×

মুক্তচিন্তা

পুলিশের চৌকিতে নারী হয়রানি, দায়ীদের ছাড় নয়

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:০৫ পিএম

পুলিশের মতো একটি বড় বাহিনীতে নানা ধরনের ও মানসিকতার লোক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেখানে কেউ কেউ দুর্নীতি ও অপকর্ম করবে বা করার চেষ্টা করবে, তাও স্বাভাবিক। এটা মোকাবেলার পথ হচ্ছে শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সদস্যদের বিরুদ্ধে যে কোনো অভিযোগকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া, যথাযথ তদন্ত করা এবং কেউ কোনো ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়লে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

অন্তহীন অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। কিছু পুলিশ সদস্যের নানা অপরাধের কারণে সরকারি এ সংস্থাটি বারবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজধানীর রামপুরায় পুলিশের এক তল্লাশি চৌকিতে এক নারীর হয়রানির ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এমন আচরণে উদ্বিগ্ন ও বিব্রত পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে। এমনিতেই খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ আর ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর সব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে পুলিশকে ঘিরে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সিএনজি অটোরিকশা করে গভীর রাতে এক তরুণী হাতিরঝিল এলাকার একটি চেকপোস্ট অতিক্রম করছিলেন। পুলিশ সদস্যরা তাকে বহনকারী অটোরিকশাটি থামান। পুলিশ অটোরিকশা অথবা তরুণীর ব্যাগ তল্লাশির বদলে তাকে অপ্রীতিকর প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে থাকে। তরুণীটি পুলিশ সদস্যদের অনর্থক হয়রানির প্রতিবাদ করলে অশালীনভাবে ভর্ৎসনা করা হয়। এ ঘটনার সময় তরুণীর চোখে-মুখে আলো ফেলে তাকে বিব্রত করার ছবি ধারণ করা হয়। পরদিন পুলিশের এক অতি উৎসাহী এএসআই ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করে। তারা সম্ভবত ভেবেছিলেন গভীর রাতে নারী কেন ঘরের বাইরে বিচরণ করবেন, এই প্রশ্ন তুলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার চিত্রটি দেখে জনসাধারণ পুলিশকে বাহবা দেবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ রকম অসংবেদনশীল আচরণের জন্য পুলিশের সমালোচনা করেন বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় পুলিশের একজন এএসআইকে ক্লোজ করা হয়েছে। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে চার কনস্টেবলকে। পুলিশের মতো একটি বড় বাহিনীতে নানা ধরনের ও মানসিকতার লোক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেখানে কেউ কেউ অপকর্ম করবে বা করার চেষ্টা করবে, তাও স্বাভাবিক। এটা মোকাবেলার পথ হচ্ছে শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সদস্যদের বিরুদ্ধে যে কোনো অভিযোগকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া, যথাযথ তদন্ত করা এবং কেউ কোনো ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়লে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুলিশের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এ বাহিনীর মধ্যে অপরাধ ও আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, অপরাধীর যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করাই হলো অপরাধ দমনের প্রথম পদক্ষেপ। আর অপরাধ দমনের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মধ্যে যারা নিজেরাই অপরাধে লিপ্ত হবে, তাদের শাস্তি অধিকতর কঠোর হওয়া দরকার। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন, সেই রাতে ওই নারীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা যে আচরণ করেছেন, তা অন্যায় হয়েছে। আমরা মনে করি, দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ ন্যক্কারজনক ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যরা কোনোভাবে পার পাবে না আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App