×

মুক্তচিন্তা

জোটের হাট বসেছে ভোটারের খবর নেই

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩৫ পিএম

সামনে একাদশ সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় জোট নিয়ে অনুষ্ঠিত হাট-বাজার বা মেলার বিষয়গুলো সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ন্যূনতম কোনো আবেগ বা আশাবাদ, আলোচনার সৃষ্টি করেছে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ ভোটাররা কী করবেন, করবেন না, কী সিদ্ধান্ত নেবেন- সেটি আরো পরে বোঝা যাবে। তবে মিডিয়ার বাইরে এসব জোটের হাট-বাজারের খবর দল নিরপেক্ষ ভোটারদের মধ্যে পড়ছে বলে মনে হয় না।

সংসদ নির্বাচনের মাস দুইয়ের একটু বেশি সময় বাকি রয়েছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যেই নির্বাচনকালীন সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। সে ধরনের সময়ে এবার বাংলাদেশে নির্বাচনী জোট গঠন ও ভাঙনের হাট বসেছে বললে মোটেও অত্যুক্তি করা হবে না। নিকট-অতীতে অর্থাৎ ২০০১ সালে ৪ দলীয় জোট নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন করেছিল, আওয়ামী লীগ দলগতভাবেই নির্বাচন করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে ২০০৬ সালে- যখন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আন্দোলনে এমনকি বিএনপি থেকেও বের হয়ে বিকল্পধারা, এলডিপি, ১৪ দলীয় জোট, এরশাদের জাতীয় পার্টিকে নিয়ে মহাজোট গঠিত হয়। সেই জোট-মহাজোট ২০০৮-এর নির্বাচনে অটুট থাকেনি, তবে মহাজোট ও ২০ দলীয় জোটে আদর্শগত অবস্থান থেকেই অনেকটা পরস্পরবিরোধী দুটো ধারার সৃষ্টি করে। ২০১৪-এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে ২০ দলের ভিন্ন কৌশল ও রণনীতি স্থির ছিল, তাই তারা নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহত করতে মাঠে নামে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ১৪ দলীয় আদর্শগত জোট নির্বাচনে দৃঢ় থাকলেও এরশাদের জাতীয় পার্টি দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। তারপরও মহাজোট নামে শোনা গেলেও জাতীয় পার্টির অস্থিরতার কারণে দলটি দেশের রাজনীতিতে ক্রমেই দুর্বলই হয়ে পড়েছে। ভোটের হিসাবে দলটি এখন রংপুর অঞ্চলেও ছিটমহলে পরিণত হয়েছে। তারপরও পার্টি চেয়ারম্যানের পকেটে ৪৯ দলের একটি জোট রয়েছে বলে এখন দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি ২০ দলে এবার সন্তুষ্ট না থাকতে পেরে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে। এতে দল কতটি আছে- সেটি পরিষ্কার নয়। এখানেও ভাঙা-গড়া চলছে। বিকল্প ধারার মূল নেতৃত্বকে বাইরে রেখে বিকল্প ধারা সৃজন করা হয়েছে। এতদিন ক্ষমতাসীন সরকার রাজনৈতিক দল ভাঙে বলে একটি কথা শোনা যেত। এবার ঘটেছে উল্টো অভিজ্ঞতা। বিরোধী এক দল অন্য দল ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। নামটি তাদের বেশি প্রয়োজন, নেতাকর্মী নয়। ঐক্যফ্রন্ট অচিরেই তাদের পরিসর আরো বড় করতে যাচ্ছে বলে ফ্রন্টের একজন নেতা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাও একটি জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে তাকে এখনো খুব বেশি সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না। ইসলামী দলগুলোও নিজেদের কয়েকটি জোট গঠন করেছে বলে শোনা যায়- দেখা যাচ্ছে না। বামদের একটি জোট তো আছেই। জোটের বাইরে এখন কোনো দল আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে কেউই সুস্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারবে বলে মনে হয় না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এবার নির্বাচন উপলক্ষে জোটের হাট বসেছে। সেই হাটে বেচাকেনা জমে উঠেছে। তবে পণ্য আর কিছু নয় দলের নাম। নেতা কে? এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর বোধহয় গুরুত্বপূর্ণ নয়। শুধু রাজনীতিবিদ নয়, সুশীল সমাজের কেউ কেউ এই হাটে এখন উঠেছে। দুজন তো এরই মধ্যে বেসামাল উক্তি করে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলোকে এসব কুশীলবের চেহারা প্রদর্শন করেছে, তাতেই তাদের বেসামাল উক্তির খই ফুটেছে, এখন সেই ভাজা খই ফুটছে জোটের হাটে। এমন দৃশ্যপট নির্বাচনের আগে কেউ কল্পনা করতে পারেনি। এবার সত্যি সত্যিই জোট হাট ও মেলা দুটোই ভরে গেছে। মিডিয়াগুলোতে এসব জোটের যেসব সংখ্যাতাত্ত্বিক বিবরণ দেয়া হয়, বাস্তবে সেগুলোর দর্শন দর্শকরা দেখছে বলে মনে হয় না। এটা এখন একটা জোটের রঙ্গমেলায় পরিণত হয়েছে। অচিরেই এটি ভাঙবে, সন্ধ্যার পর গভীর নীরবতাও নামবে। তবে জোটের হাটে বা মেলায় ভোটারের উপস্থিতি যেমন নেই, ভোটের বাস্তবতা কতটা আছে তা নিয়েই মস্তবড় প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, ভোটাররা এসব রঙ্গমেলার দৃশ্য আদৌ দেখছে কিনা, হাসছে কিনা- তাদের ভোটের আবেগ ও অনুভূতির প্রকাশ তাতে ঘটবে কিনা? আসলেই দুই পরস্পরবিরোধী মেরুর রাজনীতির বাইরে গিয়ে কত শতাংশ ভোট এসব জোটে ভোট দেবে সেটি দেখার বিষয়, ভাবার বিষয়।

১৯৫৪-তে গঠিত যুক্তফ্রন্টের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং রাজনীতি ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থায় পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি সচেতন প্রয়াস। পাকিস্তান সরকার যুক্তফ্রন্টের রায়কে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ভেঙে দিলেও ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব তা আর রাজনৈতিক জোটের ধারায় অগ্রসর হয়নি বরং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পতাকাতলে সংঘবদ্ধ হয়, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিস্ফোরণ ঘটায়। অন্য দলগুলো সেই ধারা থেকে ছিটকে পড়ে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে নিরঙ্কুশ বিজয়লাভের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে তার ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো বিপ্লবাত্মক ঘটনা সংঘটিত হয়। এত উদারবাদী মধ্যপন্থার দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের মূল আসনে ছিল, এর পাশে ভাসানী ন্যাপ, মোজাফফর ন্যাপ, সিপিবি এবং কংগ্রেস থাকলে এটি জোটগত কোনো ধারণার জন্ম দেয়নি। দেশ স্বাধীনের পর জোটগত ধারণা তৈরি হয় সামরিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার সংগ্রাম থেকে। যদিও জিয়ার বিরুদ্ধে কর্নেল (অব.) ওসমানীকে রাষ্ট্রপতি পদে দাঁড় করানো হয়েছিল, জিয়ার মৃত্যুর পর ড. কামাল হোসেনকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করা হয়েছিল, কিন্তু তখনো দ্বিধা-বিভক্ত দল ও রাজনীতি ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। এটি নতুন করে রূপ নেয় এরশাদবিরোধী ১৫ দল এবং ৭ দলীয় জোট। এ জোট দুটি আন্দোলন সংঘটিত করলেও রাস্তার লড়াকু শক্তি ছিল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, আওয়ামী লীগের তরুণ অংশ, বাম সংগঠনসমূহ। সেই ঐক্য জোট শেষ পর্যায়ে ৮ এবং ৫ দলীয় জোটে বিভক্ত হয়। ১৯৯১-এর নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে প্রার্থী মনোনয়ন, নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ ইত্যাদিতে চরম দুর্বলতা দেখা যায়। এমন বাস্তবতাবিবর্জিত বালখিল্য ঐক্য বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে আর কখনো হয়নি। অপরদিকে প্রকাশ্যে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে কোনো ঐক্য না করলেও গোপনে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে যে আদর্শিক ঐক্য গঠন করেছিল তার সুফল তারা হাতেনাতেই পেয়েছিল। জামায়াত ১৮টি আসনে নির্বাচিত হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের সেই অঘোষিত ঐক্য আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ঘটতে দেয়নি। জামায়াত ভেবেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনের সুফল তারা বিএনপি বা আওয়ামী লীগ ছাড়া এমনিতেই পেয়ে যাবে। কিন্তু ভোটযুদ্ধে জামায়াত এককভাবে মাত্র তিনটি আসন পেয়েছিল, বিএনপি সম্ভবত ১১৬টি আসন পায়।

এমন বাস্তবতায় বিএনপি-জামায়াত, জাতীয় পার্টি এবং ইসলামী ঐক্যজোট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে ৪ দলীয় ঐক্যজোট গঠন করে। তবে সবার ধারণা ছিল এটি একটি সরকারবিরোধী ঐক্যজোট। ৪ দলীয় ঐক্যজোট থেকে এক পর্যায়ে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি বের হয়ে গেলেও ভাঙা জাপাকে নিয়েই ৪ দলীয় ঐক্যজোট নির্বাচনী ঐক্যজোট গঠন করে। সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ ৪ দলীয় নির্বাচনী ঐক্যজোটকে ততটা আমলে নেয়নি। তাদের পাল্টা কোনো ঐক্যজোট গঠনের আগ্রহও ছিল না। কেননা ১৯৯১ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে ভুলতে চায়নি আওয়ামী লীগ, প্রতিপক্ষ শক্তিসমূহের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও প্রস্তুতির নতুন পরিকল্পনাও বুঝতে চায়নি। আওয়ামী লীগের হিসাব ছিল সহজ-সরল। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত যে উন্নয়ন ও পরিবর্তন রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আওয়ামী লীগ এনেছে- তাতে জনগণের রাজনৈতিক সমর্থন এমনিতেই লাভ করবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দল নিরপেক্ষ ভোটারদের বড় অংশের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, যেহেতু আওয়ামী লীগ এককভাবে এতটা ভালো করেছে, ৪ দলীয় জোট ক্ষমতায় এলে এর চাইতে হয়তো বেশি ভালো হবে। খুব সোজা-সরল বিশ্বাস। সে কারণে এই ভোটের উল্লেখযোগ্য অংশ জোটের প্রার্থীদের দিকে গড়িয়েছিল। যদিও আওয়ামী লীগ ২১ বছর ধরে চলে আসা আওয়ামীবিরোধী নানা অপপ্রচারের বাঁধ ভাঙতে পেরেছিল, ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষর, শান্তি চুক্তি ইত্যাদি করার মাধ্যমে সত্যিকার রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনের নজির স্থাপন করেছিল, ১৯৯৮ সালের বন্যার ভয়াবহতা প্রজ্ঞার সঙ্গে মোকাবেলা করেছিল, দেশে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে পেরেছিল, ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষের পুনরাবির্ভাব ঘটার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি, ইসলামও দেশ থেকে চলে যায়নি। বাংলাদেশেও ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত হয়নি। এসব অপপ্রচারের বেড়াজাল ভেদ করে অনেকেই বের হয়ে আসতে পেরেছিল। সে কারণে ২০০১ সালের নির্বাচনে জোটের একক দলগত হিসেবে আওয়ামী লীগ বেশি পেয়েছিল, কিন্তু জোটের ঢেউ আওয়ামী লীগের নৌকাকে ডুবিয়ে দেয়। নির্বাচনটি নিয়ে নানা অভিযোগ থাকার পরও আমরা জানি। তবে ২০০১-২০০৬ সালের জোট সরকারের শাসন দেশে কত বড় দুঃশাসনের জন্ম দিয়েছিল সেই অভিজ্ঞতা জনগণের মধ্যে ঘটে। জোট সরকার সাধারণ জনগণের ভাবনাকে অনেকটাই গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।

বিশেষত ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, জঙ্গিবাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা, অবশেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে তিক্ত অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছিল তাতে রাজনৈতিক জোটের প্রতি মানুষের মোহ ভেঙে চুরমার হয়ে পড়ে। এটির প্রকাশ ঘটে ২০০৮-এর ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে। যদিও আওয়ামী লীগ ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্য করেছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচন করলেও ভোটের খুব বেশি হেরফের হতো না। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি ভিন্ন অভিজ্ঞতা। দল নিরপেক্ষ ভোটাররা নির্বাচনী জোট গঠন করা না করা নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী বলে মনে হয় না। সামনে একাদশ সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় জোট নিয়ে অনুষ্ঠিত হাট-বাজার বা মেলার বিষয়গুলো সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ন্যূনতম কোনো আবেগ বা আশাবাদ, আলোচনার সৃষ্টি করেছে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ ভোটাররা কী করবেন, করবেন না, কী সিদ্ধান্ত নেবেন- সেটি আরো পরে বোঝা যাবে। তবে মিডিয়ার বাইরে এসব জোটের হাট-বাজারের খবর দল নিরপেক্ষ ভোটারদের মধ্যে পড়ছে বলে মনে হয় না। বেশির ভাগ মানুষই জানেন, যেসব জোটের কথা বলা হয়, সেগুলোতে কী কী দল আছে, কি সব নেতা আছেন- তাদের ক’জন চেনেন বা জানেন সেটিই বড় প্রশ্ন।

বিএনপি যেহেতু নেতৃত্বের সংকটে আছে, তাই দলটি একদিকে ২০ দলীয় জোট ধরে রেখেছে, অন্যদিকে ভাবমূর্তির সংকট কাটাতে ড. কামাল হোসেনসহ অন্য ক’জন নেতাকে নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট করেছে- যাদের কোনো ভোট নেই। ধানের শীষ ছাড়া তাদেরও জিতে আসার সম্ভাবনা নেই। ধানের শীষ সব জায়গায় প্রভাব ফেলতে পারবে- এমনটিও নয়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যদি মাথা ঠাণ্ডা রেখে আসন ও প্রার্থী ধরে ধরে ভেবেচিন্তে মনোনয়ন প্রদান করে, প্রতিটি আসনকেই জয়ের ভাবনা থেকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী বাছাই করতে পারে তাহলে জিতে আসতে খুব বেশি সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। সবাইকে এমপি হতে হবে- এমন নয়। কিন্তু যে আসনে যে দলের ভোট আছে, যে প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে দল নিরপেক্ষ ভোটাররা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে- সেটি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়- তাহলে জোটের হাট-বাজারের নেতাদের কদর হয়তো খুব একটা নাও মিলতে পারে। সাধারণ মানুষ অনেকটাই বিরক্ত। যেসব দল ও নেতাকে নিয়ে নানা ঐক্যজোট গঠিত হচ্ছে- তা দেখে ভোট বাড়ার সম্ভাবনা খুব একটা থাকবে না যদি আওয়ামী লীগ সৎ, যোগ্য ও ভাবমূর্তিসম্পন্ন প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করতে সচেষ্ট থাকে।

মনে রাখতে হবে ২০০১ সালের আবেগ এখন নেই, জোটের ইমেজও নেই। এখন আসনভিত্তিক যোগ্য প্রার্থীর কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং জোটের হাট-বাজার ও মেলা দেখে পুলকিত বা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। দল নিরপেক্ষ ভোটাররা এখন জোটের ঊর্ধ্বেই বেশি ভাবে। জোটকে নিয়ে অতিউৎসাহ দেখানোর লাভ-ক্ষতি বাস্তবতার আলোকে নির্ধারণ করা জরুরি। তাহলেই নির্বাচন থেকে কাক্সিক্ষত ফল বের করা সম্ভব হবে।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App