×

বিনোদন

নাটক-সিনেমা আমার জন্য নয় মঞ্চেই আমি রূপবতী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৫২ পিএম

নাটক-সিনেমা আমার জন্য নয় মঞ্চেই আমি রূপবতী
প্রায় ২০ বছর ধরে থিয়েটার চর্চায় ভ‚মিকা রেখে চলেছেন সোনিয়া হাসান। যুক্ত আছেন সুবচন নাট্য সংসদের সঙ্গে। এস এম সোলায়মান রচিত ও নির্দেশিত ‘খান্দানী কিসসা’ নাটকের নুসরাত চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে টুয়েলফথ নাইট, তীর্থঙ্কর, খনা, রূপবতী, ক্ষুধিত পাষাণ, মহাজনের নাও, প্রণয় যমুনা নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। নাসরীন জাহান রচিত ও খালেদ খান নির্দেশিত নাটক ‘রূপবতী’তে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। থিয়েটার চর্চায় অবদান রাখার জন্য গত ১৯ অক্টোবর অভিনেত্রী সোনিয়া হাসানকে সম্মাননা জানিয়েছে জলসিঁড়ি পাঠাগার। এদিকে প্রতিষ্ঠার তিন বছর উদযাপন করেছে ‘ম্যাড থেটার’। দলটির অন্যতম সদস্যও তিনি। থিয়েটার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন এই তরুণ নাট্যজন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহনাজ জাহান
বর্তমান ব্যস্ততার কথা জানতে চাই? সুবচন ও ম্যাড থেটারের নিয়মিত প্রযোজনাগুলোতে অভিনয় করছি। থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টুকটাক লেখালেখি করছি। শ্রæতিঘরের সঙ্গে আবৃত্তি করছি। ছায়ানটে এসরাজ শিখছি। বাসায় গানের চর্চা করি ও নিজে নিজে ভায়োলিন বাজানোর চেষ্টা করি। আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষা তত্তে¡ এমফিল করছি। আগামী জানুয়ারিতে আসামের শিলচরে আমার একক আবৃত্তি অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সব মিলিয়ে ব্যস্ত আছি। স¤প্রতি জলসিঁড়ি পাঠাগার থেকে সম্মাননা পেলেন। আপনার অনুভ‚তি যদি বলেন? থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত আছি প্রায় দুদশক। এই সময়ের মধ্যে সুবচনের বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করেছি। দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন থিয়েটার ওয়ার্কশপে অংশ নিয়েছি। খালেদ খানের নির্দেশনায় রূপবতী নাটকে নামভ‚মিকায় অভিনয়ের পর থেকে থিয়েটার চর্চা ও চরিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন শুরু। সেই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমি থিয়েটারে কাজ করে চলেছি। স¤প্রতি জলসিঁড়ি পাঠাগার থেকে পাওয়া সম্মাননা সেই কাজেরই একটা স্বীকৃতি। জলসিঁড়ির এই সম্মাননা থিয়েটারের প্রতি আমার নিবেদনকে আরো নিবিড় ও নিরবচ্ছিন্ন করবে। আমার পরিবার ও প্রিয়জনদের সহযোগিতায় আমি সবসময় পথ চলেছি। তাদের কারণেই আমি লড়তে পারছি, সম্মানিত হতে পারছি। থিয়েটার তো করছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। এই থিয়েটারে শুরুর গল্পটা জানতে চাই? সুবচন নাট্য সংসদের ওয়ার্কশপের মধ্য দিয়ে আমার নাটকের যাত্রা শুরু। আমি মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের ছাত্রী ছিলাম। কলেজের পাশেই নূরজাহান রোড কমিউনিটি সেন্টারে ছিল সুবচনের মহড়া কক্ষ। কলেজের বন্ধুদের মাধ্যমে সুবচনে গান গাইতে যাই। গান দিয়ে শুরু হয় নাটকের মানুষদের সঙ্গে পরিচিতি। সেই পরিচয়ের সূত্রেই অভিনয়ে আসতে হয়। আর তারপর থেকে অভিনয়ের সঙ্গে নিজের জীবনকে, নিজের পরিবারকে, নিজের ভবিষ্যৎকে জড়িয়ে ফেলেছি। সুবচন নাট্য সংসদের বাইরে তো ম্যাড থেটার নামের নতুন নাট্যদল গড়েছেন? ম্যাড থেটার আমাদের পারিবারিক একটা নাট্য সংগঠন। এটা একটা ওপেন থিয়েটারের প্লাটফর্ম। যে কেউ চাইলে এখানে অভিনয় করতে পারবে। এই সুযোগটা আমরা অন্যকে দিতে চেয়েছি সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও গ্রহণ করেছি। মূলত বেশি বেশি অভিনয় ও থিয়েটার সংশ্লিষ্ট ডিজাইনের প্রতি কাজ করার জন্য ম্যাড থেটার করা। এতে সুবচনের কাজের সঙ্গে কোনো সমস্যার তৈরি হয়নি। বরং সুবচনের নতুন নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে ম্যাড থেটারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পেরেছি। ম্যাড থেটারের তিন বছর পূর্তি হয়ে গেল। নতুন কোনো কাজ শুরু হয়েছে কি? ‘নদ্দিউ নতিম’ ম্যাড থেটারের প্রথম প্রযোজনা। এ নাটকটি দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে, বিশেষত লন্ডন ও গৌহাটিতে। এছাড়া ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে নাটকটি প্রদর্শিত হওয়ায় নাটকটির প্রতি দর্শকদের আগ্রহ বেড়েছে। অচিরেই আমরা নতুন কাজ নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হতে পারব বলে আশা রাখি। টেলিভিশন নাটক কিংবা সিনেমায় অভিনয় করেন না কেন? অনেকেই মঞ্চে আসে টিভি বা সিনেমায় অভিনয় করার আকাক্সক্ষা থেকে। কিন্তু এ ধরনের আকাক্সক্ষা আমি কখনোই পোষণ করিনি। দুদশক ধরে মঞ্চে কাজ করে যাচ্ছি, মঞ্চকে মনে হয় আমার দায়িত্ববোধের জায়গা, শিল্পরুচি সৃষ্টির জায়গা, এখানেই আমার বিচরণ ক্ষেত্র। যার মধ্যে প্রতিদিন বেড়ে উঠি, যার মধ্যে প্রতিদিন যাপন করি। টিভি সিনেমা যাপন করা যায় না, বড়জোর উদযাপন করা যায়। আমি মঞ্চের মানুষ, মঞ্চ ভালোবাসি। মঞ্চেই আমি রূপবতী, নাটক সিনেমা আমার জন্য নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App