরিচিত। ফারিয়া পুরো নাম উচ্চারণ করেই চেনাতে হয় নুসরাত ফারিয়া এবং শবনম ফারিয়াকে। কারণ দুজনে একই অঙ্গনে একসঙ্গে অভিনয় করছেন। টেলিভিশনে শবনম ফারিয়ার যতখানি পরিচিতি, তারচেয়ে সিনেমায় কোনো অংশে পরিচিতি কম নেই নুসরাত ফারিয়ার। এই ফারিয়াকে নিয়ে দর্শকদের মধ্যে বিভ্রান্তি বেশি হলেও তৃতীয় আরো এক ফারিয়া রয়েছেন প্রবাসে। যিনি মাঝেমধ্যে দেশে এলে আলোচনা হয়। তিনি লাক্স সুন্দরী ফারিয়া শাহরিন। প্রথমোক্ত দুই ফারিয়ার মতো তিনি ব্যস্ত হতে পারেননি। তিশা নুসরাত ইমরোজ তিশা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি টিভি নাটক শাসন করছেন। ব্যস্ততার দৌড়ে নতুনদেরও তিশা হার মানাচ্ছেন। তার সঙ্গে নাম মিলে নব্বই দশকের টিভি অভিনেত্রী নুসরাত ইয়াসমিন টিসার। কিন্তু নামের সামান্য অমিলের কারণে দুজনের সংঘর্ষের সুযোগ ছিল না। এ ছাড়া তিশার আগমনের আগেই অভিনয় ছেড়েছিলেন টিসা। মিডিয়ায় অনেক বছর কাটানোর পর তিশা দেখা পান তার নামের আরেকজনের। তিনি তানজিন তিশা। নতুন প্রজন্মের পছন্দের অভিনেত্রী। ব্যস্ততায় তিনিও তিশার মতোই দুর্বার গতিতে এগোচ্ছেন। কিন্তু জনপ্রিয়তায় এখনো নুসরাত তিশার কাছে পৌঁছাতে পারেননি তানজিন তিশা। পরী পরীমণি এই সময়ে সুপরিচিত চিত্রনায়িকা। তার তুলনায় প্রিয়ন্তী পরীর পরিচিতি কম। কিন্তু একই সময়ে সিনেমায় আসেন দুজন এবং নাম নিয়ে পরস্পর দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়েন। দুজনের কারোরই প্রকৃত নাম ‘পরী’ নয়। দুজনেই সিনেমায় এসে এই নাম ধারণ করেছেন। আর এ নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রণক্ষেত্র বাধিয়েছেন দুই নায়িকা। কে আসল পরী আর কে নকল পরীÑ এ নিয়ে তর্ক করতে করতে দুজনেই সীমা ছাড়ান। শেষ পর্যন্ত সেই দ্ব›েদ্বর সুরাহা না হলেও হালে প্রিয়ন্তী পরীর নাম খুব একটা শোনা যায় না। মুক্তি ‘চাঁদের আলো’ খ্যাত অভিনেত্রী মুক্তি। অভিনেত্রী আনোয়ারার মেয়ে হিসেবে আরো বেশি পরিচিত। কিন্তু রুমানা ইসলাম মুক্তি যখন অভিনয় ছেড়ে দূরে, তখনই দৃশ্যপটে হাজির ‘দিলখুশ’ খ্যাত মুক্তি। ‘রঙের মানুষ’ ধারাবাহিকে দিলখুশ চরিত্রটি করে পরিচিতি পান আয়েশা সালমা মুক্তি। পরে তিনি পূর্বসূরির পথ ধরে সিনেমায়ও আসেন। কিন্তু তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেননি। অন্যদিকে ‘চাঁদের আলো’ সুপারহিট হলেও মুক্তি আর সিনেমায় অভিনয় সেভাবে করেননি। পিয়া মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া বিপাশার নাম প্রায়ই আসে নানা কেলেঙ্কারিতে। আর তখন নানা জায়গা থেকে ফোন পেতে থাকেন র‌্যাম্প মডেল ও অভিনেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া। গত বছর এক স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে যান বিপাশা। তার জন্য ভুগতে হয় জান্নাতুলকে। দুজনে একই আঙিনায় কাজ করায় এই বিপত্তি। চৈতি চৈতি নামে শোবিজে একাধিক শিল্পী রয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রথমেই আসবে ২০০৮ সালের লাক্স সুপারস্টার ইশরাত জাহান চৈতির নাম। তিনি সিনেমায়ও নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই চৈতিকে বেশ হেনস্তা হতে হয়েছিল যখন উপস্থাপিকা চৈতির একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছিল। সেই ক্লিপের জন্য খ্যাতি হারিয়েছেন ‘শুভেচ্ছা’ অনুষ্ঠানের সহ-উপস্থাপিকা চৈতি। এই চৈতির কৃতকর্মের জন্য প্রয়াত নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের নাটকের নিয়মিত অভিনেত্রী চৈতিকে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়েছিল কিনা তা আমাদের জানা নেই। তারিন তাজরিন জাহান তারিনের ক্যারিয়ার দীর্ঘদিনের। এই সময়ে তিনি পেয়েছেন খ্যাতি-বিত্ত-সম্মানসহ যা যা একজন অভিনয়শিল্পীর প্রাপ্য। শিশুশিল্পী অবস্থায়ই তিনি জনপ্রিয়তার গগনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এখনো তার সাফল্যকে স্পর্শ করার মতো অভিনেত্রী দেশে হাতেগোনা। এই বিখ্যাত পারফর্মারের নামেও কিছুদিন আগে একজন অভিনেত্রী আবিভর্‚ত হয়েছেন। তার নাম তারিন রহমান। তবে তার দর্শক পরিচিতি খুব বেশি নয়। তানহা এটি সাম্প্রতিক। দুজনের নামই তানহা। দুজনেই উঠতি চিত্রনায়িকা। একজনের পুরো নাম তানহা তাসনিয়া। আরেকজনের পুরো নাম তানহা মৌমাছি। প্রায় একই সময়ে এই দুই তানহা সিনেমায় নামেন। দুজনকে আলাদা করতে গেলে উপাধিসহ নাম বলতে হয়। তানিয়া নব্বই দশকের গোড়ার দিকে মডেলিংয়ে যুক্ত হোন তানিয়া আহমেদ। পরে অভিনয়ে এসেও তিনি কৃতিত্বের পরিচয় দেন। তানিয়া আহমেদের শোবিজে বহু বছর পথচলার পর একই নামের আরেকজন অভিনেত্রী আসেন। তিনি তানিয়া হোসেন। অভিনয় করলেও তার দর্শক পরিচিতি বেশি উপস্থাপক হিসেবে। তনিমা নব্বই দশকের শেষের দিকে কাছাকাছি সময়ে বিটিভিতে আবিভর্‚ত হোন শর্মিলী আহমেদের মেয়ে তনিমা আহমেদ এবং ফাল্গুনী হামিদের মেয়ে তনিমা হামিদ। ‘কোন তনিমা?’ এই প্রশ্নটি প্রায় দর্শকদের ভেতরে লেনদেন হতো। একই নামের দুজন অভিনেত্রী থাকায় উপাধি ছাড়া প্রকৃত মানুষটিকে চেনা মুশকিল হয়ে যেত। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তনিমা হামিদের মা ফাল্গুনী হামিদও মেয়ের মতো নাম মিলে যাওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। আশির দশকের ফাল্গুনী হামিদের মতোই ব্যস্ত অভিনেত্রী ছিলেন ফাল্গুনী আহমেদ। উপাধি ছাড়া নাম বললেই প্রশ্ন উঠতÑ ‘কোন ফাল্গুনী?’ তিন্নি শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি দেশের খ্যাতনামা মডেল অভিনেত্রী। খুব অল্প সময়ে তিনি তরুণদের মধ্যে ক্রেজ তৈরি করতে পেরেছিলেন। এক নামেই তাকে চেনেন দর্শকরা। তিন্নি প্রিয়তা কুড়ানোর আগে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিলেন প্রয়াত মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি। ২০০২ সালে খুন হোন সুন্দরী এই মডেল। শ্রাবস্তী তিন্নি শোবিজে এলে প্রয়াত তিন্নির সঙ্গে তার গ্ল্যামারের তুলনা টানা হয় বহুবার। নদী একটি প্রতারণার ঘটনায় নাম আসে চিত্রনায়িকা নদীর। পত্রিকায় ভুলবশত ছবি ছাপা হয় টিভি অভিনেত্রী নাদিয়া নদীর। নামের বান্ধবকে এভাবেই যমে টানে। গেল দশকের মাঝের দিকে নদী আসেন সিনেমায়। কিছু ছবিতে অভিনয় করে বিদায় নেন। কিন্তু এই নদীর খোলামেলা অভিনয়ের পরিচিতির সঙ্গে সংঘর্ষ বাধছে নাদিয়া নদীর। মৌ বাংলাদেশের বিখ্যাত মডেল সাদিয়া ইসলাম মৌ। তাকে দেশজুড়ে একনামে চেনেন সবাই। কিন্তু এই নামে আরো কয়েকজন মডেল কিংবা অভিনেত্রীর দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু তাদের কেউই গ্রহণযোগ্য যেতে পারেননি বলে মৌকে কখনো নামের বিভ্রাটে পড়তে হয়নি। কিন্তু সুযোগ ছিল যথেষ্ট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App