×

মুক্তচিন্তা

ডিজিটাল অপরাধ ও তার প্রতিকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৬ পিএম

ডিজিটাল অপরাধ ও তার প্রতিকার

॥ কিস্তি-ছয় ॥

ডিজিটাল যুদ্ধ : সাধারণভাবে ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জগতে ডিজিটাল অপরাধের শঙ্কাই দিন দিন বাড়ছে। তবে এর বাইরে এখন যুদ্ধের ডিজিটাল রূপান্তরের বিষয়টি ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রচলিত যুদ্ধ ডিজিটাল যুদ্ধে রূপ নেবে সে বিষয়ে এখন আর কোনো সন্দেহ নেই। সমরাস্ত্রের নিয়ন্ত্রণে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক পুরনো।

এখন বরং ভাবা হচ্ছে যে, ডিজিটাল সৈনিকদের নিয়ে ডিজিটাল যুদ্ধের মহড়া কবে হবে বা যুদ্ধটাও আমরা কবে দেখব। মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া থেকে ডিজিটাল যুদ্ধ বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরছি। ওয়াশিংটন পোস্টের উদ্ধৃতি অনুসারে ডিজিটাল যুদ্ধের সংজ্ঞাটা এ রকম : Offensive and defensive cyber (or digital) warfare, including the fields of computer network attack, computer network exploitation and computer network defense; as well as traditional electronic warfare (e.g. jamming) intended to deny an adversary use of their electronically dependent equipment through ‘non-kinetic’ means — that is, by fighting with electrons rather than explosives.

ওয়াশিংটন পোস্ট ২০১১ সালে এই সংজ্ঞা দিয়েছিল। আমি সেই সংজ্ঞায় এখন আর সীমিত থাকতে পারছি না। বরং আমাকে বলতে হচ্ছে যে রোবট সৈন্যসহ যুদ্ধাস্ত্রের ডিজিটাল রূপান্তর এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারে যে যুদ্ধ করা হয় সেই যুদ্ধ ডিজিটাল যুদ্ধ। আমি নিজে বিশ্বাস করি দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য-শিল্প-কলকারখানা তথা জীবন ধারা রাষ্ট্রযন্ত্রসহ সব ক্ষেত্রে যে রূপান্তর ঘটাচ্ছে তার অনিবার্য রূপ হচ্ছে ডিজিটাল যুদ্ধ। যুদ্ধাস্ত্র যাই হোকÑ মারণাস্ত্র বা সৈন্য যাই হোক যুদ্ধের প্রাণকেন্দ্র সম্পূর্ণ ডিজিটাল হতে বাধ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সংকেত ব্যবহার করে বার্তা পাঠানোর মধ্য দিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সূচনা এখন পরিপূর্ণতা পাওয়ার পথে। এটি এখন কেবল সময়ের প্রশ্ন যে কবে যুদ্ধ বলতেই ডিজিটাল যুদ্ধ বোঝাবে।

উইকিপিডিয়ার মতে, As cyber attacks become an increasingly common threat to the security of civilians and highly classified governmental information, a need to combat the threat by means of Computer network operations and Computer Network Defense have arisen. It is important to note however that protection is only one component of the Military-digital complex and that the use of Information Warfare within the complex can be used to achieve military operations and an upper-hand in economic exploits. .........The MDC is seen as a progression as nations move globally towards cyberwarfare, indeed the cyber war is increasingly being acknowledged as the ‘fifth domain of warfare’ The MDC is a necessity for governmental bodies in order to maintain high standards within their cyber army, for example the USA boasts over ‘143 private companies involved in top secret cyber operations programs’’.

২০১৮ সালে এসে আমরা জানলাম যে, চীন ডিজিটাল যুদ্ধ করার জন্য এরই মাঝে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ হ্যাকারের একটি বাহিনী তৈরি করেছে। এরই মাঝে ১৩ সালের জুনে চীন ডিজিটাল যুদ্ধের মহড়াও দিয়েছে।

বাংলাদেশ ও ডিজিটাল সংস্কৃতি : বাংলাদেশের ডিজিটাল জীবনধারা, এর সূচনা, বিকাশ ও প্রসারের পাশাপাশি ডিজিটাল অপরাধের ধরন ধারণ নিয়ে এর আগে বেশ কিছুটা আলোচনা হয়েছে। এতে আমাদের নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ সম্পর্কে ছোট একটি ধারণা দেয়া যেতে পারে।

খুব প্রাসঙ্গিক কারণেই ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এখন ডিজিটাল অপরাধের প্রসার ঘটছে। বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্ম এখন ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারের পাশাপাশি এ ধরনের অপরাধের সঙ্গেও ব্যাপকভাবে যুক্ত হচ্ছে। এদের কেউ অপরাধ করছে আবার কেউ সেই অপরাধের শিকারে পরিণত হচ্ছে।

বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী এখন নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণী, যুবারা। এদের সিংহভাগ ছাত্রছাত্রী। এক সময়ে তারা কেবল মোবাইল ফোন ব্যবহার করত। মোবাইলেও এখন আর কেবল কথা বলা নয়। ইন্টারনেটসহ বিভন্ন ধরনের কাজে এখন ব্যাপকভাবে মোবাইল ব্যবহৃত হয়। মোবাইল ফোনের ক্যামেরা প্রযুক্তিও প্রচলিত ফটোগ্রাফির জগৎকে ব্যাপকভাবে ছাড়িয়ে গেছে। নানা ধরনের অ্যাপস এখন মোবাইলকে কম্পিউটারে পরিণত করেছে।

অন্যদিকে এখন তাদের কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েছে। তারা এখন কম্পিউটার ও মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে। এটি এখন আর ঢাকা শহরেও সীমিত নেই। এক সময়ে যদি ঢাকার বাইরে শ তিনেক ছাত্রছাত্রীর সমাবেশে জানতে চাওয়া হতো যে, তোমরা কয়জনে কম্পিউটার ব্যবহার করো, তখন দুয়েকটি হাত উঠত। কিন্তু ২০১২ সালে আমি ময়মনসিংহের স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের কাছে যখন এই প্রশ্ন করলাম তখন তারা শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ কম্পিউটার ব্যবহার করছে বলে জানাল।

২০১৩ সালে নেত্রকোনাতেও দেখলাম যে, ব্যবহারকারীর সংখ্যা কেবলই বাড়ছে। ১৮ সালে জেলা শহরেও শতকরা ৮০-৯০ ভাগ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গ্রামেও শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহারকারী আছে।

তারা জানাল, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম্পিউটার ব্যবহারকারীর চাইতে বেশি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রায় সবাই ফেসবুক ব্যবহার করে। যদি আমরা আরেকটি ডিজিটাল যন্ত্র মোবাইল ফোনের হিসাব করি তবে আমাদের জনসংখ্যার প্রায় কাছাকাছি (১৫ কোটি) মোবাইল কানেকশন এখন দেশে রয়েছে। যদিও ব্যবহারকারীর সংখ্যা হয়তো কানেকশনের চাইতে কম। তবুও এত বেশি কানেকশন কম কথা নয়।

অন্যদিকে ৯ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে দেশে। ৩ কোটির ওপর ফেসবুক ব্যবহারকারী আছে। ৯০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইদথ ব্যবহৃত হয় ১৮ সালে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এসব ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে অপরাধের ডিজিটাল মাত্রাও ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ জন্যই বাংলাদেশে ডিজিটাল মাধ্যমের অপরাধসহ অন্যান্য ভিন্ন ধরনের অপরাধ এখন সবচেয়ে বড় আলোচিত বিষয়।

মোবাইল ও অপসংস্কৃতি : যে বিষয়টি আমাদের ভাবিত করছে সেটি হলো আমাদের ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যবহারকারীরা কি এই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করছেন, নাকি এর সাইড এফেক্ট বা কুপ্রভাব অনেক বেশি। আমরা কি ডিজিটাল যুগের সাংস্কৃতিক সংকটেই রয়ে গেছি?

মোবাইলের যাত্রাটি যথেষ্ট আগে ও ব্যাপকভাবে হওয়ার ফলে আমরা মোবাইল ব্যবহারের সাইড এফেক্ট সম্পর্কে খবর পাই আগে। মোবাইলে মিস কল প্রদান, বিরক্তিকর কল প্রদান, মেয়েদের বিরক্ত করা, মোবাইলে পর্নো ছবি তোলা, ব্ল্যাকমেইল করা ও প্রকাশ করা ইত্যাদি ঘটনা অহরহ ঘটছে।

নানা ধরনের উৎপাতের খবর প্রকাশের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দিক থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করার উপায় জেনে যাওয়ার পর তুলনামূলকভাবে এখন মোবাইলের বাজে ব্যবহার কিছুটা কমেছে। তবে নিবন্ধনহীনভাবে মোবাইলের সিম বিক্রি অব্যাহত থাকায় ভয়টা থেকেই যাচ্ছে। আইনের দিকে সতর্কতা ও আইনপ্রয়োগকারীদের কর্মতৎপরতা এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর হয়েছে।

এ ছাড়াও মোবাইলের কল ব্লক করার সুবিধা ও সেল থেকে কলারকে শনাক্ত করার সুবিধা পাওয়ার ফলে কেউ মোবাইলে কোনো অপকর্ম করে খুব সহজে পার পেতে পারে না। কলের রেকর্ড রাখার পাশাপাশি কললিস্ট সংগ্রহ করার সুবিধাও এ ক্ষেত্রে অপরাধী শনাক্ত করতে সহায়ক হয়েছে। মোবাইলের বিক্রির সময় যদি নিবন্ধনের বিষয়টি আরেকটু সতর্ক করা যেত তবে কাজটি আরো সহজ হতো। আইনের প্রয়োগ আরেকটু বাড়লে মোবাইল নিয়ে দুশ্চিন্তা কমে যেতে পারে।

তবে পরিচয়হীন ভিওআইপি কল বা ইন্টারনেট কলের আপদ নতুন করে দেখা দিয়েছে। এটি বস্তুত একটি সাংস্কৃতিক মানের প্রশ্নও। সভ্যতার নগরায়ন বা আধুনিকায়নের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতনতা না গড়ে ওঠায় আমাদের রাষ্ট্রে ও সমাজে সঠিকভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। অনেক ক্ষেত্রেই এর অপসংস্কৃতির দিকটা বিকশিত হয়েছে।

ইন্টারনেট ও অপসংস্কৃতি : ইন্টারনেটের খারাপ প্রয়োগ দিনে দিনে বাড়ছে। আমি এখনকার অবস্থাটিকে ভয়ানক ও প্রলয়ঙ্করী বলে মনে করি। এটি দিনে দিনে মহামারীতে পরিণত হচ্ছে। সরকারের উচ্চ মহল হোক আর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা হোক সবার জন্য ইন্টারনেট একটি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষ করে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে প্রতারণা করা, অশ্লীলতা ছড়ানো, মানহানি করা, মিথ্যা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাশাপাশি, সাম্প্রদায়িকতার প্রসার, জঙ্গিবাদের পক্ষে ব্যবহার ও রাজনৈতিক অপপ্রচারের জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার অতীতের সব সীমা অতিক্রম করেছে। হ্যাকিংয়ের মতো ক্ষতিকর কাজও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। একটি সমাজে প্রযুক্তি প্রবেশের সময় নানা ধরনের উৎপাত যেমনি করে মানুষকে শঙ্কিত করে এখনকার ইন্টারনেট সম্প্রসারণের বিষয়টা তেমন একটি অবস্থার সৃষ্টি করছে। ইন্টারনেট মাধ্যমটি সারা দুনিয়াতেই মুক্তমাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। পারতপক্ষে কোনো দেশ একে শৃঙ্খলিত করতে চায় না। পশ্চিমা দুনিয়ায় বা তথাকথিত মুক্ত বিশ্বে ইন্টারনেটকে মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে বিশ্বজুড়ে নাগরিকদের স্বাধীনতা বেড়েছে ব্যাপকভাবে।

আমরা লক্ষ্য করব, কোনো একটি খবর প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই খবরটির ওপর মন্তব্য করার সুযোগকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা কাজে লাগান। সাধারণ নাগরিকরা সংবাদ তৈরিও করেন। কোনো একটি ওয়েবসাইটে কোনো তথ্য বা মন্তব্য থাকলে সেটির বিষয়েও মন্তব্য প্রদান করা যায়। এর ফলে যে কোনো বিষয়ের ওপর সাধারণ মানুষ কি ভাবে এবং তাদের কি প্রতিক্রিয়া সেটি খুব সহজেই গোচরীভূত হয়। ব্লগ লেখার স্বাধীনতা সেই সুযোগকে আরো সম্প্রসারিত করেছে। এক সময়ে আমরা কেবল পত্র-পত্রিকাতেই মতামত পেতাম। এখন ব্লগে যে কেউ তার নিজের মত প্রকাশ করতে পারছে।

বলা যেতে পারে, মানবজাতি এর আগে আর কখনো এত স্বাধীন ছিল না। বাংলাদেশের মতো অনুন্নত ও রাজনৈতিকভাবে অস্থির ও অসহনশীল দেশেও এই অবস্থাটি অব্যাহত আছে। মাঝখানে দুবার এই সরকার ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে এরপর সম্ভবত সরকারের নীতি নির্ধারকরা এটি অনুভব করেছেন যে, কোনো কিছু বন্ধ করে দিয়ে তার সমাধান করা যাবে না। বরং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ব্যাহত না করলে যেমন করে খারাপ মতটি প্রকাশিত হবে তেমনি খারাপের বিপরীতে ভালো মতটিও প্রকাশিত হবে। এক সময়ে সত্যই জয়ী হবে; এটিই স্বাভাবিক।

কিন্তু এত চমৎকার একটি সুযোগ ও প্রকৃত সম্ভাবনাময় একটি ব্যবস্থাকে যখন কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অপব্যবহার করে তখন তাকে নিয়ন্ত্রণ বা সীমিত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। মাত্র কিছুদিন আগে ভারতের উচ্চ আদালত সেই দেশে অনেক ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকের পেজ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেছে। সেসব সাইটের মত প্রকাশের বিষয়টির চাইতেও জরুরি ছিল পর্নোগ্রাফি। ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি যে কতটা ভয়ঙ্কর সেটি সবচেয়ে বেশি অনুভব করেন অভিভাবকরা। ছেলেমেয়েদের ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে দিতেও মানা করতে পারেন না, আবার ইন্টারনেটে থাকা বাজে উপাত্ত সন্তানের মানসিকতাকে কতটা বিপজ্জনকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে সেটি নিয়েও নিশ্চিতনা হয়ে পারেন না। এই সংকটে পাকিস্তানও পড়েছে। বস্তুত বিশ্বের প্রায় সব দেশই এই সংকটের বাইরে নয়।

বিগত দুই যুগ ধরে যখনই ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের ইন্টারনেট ব্যবহারে তাদের সন্তানদের উৎসাহিত করা ও সুযোগ দেয়ার কথা বলেছি তখনই এই আশঙ্কার কথা প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থা সত্যি সত্যি ভয়ঙ্কর। এখানে কেবল যে ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফির জন্য ব্যবহার করা হয় তা নয়, মোবাইল ফোন এই দেশের পর্নোগ্রাফির একটি বড় হাতিয়ার। শুধু আমাদের কথাই কেন বলি। ভারতের দুই মন্ত্রী সেদিন পদত্যাগ করেছেন সংসদে বসে পর্নো ছবি দেখার জন্য। আমাদের দেশে মেয়েদের ছবি মোবাইলে তুলে সেটি মোবাইলেই প্রচার করার একটি বাজে প্রবণতা গড়ে উঠেছে। এর বাইরে আছে ইন্টারনেটে মোবাইলে তোলা ছবির প্রচার। নামি-দামি লোকজন ছাড়াও সাধারণ ছেলে মেয়েদের নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে অহরহ ছাড়া হয়। কখনো ব্ল্যাকমেইল করার জন্যই এসব মাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়। আমরা পত্র-পত্রিকায় এমন অসংখ্য খবর পড়েছি।

উন্নত দেশগুলোতে পর্নোগ্রাফি তেমন কোনো বড় ঘটনা না হলেও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান বা এমন উন্নয়নমুখী দেশগুলোর জন্য পর্নোগ্রাফির অত্যাচার প্রকটভাবে সামাজিক সংকট তৈরি করছে। পশ্চিমা দেশের সমাজটি খোলামেলা বলে তারা ইন্টারনেটে কি আছে তাতে তেমন মাথা ঘামায় না। কিন্তু আমরা কোনোভাবেই এসব বিষয়ে নীরব থাকতে পারি না। বস্তুত ইন্টারনেটের স্বাধীনতার জন্য আমাদের সাংস্কৃতিক মান উন্নত করার বিষয়টি অনেক গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে। অন্যথায় স্বাধীনতার এই দুয়ারটি সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত হয়ে যেতে পারে।

মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App