×

জাতীয়

রাউজানে আশ্রয়ন প্রকল্পে নেই ভূমিহীন পরিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৫২ পিএম

রাউজানে আশ্রয়ন প্রকল্পে নেই ভূমিহীন পরিবার
এম রমজান আলী, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে : রাউজানে আশ্রয়ন প্রকল্পে নেই ভূমিহীন পরিবারের সদস্য। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে বসবাস করছে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তির দেয়া লোকজন। জানা গেছে, রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে ৩০টি পরিবারের জন্য এয়াছিন নগর এলাকায় বিএনপি সরকারের আমলে নির্মাণ করা হয় সরকারি খাস জমিতে আবাসন প্রকল্প। এরশাদ সরকারের আমলে ডাবুয়া ইউনিয়নের পূর্ব ডাবুয়ায় ৪০টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয় গুচ্ছগ্রাম। বর্তমান সরকারের আমলে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের সমশের পাড়া এলাকায় সরকারি খাস জমিতে ১২০ ভূমিহীন পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয় আশ্রয়ন প্রকল্প। রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের মহামুনি দিঘির পাড় ৮০টি ভ‚মিহীন পরিবারের জন্য নির্মাণ করে আশ্রয়ন প্রকল্প। অভিযোগ রয়েছে সরকার কর্তৃক নির্মাণ করা আশ্রয়ন প্রকল্প ও আবাসন প্রকল্পের ঘরগুলো হাতেগোনা কয়েকজন ভ‚মিহীন পরিবারের সদস্য ছাড়া এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজন, সরকারি কর্মচারী ও তাদের স্বজনেরা বরাদ্দ পেয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস না করে ঘরগুলো ভাড়া দিয়েছে অনেকেই। রাউজানের সর্তা খাল, হালদা নদী, কর্ণফুলী নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি হারানো সহস্রাধিক পরিবার বসতবাড়ি হারিয়ে ভাড়া বাসা ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করলেও বসতভিটা হারানো পরিবারের সদস্যদের স্থান হয়নি আশ্রয়ন প্রকল্প ও আবাসন প্রকল্পে। রাউজানের কদলপুর ও পাহাড়তলীতে আশ্রয়ন প্রকল্পে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সরকার কর্তৃক নির্মাণ করা পাকা ঘরগুলোর অধিকাংশ দরজায় তালা লাগানো। দরজায় তালা লাগানো ঘরগুলো সম্পর্কে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, তারা আশ্রয়ন প্রকল্পে আসে না। রাউজান উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা আসার সংবাদ পেলে তারা দ্রুত এসে ঘরের দরজার তালা খুলে ঘরে বসবাস করে। রাউজান উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা চলে গেলে দরজায় তালা লাগিয়ে তাদের বাড়িতে চলে যায়। সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পের পাকা ঘরে বসবাসকারী অনেকেই রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম, হালিশহর, কুমিল্লা ও অনান্য জেলার বাসিন্দা। রাউজান উপজেলার বাইরের বাসিন্দারা কেউ ঘর বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা দিয়ে ঘর ক্রয় করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। কয়েকজন সরকারি কর্মচারীর নামে বরাদ্দ নিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে আশ্রয়ন প্রকল্পের পাকা ঘরে বসবাস করতে দেখা যায়। গত ১৭ অক্টোবর পাহাড়তলী ইউনিয়নের মহামুনি দীঘির পাড়ে নির্মাণ করা আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে যান রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রেজা, রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জোনায়েদ কবির সোহাগসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা। এ সময় আশ্রয়ন প্রকল্পের পাকা ঘরে বসবাসকারীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখার সময়ে একাধিক ব্যক্তি ঘর বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা দিয়ে পাকা ঘর বিক্রয় করার নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে লেখা কাগজ দেখায়। রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রেজা, রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জোনায়েদ কবির সোহাগ অবৈধভাবে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দখল করে ও পাকা ঘর ক্রয় করে ও ভাড়া নিয়ে যেসব পরিবার বসবাস করছে তাদের ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। যেসব পাকা ঘর বিক্রি করা হয়েছে ও ভাড়ায় দেয়া হয়েছে, ঘর বরাদ্দ নিয়ে ঘরে বসবাস করে না সেই সব ঘরের বরাদ্দ বাতিল করে এলাকার ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা আবেদন করার মাধ্যমে তাদের বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানান রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার ভ‚মি জোনায়েদ কবির সোহাগ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App