×

জাতীয়

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে বিক্ষোভ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৫৩ পিএম

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে বিক্ষোভ

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশ থেকে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির নানা যুক্তি তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা।

এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অভিজ্ঞতার আলোকে অবসরের বয়স ৫৯ বছর এবং প্রতিবন্ধী, আদিবাসী, নারী, জেলাসহ সকল কোটার গ্রহণযোগ্য পুনির্বিন্যাসের দাবি জানানো হয়েছে এ সমাবেশ থেকে।

ছাত্র পরিষদের সভাপতি মো. আল আমিন রাজু বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার ন্যূনতম বয়স এখন ছয় বছর। ফলে কোনো শিক্ষার্থী ১৬ বছর বয়স হওয়ার আগে এসএসসি পাস করতে পারবে না। তাছাড়া স্নাতক ও সম্মান শ্রেণির লেখাপড়ার সময় এক বছর করে বাড়িয়ে যথাক্রমে তিন বছর ও চার বছর করা হয়েছে। চিকিৎসা পেশায় প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করা হয়েছিল, কারণ তাদের আগে থেকে চার বছরের স্নাতক কোর্সে পড়তে হচ্ছে। অন্যদের স্নাতক ও সম্মান কোর্সের মেয়াদ এক বছর করে বাড়ানো হলেও চাকরিতে প্রবেশের সময় বাড়ানো হয়নি। আল আমিন রাজু বলেন, এসএসসি, এইচএসসি এবং অনার্স বা ডিগ্রী এবং মাস্টার্সে ফলাফল বের হওয়ার মধ্যবর্তী দুই বছর সময় নষ্ট হয়। প্রচলিত নিয়মে ২৩ বছরে পড়াশুনা শেষ করার কথা থাকলেও বাস্তবে ২৭ থেকে ২৮ বছরের আগে কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন শেষ হয় না।

তাছাড়া সেশনজট, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পিএসসির যথাসময়ে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আমিরুল ইসলাম সেলিম বলেন, শিক্ষিত তরুণদের জাতির জন্য অভিশাপ নয় আশীর্বাদ হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের সামনে চলার পথকে কণ্টকমুক্ত করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বসয়সীমা ৩৫ বছর করতে হবে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা অর্ধশতাধিক চাকরিপ্রত্যাশী বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন।

সরকারি চাকরি শুরু করার বয়স-সীমা বাড়ানোর দাবিতে গত ছয় বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ। সর্বশেষ গত মাসের শেষ সপ্তাহে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান করতে গেলে পুলিশি বাধায় তাঁদের কর্মসূচি পণ্ড হয়৷ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গত জুনে এক সভায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার সুপারিশ করে।

এরপর সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত অাগস্টে ইঙ্গিত দেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে বয়স সীমা বাড়ছে না।

তফসিলের আগে প্রজ্ঞাপন চান ৩৫-প্রত্যাশীরা:

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের আগেই সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশের দ্রুত প্রজ্ঞাপন চান ৩৫-প্রত্যাশীরা৷ চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করার পক্ষে ১৬ দফা যুক্তি তুলে ধরেন তারা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদ ও বাংলাদেশ জনতার মঞ্চ নামের দুটি সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ৩৫-প্রত্যাশীরা এ দাবি জানান৷ দাবি আদায়ে শনিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ যৌথভাবে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ করবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আমিরুল ইসলাম সেলিম৷ লিখিত বক্তব্যে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ বছর করার পক্ষে ১৬ দফা যুক্তি উত্থাপন করেন সেলিম৷ তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমরা চাকরি চাই না, শুধু একটা সুযোগ চাই৷ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় বৈষম্য থাকতে পারে না। সোনার বাংলার মানে দেশের কোথাও বৈষম্য থাকবে না৷ সংসদ, কেবিনেট মিটিং শেষ হয়ে গেল৷ আমরা প্রত্যাশায় ছিলাম, এই সংসদ থেকেই একটা ফলপ্রসূ সমাধান পাব৷ দেশ এগোচ্ছে৷ কিন্তু চার কোটি লোক আজ বেকার৷ এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে এই উন্নয়ন কতটা ত্বরান্বিত হবে—এটি একটি প্রশ্ন।

ভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলনের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ জনতা মঞ্চের আহ্বায়ক আল আমিন রাজু বলেন, ২০১২ সাল থেকে আমরা চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার আন্দোলন শুরু করি৷ ২০১৪ সালের শেষের দিকে আমি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম৷ তখনকার সভাপতির সঙ্গে আমার মতবিরোধ ছিল৷ এর জেরে ১৪ সালের পর সংগঠন বিভক্ত হয়ে যায়৷

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্র পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি পি কে ইউসুব ইলিয়াস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবারক ফাতেমা মুন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেহজাদ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App