×

মুক্তচিন্তা

সংলাপ অব্যাহত থাকুক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:০৮ পিএম

এ সংলাপে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে, দুটি পক্ষের অনমনীয় অবস্থানের বরফ গলেছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। এটা দেশ এবং গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক। এটা ঠিক যে একদিনে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এর জন্য দীর্ঘ সময়ের যেমন প্রয়োজন, তেমনি একাধিকবার বৈঠকেরও প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমরা চাইব, এ সংলাপের পথ যেন বন্ধ না হয়।

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপ ইতিবাচক। রাজনীতিতে হঠাৎ নতুন মাত্রা যোগ করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার গণভবনে আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপের পর উভয়পক্ষের নেতাদের বক্তব্য এবং বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যাদি নিয়ে চলছে ব্যাপক পর্যালোচনা। এমন আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে রাজনীতি আরো গঠনমূলক জায়গায় যাবে বলে মনে করি।

গণভবনে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতামূলক কোনো ঐক্য প্রতিষ্ঠিত না হলেও কিছু ইতিবাচক বিষয় লক্ষ করা গেছে। একটানা সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা সংলাপ শেষে আলোচনা কেমন হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা এক কথায় তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ভালো। সংলাপের ইতিবাচক দিক হলো যে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মামলা-হামলার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

আশা করা যায় নির্বাচন পর্যন্ত এসব কমে যাবে। রাজবন্দিরা হয়তো মুক্তি পাবেন। নির্বাচনী মাঠ সমান করার ক্ষেত্রে এটা একটা অগ্রগতি। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার হতে পারে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দাবির ব্যাপারেও ১৪ দলের পক্ষ থেকে সম্মতি পাওয়া গেছে। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা হলে তার তালিকা দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

সংলাপ অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেনের সূচনা বক্তব্যের পর বিএনপির মহাসচিব সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এই সাত দফা দাবির মধ্যে ছিল দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিও। খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দেয়া ইত্যাদি বিষয় এখনো অমীমাংসিত থেকে গেছে। সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি আদালতের বিষয়, সরকারের কিছু করার নেই।

এ সংলাপে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে, দুটি পক্ষের অনমনীয় অবস্থানের বরফ গলেছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। কোনো তর্ক-বিতর্ক হয়নি। এটা দেশ এবং গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক।

অতীতের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছিল, সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ছিল আস্থা অর্জন। এ সংলাপ আমাদের সে দিকে হয়তো নিয়ে যাবে। এটা ঠিক যে একদিনে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এর জন্য দীর্ঘ সময়ের যেমন প্রয়োজন, তেমনি একাধিকবার বৈঠকেরও প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমরা চাইব, এ সংলাপের পথ যেন বন্ধ না হয়। তফসিলের পরও সংলাপ হতে পারে। তফসিল সংলাপের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। উভয়পক্ষ আরো আলোচনায় বসলে সমাধানের পথ বের হবে।

শুক্রবার যুক্তফ্রন্ট সংলাপে বসেছে। সামনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও সংলাপে বসবে। সবার অংশগ্রহণে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ এই সংলাপের মধ্য দিয়েই বেরিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি। যা আমাদের গণতন্ত্রকে আরো সুসংহত করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App