×

আন্তর্জাতিক

আসামে বাঙালির মনোবল ভেঙে দিতেই হামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২৭ পিএম

আসামে বাঙালির মনোবল ভেঙে দিতেই হামলা
ভারতের আসামে পাঁচ বাংলাভাষীকে গুলি করে হত্যার পর থেকে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে রাজ্যের বাঙালিরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্যে বাঙালির মনোবল ভেঙে দিতেই এ হামলা চালানো হয়। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাকে (ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম) সন্দেহ করা হচ্ছে। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী এবং নাগরিকপঞ্জিবিরোধী বাঙালিদের হত্যার হুমকি উলফা আগেই দিয়েছিল। পুলিশের ধারণা, হামলাকারী দলটি পরেশ বড়–য়ার নেতৃত্বাধীন উলফার স্বাধীনতাকামী অংশের সদস্য। তবে ইতোমধ্যেই বিবৃতি দিয়ে এ দায় অস্বীকার করেছে উলফা। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকা আসামের বাংলাভাষীরা জানায়, এ ঘটনা তাদের রক্তে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছে। আমরা থাকি শিলচরে। এখান থেকে তিনসুকিয়া প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু এত দূরের ঘটনাও নাড়িয়ে দিয়েছে আসামের সব বাঙালিকে। বাঙালি অধ্যুষিত অন্যান্য এলাকাতেও এ ধরনের হামলার আশঙ্কা করছেন বাঙালিরা। এ বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় আনন্দবাজার পত্রিকায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান, তিনসুকিয়ার হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাঙালিদের মনোবল ভেঙে দিতে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অপচেষ্টা। এর সূত্রপাত সম্ভবত ১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট আসাম চুক্তির পর থেকে। ওই চুক্তির পর ১৯৫৬ সালের সিটিজেনশিপ অ্যাক্টে নতুন করে ৬-এ ধারা যুক্ত হয়। ওই ধারায় বলা হয়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যারা আসামে এসেছেন তাদের আলাদা করে চিহ্নিত করা হবে। আর এর ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে যান, বিশেষত, নি¤œআয়ের বাঙালিরা। এরপর ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় জাতীয় নাগরিকপঞ্জি। তার সঙ্গে আবার যোগ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬। কিন্তু আসামের বহু বাঙালি সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন গণসংগঠন নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই আন্দোলন ও প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। আসামের ঘোষিত বিদেশি এবং বহু সন্দেহভাজন ভিনদেশিদের রাখা হয়েছে উদ্বাস্তু শিবিরে। সেখানে তাদের ওপর অমানবিক আচরণ এবং নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করে একটি গোষ্ঠী। ওই মামলায় ৩১ অক্টোবর সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন আদালত। এর আগে ৩০ অক্টোবর কোচবিহারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, আসাম থেকে বিতাড়িত হলে তাদের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় দেয়া হবে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আসামে বাঙালিদের কয়েকটি সংগঠন তিনসুকিয়া জেলায় শুক্রবার ১২ ঘণ্টা অবরোধের ডাক দেয়। রাজ্যের বাইরে থাকা আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এক টুইটে হত্যাকাণ্ডের পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে রাজ্যের সর্বত্র বিক্ষোভ মিছিল করে তার দল তৃণমূল কংগ্রেস।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App