×

আন্তর্জাতিক

'মানবাধিকার রক্ষার জন্যই সীমান্ত খুলে দিয়েছিলো বাংলাদেশ

Icon

শামীম আহমেদ

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৩৯ এএম

'মানবাধিকার রক্ষার জন্যই সীমান্ত খুলে দিয়েছিলো বাংলাদেশ
মানবাধিকার রক্ষার প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কারণেই সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ -আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনের আওতাভুক্ত তৃতীয় কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক এক আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। তিনি, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্ত্যুচ্যুত ও চরমভাবে নিগৃহীত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে মানবিক উদ্যার্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই শক্ত অবস্থান এবং আশ্রয়দানের ঘটনাকে বিশ্বে মানবতা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। ‘বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার মুলনীতি ও আদর্শসমূহ সন্নিবেশিত রয়েছে’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'মানবাধিকার রক্ষার এই সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ এর শিকার মানুষদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে যেমনটি আমাদের জনগণের উপর সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়'। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরূদ্ধে আমরা সবসময়ই উচ্চকিত। ওআইসির সভাপতি হিসাবে বাংলাদেশ ফিলিস্তিন প্রশ্নের ন্যায়সঙ্গত সমাধানে নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অবদানের কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “জনগণের অধিকার রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অসমতা, ভয় ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে চলেছেন যেখানে সকল নাগরিক মর্যাদা ও সম্মানের সাথে বসবাস করবে, যেখানে থাকবে না কোনো সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে আমরা সদা তৎপর এবং এক্ষেত্রে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। তথাপি এ জাতীয় কোন ঘটনা ঘটলে তা দ্রুততার সাথে মোকাবিলা করতে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। আমাদের সিভিল সোসাইটি, এনজিও এবং গণমাধ্যমের স্বপ্রণোদিত ও গঠনমূলক ভূমিকা এক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে”। তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন অর্থাৎ নারী অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে সুপরিচিত একটি নাম। অভিবাসী কর্মীদের অধিকার রক্ষার্থে আমরা বৈশ্বিক অভিবাসন কম্প্যাক্টের আলোচনায় সক্রিয় অবদান রেখে চলেছি। শ্রম খাতে গৃহীত হয়েছে নানা কল্যাণমূখী পদক্ষেপ। জনগণের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতীয়ভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদ, সাইবার-অপরাধ, মাদকসহ এ জাতীয় সকল অপরাধ রোধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছি। জলবায়ুর পরিবর্তন রোধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশ সরকার গৃহীত এসকল প্রচেষ্টা ও পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ২০১৯-২০২১ মেয়াদে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচিত করে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত মাসুদ সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে ধন্যবাদ জানান। ন্যায় ও সমতাভিত্তিক এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিসংঘের মাধ্যমে বহুপক্ষবাদ ও বহুপাক্ষিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী, সংরক্ষণ ও অগ্রগামী করতে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বাংলাদেশের প্রতিশ্রæতির কথা পূনর্ব্যক্ত করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App