×

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসিয়া খালাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:৩২ পিএম

পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসিয়া খালাস

ব্লাসফেমি আইনে আট বছর আগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। আসিয়া বিবির প্রতিবেশীরা তার বিরুদ্ধে নবী মোহাম্মদকে (সা.) অপমান করার অভিযোগ করে। এই অভিযোগে ২০১০ সাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার আসিয়া বিবির আপিল আবেদন গ্রহণ করে তাকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ইসলামাবাদের সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার আসিয়ার আপিলের রায় পড়ে শোনান। সেখানে বলা হয়, ‘নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টের রায় পরিবর্তন করে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হচ্ছে। তার দণ্ড প্রত্যাহার করা হলো।’ শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন আসিয়া। কিন্তু গত ৮ বছর ধরে তাকে কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে দিন কাটাতে হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে রায়ের সময় আদালতে আনা হয়নি তাকে। তবে এএফপি নিউজ এজেন্সির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন আসিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি যা শুনছি তা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, এখন কি বাইরে যাব? তারা কি আমাকে বের করে দেবে?’ জানা গেছে শিগগিরই পাকিস্তান ছাড়বেন তিনি। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আসিয়ার মামলাটি নিয়ে সেসময় পাকিস্তান বিভক্তি তৈরি হয়েছিল। দেশটিতে ব্লাসফেমি আইনের পক্ষে শক্ত জনসমর্থন রয়েছে। সমালোচকদের মতে, পাকিস্তানে এ ব্লাসফেমি আইনটি প্রায়ই ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আর দণ্ড দেওয়া হয় দুর্বল সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে। এদিকে বুধবার রায়কে কেন্দ্র করে শত শত কট্টরপন্থিরা ইসলামাবাদ, করাচী, রাওয়ালপিণ্ডির প্রধান প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও বড় ধরণের কোন সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি। রায় ঘোষণার আগে, কট্টরপন্থী খাদিম হুসেইন রিজভি রাস্তায় নেমে মানুষকে বিক্ষোভে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। আসিয়া বিবির মুক্তির বিরোধিতা করেন। ব্লাসফেমি আইনের ব্যবহার: ২০০৯ সালের জুন মাসের লাহোরের ঘটনা এটি। শেখুপুরা এলাকায় ফল পাড়তে গিয়ে অন্য নারীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় চার সন্তানের জননী আসিয়া বিবির। এক পর্যায়ে সেই নারীরা অভিযোগ করেন, আসিয়া বিবি মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করেছেন। ঘটনা হলো, ফল পারার পর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী আসিয়া কাপ ব্যবহার করে একটি বালতি থেকে পানি পান করেন। ওই নারীরা পানি অপবিত্র হয়ে গেছে এবং এটি আর ব্যবহার করা যাবে না বললে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এর পাল্টায় আসিয়া নবীকে নিয়ে তিনটি আপত্তিকর কথা বলেন বলে অভিযোগ ওই নারীদের। পরে আসিয়াকে তার বাড়িতে মারধর করা হয়। তদন্তের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আসিয়া জানান, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ‘উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়’ হলেও তিনি কখনোই ধর্ম অবমাননা করেননি। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার উপপরিচালক ওমর ওয়ারাইচ এ রায়কে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন, গত আট বছর ধরে নির্দোষ একজন মানুষ সাজা ভোগ করলেন।

খবর: বিবিসি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App